প্রশান্তি বিনোদন ডেক্স॥ শেষ ২৪ বলে ৫২ রান প্রয়োজন ছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। কিন্তু আগের তিন ওভারে দারুণ বোলিং করা রুবেল হোসেন নিজের শেষ ওভারে দিলেন ২৩ রান। আর তাতেই ম্যাচ ঘুরে গেলো কুমিল্লার দিকে। ১৮ বলে বাকি ২৯ রান অনায়াসেই তুলে নেয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। লিটন দাসের পর জনসন চার্লসের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৪ বল আগে ৩ উইকেট হারিয়ে শিরোপার আনন্দে মাতে দলটি।
আগের চারবার ফাইনাল খেলে সবকটির শিরোপা জিতেছিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। সিলেটের অধিনায়কের মতো ইমরুল ও কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনও সবকটি ফাইনাল খেলে শিরোপা জিতেছেন। ইমরুল-সালাউদ্দিনের রেকর্ড অক্ষুণ্ণ থাকলেও এই রেকর্ডে ছেদ পড়লো মাশরাফির। শেষ ওভাবে রুবেল হোসেনের দেওয়া ২৩ রানের খেসারত দিলো সিলেট স্ট্রাইকার্স।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সিলেটের দেওয়া ১৭৬ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ২৭ রানে ওপেনার সুনিল নারিনকে (১০) হারায় কুমিল্লা। ইমরুল কায়েসও (২) বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তবে তৃতীয় উইকেট লিটন দাস ও জনসন চার্লস প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ৫৭ বলে ৭০ রানে জুটি গড়ার পর আউট হন লিটন। রুবেলের বলে বাউন্ডারি লাইনে শান্তর দুর্দান্ত ক্যাচে আউট হন এই ডানহাতি ব্যাটার। তার আগে ৩৯ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় নিজের ইনিংসটি সাজান।
লিটন আউটের পর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় সিলেট স্ট্রাইকার্স। কিন্তু রুবেল হোসেনের করা ১৭তম ওভারেই ম্যাচ বেরিয়ে যান তাদের মুঠো থেকে। আগের তিন ওভারে ১৬ রান দেওয়া রুবেল শেষ ওভারে দিলেন ২৩। ফলাফল ৪ বল আগেই ম্যাচ হার। ওই ওভার শেষে কুমিল্লার শিরোপার জন্য শেষ ১৮ বলে প্রয়োজন হয় ২৯ রানের। লুক উডের ১৯তম ওভারে চার্লস দুই ছক্কা ও এক চারের ঝড় তোলেন। তাতে শেষ ওভার হয় কেবল নিয়ম রক্ষার। ৪ বল আগেই ইমরুলরা চতুর্থবারের মতো শিরোপা জেতেন। চার্লস ৫২ বলে ৭ চার ও ৫ ছক্কায় ৭৯ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন। অন্যদিকে মঈন আলী অপরাজিত থাকেন ১৭ বলে ২৫ রানের ইনিংস খেলে। চতুর্থ উইকেট এই দুজন ৪০ বলে ৭২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন।
তিন উইকেটের মধ্যে রুবেল দুটি এবং জর্জ লিন্ডে নিয়েছেন একটি উইকেট। এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি সিলেট স্ট্রাইকার্সের। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই তানভীর ইসলামের বলে বোল্ড হন তৌহিদ হৃদয় (০)। আগের দুই ম্যাচের মতো এই ম্যাচে আগে ভাগে ব্যাটিংয়ে নামেন মাশরাফি। কিন্তু আজ সফল হননি। ৪ বলে ১ রান করে ফেরেন সিলেটের অধিনায়ক। ২৬ রানে দুই উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেটে নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম মিলে ৫৬ বলে ৭৯ রানের জুটি গড়েন। এই জুটির ওপর ভর করে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় প্রথমবার ফাইনাল খেলা সিলেট।
কিন্তু ৪৫ বলে ৬৪ রান করে শান্ত আউট হতেই ফের ছন্দপতন ঘটে সিলেটের। রায়ান বার্ল (১৩), থিসারা পেরেরা (০) ও জর্জ লিন্ডে (৯) রানে আউট হওয়ার পর দুইশ’ পেরুনোর সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়। তবে এক প্রান্তে আগলে রেখে দারুণ ব্যাটিং করা মুশফিকের দৃঢ়তায় সিলেট ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৫ রান করতে পারে। ৪৮ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায়৭৪ রানে অপরাজিত থাকেন মুশফিক। তার আগে শান্তও ৬৩ রানের ইনিংস খেলার পথে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ৫০০ রান করার কৃতিত্ব দেখান। ৪৫ বলে ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৬৪ রানের ইনিংস খেলেন শান্ত।
কুমিল্লার হয়ে মোস্তাফিজুর রহমান ৩১ রানে নেন দুটি উইকেট। মঈন আলী, সুনিল নারিন, তানভীর ইসলাম ও আন্দ্রে রাসেল একটি করে উইকেট নিয়েছেন।