ভূমি সেবায় জেলাভিত্তিক এজেন্ট নিয়োগ হবে: ভূমিমন্ত্রী

প্রশান্তি ডেক্স\ ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, জেলাভিত্তিক এজেন্ট নিয়োগ করে নাগরিকদেরকে ভূমিসেবা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এজন্য প্রাইভেট এজেন্টশিপ নীতিমালাও প্রণয়ন করা হচ্ছে।  গত বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ’ এবং ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’-এর উদ্যোগে আয়োজিত রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত ব্র্যাক সেন্টার ইন-এ ‘ভূমি ব্যবস্থাপনায় সাম্প্রতিক উদ্যোগ ও নাগরিক অধিকার’ শীর্ষক এক সংলাপে ভূমিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ভূমি সচিব মোস্তাফিজুর রহমান মুখ্য বক্তা হিসেবে এই সময় উপস্থিত ছিলেন। ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

এ সময় সাইফুজ্জামান চৌধুরী আরও বলেন, আমাদের দেশের বাস্তবতায় ডিজিটাল সাক্ষরতা এখনও শতভাগ নয়। এজন্য সবার পক্ষে অনলাইনে ডিজিটাল সার্ভিস গ্রহণ সম্ভব নয়। এজন্য সবদিক বিবেচনা করে, সবার কথা মাথায় রেখে আমরা ভূমি সেবা এজেন্ট নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

মন্ত্রী আরও জানান, ভূমি ভবনে একটি নাগরিক সেবাকেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে জেলা পর্যায়ে এ সেবা সম্প্রসারণ করা হবে। কলসেন্টার ছাড়াও এসব সেবা কেন্দ্রে নাগরিকরা সরাসরি গিয়ে ভূমিসেবা গ্রহণ করতে পারবেন। এছাড়া প্রাইভেট এজেন্ট কার্যক্রম মনিটরের জন্য সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে এবং উপজেলা ও জেলাভিত্তিক নাগরিক কমিটি করার কথাও বিবেচনায় রয়েছে।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আমরা ভূমিসেবা সিস্টেম এমনভাবে উন্নয়ন করছি যেন দুর্নীতির সুযোগ না থাকে। এ প্রেক্ষিতে তিনি উন্নত দেশের উদাহরণ দিয়ে বলেন, সিস্টেমের করণে ওখানে অনেকের দুর্নীতি করার সুযোগ থাকে না। মন্ত্রী বলেন, মাঠ পর্যায়ের ভূমি অফিসের কাজ নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। কোনও উপজেলায়, কোনও সার্কেলে কতদিনে ফাইল নিষ্পত্তি হচ্ছে আমরা তা দেখছি এবং ফিডব্যাক নিচ্ছি। পর্যায়ক্রমে মনিটরিং কার্যক্রম অধিক নিবিড় করা হবে।

মন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি ভূমি মন্ত্রণালয় অন্যতম ‘পারফর্মিং মিনিস্ট্রি’। ‘স্মার্ট মিনিস্ট্রির’ কথা মাথায় রেখে আমরা কাজ করছি। মানুষ ভূমি সেবা ডিজিটালাইজেশনের সুফল পাওয়া শুরু করেছে।

ভূমি সচিব মোস্তাফিজুর রহমান অনুষ্ঠানে ভূমি ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নিয়ে একটি সচিত্র উপস্থাপনা দেখান। তিনি এসময় জানান, সমগ্র বাংলাদেশের ১ লাখ ৩৮ হাজার ম্যাপ ডিজিটাইজ করাসহ স্যাটেলাইট ইমেজ ক্রয় করা হচ্ছে। এই ম্যাপের উপরে স্যাটেলাইট ইমেজ বসিয়ে প্লটভিত্তিক জমির শ্রেণির একটি তথ্যভান্ডার তৈরি হচ্ছে। প্রায় ১০ হাজার ডিজিটাল মৌজা ম্যাপ ই-নামজারি সিস্টেমের সাথে সংযুক্ত হচ্ছে। নামজারির সাথে সাথে এই ডিজিটাল ম্যাপ ও খতিয়ান স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংশোধিত হতে থাকবে। ভূমি সেবা অ্যাপ থেকে নাগরিকরা তাদের জমির দৈর্ঘ্য-প্রস্থ, অবস্থান ও পরিমাপ তাৎক্ষণিকভাবে পেয়ে যাবেন।

সচিব আরও জানান, অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর, ই-নামজারি, খতিয়ান ও ম্যাপসহ অন্যান্য খাত থেকে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে মাত্র ৮ মাসে ডিজিটাল ভূমিসেবা সিস্টেম থেকে সরকারি কোষাগারে প্রেরণ করা হয়েছে ৫৫০ কোটি টাকার বেশি অর্থ। অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর চালু হবার পর গত ২০২১-এর সেপ্টেম্বর থেকে এই পর্যন্ত শুধু অনলাইনে রাজস্ব সংগ্রহের হার প্রায় ৪৭০ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ এ আদায়ের অগ্রগতি ৩২৬%। গত ২০ ফেব্রুয়ারি, এক দিনেই আদায় হয়েছে সাড়ে ৩ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব। ২০২১ সাল থেকে এই পর্যন্ত ই-নামজারি ফি আদায় হয়েছে ২০০ কোটি টাকার বেশি। প্রতিদিন গড়ে আদায় হচ্ছে ১ কোটি টাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published.