বাআ॥ গত ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত সরকারে থাকার সময় আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালায় বিএনপি-জামায়াত। ঢাকার রাস্তায় নারী নেত্রীদের ওপর নির্লজ্জ হামলা চালায় খালেদা জিয়ার পুরুষ পেটোয়া বাহিনী। এমনকি সারা দেশজুড়ে বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতাদের গুলি ও বোমা মেরে চালানো হয় নির্মম হত্যাযজ্ঞ। আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতা আহসানউল্লাহ মাস্টার, সাবেক মন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়াকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে তারা। হত্যার উদ্দেশ্যে বোমা হামলা চালানো হয় সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ওপর। আওয়ামী লীগ সমর্থিত সংস্কৃতি কর্মী তারানা হালিম, আওয়ামী লীগ এমপি ড. আবদুর রাজ্জাকের ওপরেও চালানো হয় পাশবিক হামলা।
২০০৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি, ২৫ মে, ১৫ জুন ও ২২ জুনের প্রথম আলো পত্রিকা থেকে এসব সংবাদ জানা গেছে। এই ধারাবাহিকতাতেই সেবছর ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ওপরেও গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিরপেক্ষ তদন্তে জানা যায়, এই নৃশংস হামলার নীলনকশা করেছিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে বিএনপি নেতা তারেক রহমান ও তার হাওয়াভবন সিন্ডিকেটের প্রভাবশালী বিএনপি নেতারা। তাদের সহায়ক শক্তি হিসেবে ছিল জামায়াতের হাই কমান্ড।
২০০৪ সালের ৭ মে টঙ্গীতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সমাবেশ চলাকালে গুলি করে হত্যা করা হয় আহসানউল্লাহ মাস্টারকে। আহত হন অনেকে। এর দুই সপ্তাহ পর গ্রেফতার হওয়া মাহবুব পুলিশকে জানায়, হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে এক বছর আগে। স্থানীয় বিএনপি নেতা হাসান সরকারের ছোট ভাই ও যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা নুরুল ইসলাম সরকার এই নীল নকশা করে। বিএনপি ও যুবদলের নেতাদের সম্বন্বয়ে তিনটি আলাদা গ্রুপ কাজ করেছে এই মিশন সফল করতে। বিএনপির একটি মহল অর্থ দিয়েছে। এরপর তারা আরেকটি গ্রুপ ঢাকা থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করেছে। আরেকটি অংশ পেশাদার খুনিদের ভাড়া করে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়। তার নিজের হাতেও অস্ত্র ছিল এবং গুলি চালানোর কথা স্বীকার করেছে আটক মাহবুব।
২২ জুনের পত্রিকা থেকে জানা যায়, সুনামগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা ও সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের সমাবেশে বোমা হামলা চালানো হয়। এই ঘটনায় নিহত হয়েছে একজন, আহত হয়েছে অর্ধশত। দিরাই বাজারের আখড়ায় আওয়ামী লীগের জনসভা যখন শেষের দিকে, তখন হঠাৎ ভয়ানক বোমা বিস্ফোরণ ঘটে।
১৫ জুনের পত্রিকা জানায়, আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাংস্কৃতিক নেত্রী তারানা হালিমের বাসায় হামলা চালিয়ে তাকে কুপিয়ে হত্যার অপচেষ্টা করা হয়। বিএনপির দুর্নীতিবাজ ও জামায়াতের রাজাকারদের বিরুদ্ধে কথা বলায় তাকে কাফনের কাপড় ও হুমকি পাঠিয়ে মানসিক নির্যাতন করে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা।
১১ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের সংসদ সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাকের ওপরেও ৬ ফেব্রুয়ারি হামলা চালায় বিএনপির নেতাকর্মীরা। পুলিশের সামনে দিয়ে ঘুরলেও গ্রেফতার করা হচ্ছে না তাদেের। এমনকি এই হামরার বিচার চাওয়ায় স্থানীয় আওয়ামী রীগ নেতাকর্মীদের ওপরেও নেমে এসেছে বিএনপি-জামায়াতের সীমাহীন নির্যাতন।
এছাড়াও দেশজুড়ে আওয়ামী নেতাকর্মীদের হত্যা, অঙ্গহানি করা, বাড়ির সম্পদ লুটপাট এবং দেশজুড়ে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসের প্রতিবাদে ঢাকার আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে টোকাই বাহিনী ও পুলিশ দিয়ে নির্মম নির্যাতন চালায় খালেদা জিয়ার সরকার। মতিয়া চৌধুরী, সাজেদা খাতুন, সাহারা খাতুনসহ শত শত নারী তরুণ নারী নেত্রীকে রাস্তায় ফেলে পেটানো হয় বিএনপি-জামায়াত সরকারের নির্দেশে। কাটাতার দিয়ে ঘুিরে রাখা হয় আওয়ামী লীগের অফিস। এমনকি শেখ হাসিনাকে পর্যন্ত হত্যার চেষ্টা করে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিশেষ ঘাতক বাহিনী। জেলায় জেরায় বিএনপি নেতারা গড়ে তোলে বিশেষ সন্ত্রাসী বাহিনী। তারা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের বাড়ি ও ব্যবসা লুটপাট করতো খুব পৈশাচিকভাবে।
অথচ আওয়ামী লীগের টানা তিন মেয়াদে কতোজন বিএনপি নেতাকর্মীর ওপর হামরা হয়েছে- প্রাণ কী হারাতে হয়েছে কাউকে? উত্তর হলো- না। তাহলে আপনারাই বলুন, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিতে যারা দেশটাকে নরক বানিয়ে ফেলেছিল, তারা কি কখনো দেশের উন্নয়নের জন্য কিছু করেছে নাকি শুধু আওয়ামী লীগ দমনই ছিল তাদের মূল টার্গেট!