বাআ॥ ‘জনগণই তাঁর শক্তি’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি কখনোই কোনো বিদেশি চাপের কাছে মাথা নত করবেন না। আগামী সাধারণ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আপনাদের একটি জিনিস মাথায় রাখতে হবে যে শেখ হাসিনাকে চাপ দিতে পারে এমন কোন চাপ নেই। কারণ আমার শক্তি একমাত্র আমার জনগণ।”
বিএনপি বিদেশিদের কাছে দেন দরবার করছে বা একটি বিদেশি প্রভাবশালী পত্রিকায় ড. ইউনুসকে নিয়ে বিজ্ঞাপন আকারে প্রকাশিত ৪০ বিশিষ্ট ব্যক্তির বিবৃতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি কোন চাপ অনুভব করছেন কিনা বা আন্তর্জাতিক কোন চাপ তাঁর অথবা সরকারের ওপর রয়েছে কিনা’- এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার বিকেলে গণভবনে তাঁর সাম্প্রতিক কাতার সফর নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এমন কোন চাপ নাই যেটা শেখ হাসিনাকে দিতে পারে। এটা মাথায় রাখতে হবে। কারণ আমার শক্তি একমাত্র আমার জনগণ, আর উপরে আল্লাহ আছেন। আর আমার বাবার আশির্বাদের হাত আমার মাথায় আছে। কাজেই কে কি চাপ দিলো, না দিলো- এতে আমাদের কিছু আসে যায় না। জনগণের স্বার্থে যেটা করার আমরা সেটাই করবো। জনগণের কল্যাণে যে কাজ করার সেটাই করবো।
তিনি বলেন, এরকম বহু চাপ তো ছিলই। পদ্মা সেতুর আগেতো কম চাপ দেয়া হয়নি। কোন একটা দেশের রাষ্ট্রদূত এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রী থেকে শুরু করে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে টেলিফোনের পর টেলিফোন এসেছে। হেনো তেনো কারণেও টেলিফোন। একজন ভদ্রলোক একটি ব্যাংকের এমডি, তাকে এমডি পদে রাখতে হবে। আর এই এমডি পদে কি মধু, তাতো আমি জানি না। তিনি বলেন, আইনে নেই, তবু ৭০ বছর বয়স হয়ে গেলেও, এমডি পদে তাকে থাকতে হবে। এতে একটাই হয় যে, এমডি পদে থাকলে বোধ হয় মানি লন্ডারিং করা যায়, এটাই সুবিধা। পয়সা বানানো যায়, পয়সা মারা যায়, গরিবের রক্ত চুষে খাওয়া যায়। তো সেই চাপও কিন্তু শেখ হাসিনা সহ্য করে চলে এসেছে এবং তারপরেও নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু করে দেখালাম সেই চাপে আমাদের কিছু আসে যায় না।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশে কতগুলো আইন আছে। সে আইন অনুযায়ী সব চলবে এবং সেটা চলে। আমাদের বিচার বিভাগ স্বাধীন। শ্রমিকদের অধিকার আমরা রক্ষা করি, ট্যাক্স বিভাগ আছে আলাদা। তারা সেটি আদায় করে। কেউ যদি আইন ভঙ্গ করে, শ্রমিকের অধিকার কেড়ে নেয়, শ্রম আদালত আছে। এই ক্ষেত্রে আমার তো কিছু করার নেই সরকার প্রধান হিসেবে। পদ্মা সেতু কিন্তু করে ফেলেছি, এটুকুই সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিলাম।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা বিবৃতি না, এটা একটা বিজ্ঞাপন। যে ৪০ জনের নাম ব্যবহার করা হয়েছে একজন বিশেষ ব্যক্তির পক্ষে, এর উত্তর কী দেবো, জানি না। আমার একটা প্রশ্ন আছে, যিনি এত নামিদামি নোবেল প্রাইজপ্রাপ্ত, তারজন্য এই ৪০ জনের নাম খয়রাত করে এনে বিজ্ঞাপন দিতে হবে কেন ? তাও আবার বিদেশি পত্রিকায়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টিরও চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু আমি মনে করি, আমি বিশ্বাস করি, এটা কেউ কিছু করতে পারবে না। হয়তো সাময়িক কিছু একটা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু সেটা মোকাবেলা করবে আমাদের দেশের জনগণই।
প্রায় দেড় ঘন্টাব্যাপী এই সংবাদ সম্মেলনে কাতার সফরের বিষয়বস্তু ছাড়াও আগামী নির্বাচন,সংলাপ,কূটনৈতিক সম্প্রদায়ের দৌঁড়ঝাপ, নানামুখী অপতৎরতা, গুজব রটানো, দেশকে অস্থিতিশীল করার প্রচেষ্টা এবং দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে স্থিতিশীল গণতন্ত্রের প্রয়োজনীয়তাসহ সাংবাদিকদের নানামুখি প্রশ্নের জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী।
দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন এবং বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন।
এর আগে ৪ থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত স্বল্পোন্নত দেশসমূহের (এলডিসি ৫ : সম্ভাবনা থেকে সমৃদ্ধি) ৫ম জাতিসংঘ সম্মেলনে যোগদানের পর কাতারের রাজধানী দোহা থেকে দেশে ফিরে আসেন প্রধানমন্ত্রী। বিএনপি-জামাত জোটের শাসনামলে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদি একটি গোষ্ঠীর অস্ত্র পাচারের রুট হিসেবে বাংলাদেশকে ব্যবহার এবং ১০ ট্রাক অস্ত্র পাচারের বিষয়ে তারেক জিয়ার জড়িত থাকা সংক্রান্ত প্রশ্নগুলোকে ‘রাজনৈতিক’ বলে বিএনপি নেতাদের এড়িয়ে যাওয়া সম্পর্কিত সাংবাদিকদের প্রশ্নে বিএনপি’র কঠোর সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “যেটা হাতে নাতে ধরা পড়ল যে ১০ ট্রাক ভর্তি অস্ত্র পাচার হচ্ছে এবং যে পুলিশ কর্মকর্তা ধরলো তাকে অত্যাচার করলো, চাকরিচ্যুত করলো- সেটা রাজনৈতিক হয় কিভাবে ? আর এই ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলাতেই তারেক জিয়া সাজাপ্রাপ্ত এবং খালেদা জিয়ার মন্ত্রীরাও। তারপরও তারা যদি এটাকে রাজনৈতিক বলে, তাহলে আমার মনে হয় জনগণই বিচার করবে। এটা জনগণের সঙ্গে ভাওতাবাজি বা মুনাফেকি ছাড়া আর কিছু না। অস্ত্র চোরাকারবারি ব্যবসাটাই হচ্ছে তাদের ব্যবসা। আর সেটাকে তারা রাজনীতি হিসেবে দেখাতে চায়।
শেখ হাসিনা বলেন, আসলে ওদের (বিএনপির) জন্মই হয়েছে অস্ত্র হাতে নিয়ে, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী একজন সেনা কর্মকর্তার পকেট থেকে। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে, সে-ই একাধারে সেনাবাহিনীর প্রধান, আবার সেই অবস্থায় থেকে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়েছে অস্ত্র হাতে নিয়ে। নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়ে ক্ষমতায় বসেছে। আর সেই ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে তৈরি করা দল হলো বিএনপি। কাজেই এদের কাছ থেকে জনগণ আর বেশি কী আশা করবে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ও তার ছেলেদের লুটপাট-দুর্নীতির কথা আমাদের না, এটা আমেরিকা-সিঙ্গাপুরে এফবিআই তদন্ত করে বের করেছে। এমনকি তাদের পাচার করা ৪০ কোটি টাকা কিন্তু বাংলাদেশ উদ্ধার করে ফেরত এনেছে। এ কথাটা বোধহয় সবার মনে রাখা উচিত। সেটাকেও তারা রাজনৈতিক বলবে ? সরাসরি অস্ত্র চোরাকারবারি ও গ্রেনেড হামলা ওটাও তো রাজনৈতিক। রাজনৈতিকভাবে আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল, এই তো। ভালো, সবই রাজনৈতিক বলে ধামাচাপা দেওয়া।
বিএনপির সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী অপরর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সংলাপ কার সঙ্গে করবো ? ২০১৮ সালের নির্বাচনে আমি সংলাপ করেছি, তার রেজাল্টটা কী ? নির্বাচনটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা ছাড়া আরও কিছুই করেনি। বিএনপি ৩শ’ আসনে ৭শ’ নমিনেশন দিয়ে টাকা খেয়ে নিজেরাই নিজেদের নির্বাচন থেকে সরিয়ে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আর এদের (বিএনপির) সঙ্গে কিসের কথা বলবো, কিসের বৈঠক করবো। অনেক কিছুই মুখ বুঝে সহ্য করেছি শুধু দেশের মানুষের কল্যাণের চিন্তা করে। যারা একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা করেছে, বোমা পুেেঁত রেখে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে, আমার মা-বাবার খুনী- তাদের সাথে সংলাপে বসেছিলাম শুধু দেশের স্বার্থের কথা চিন্তা করে। তিনি এ সময় খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে মারা যাওয়ার পর একজন ছেলেহারা মা’কে স্বান্তনা দিতে গেলে চরম অসৌজন্যতা করে মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দেয়ার পরও জিয়া পরিবারের ঘনিষ্টজনদের অনুরোধে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে তাকে চিকিৎসার সুযোগ শুধু মানবিক কারণে দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী সারাদেশের মানুষ বর্তমান সরকারের প্রতি আস্থাশীল উল্লেখ করে বলেন, ‘আমার দল করে না, অন্য দল করে, তাদের মুখ থেকেই কিন্তু আমি এ তথ্যটা নিয়েছি। সাধারণ মানুষ, গ্রামের মানুষের এখন একটাই কথা, এই সরকারেরই থাকা উচিত। এটা সাধারণ মানুষের আকাঙ্খা। এরপর কী হবে দেখা যাক। ইলেকশন এটা জনগণের ইচ্ছা। জনগণ ভোট দিলে আছি, না দিলে নাই। এ নিয়ে আফসোস নেই। তবে গত ১৪ বছরে দেশে ব্যাপক উন্নয়নের ফলে আমাদের ওপর দেশের জনগণের আস্থা-বিশ্বাস বহুগুণ বেড়ে গেছে’।
অবাধ তথ্য প্রবাহের সুযোগ নিয়ে সরকারের ঢালাও সমালোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ। দেশ বিদেশ থেকে বসে বসেও আমাদের সমালোচনা করে। আমাদের করে দেওয়া জিনিস দিয়ে আমাদের সমালোচনা করে। আবার শুনতে হয়- কিছুই করি নাই। তিনি বলেন, যে যেটাই বলুক, পরিকল্পিত উন্নয়ন করতে পেরেছি কিনা, সেটা আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জনগণ আমাদের মূলশক্তি, তারা পাশে ছিল বলেই এটি করতে পেরেছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বলেন, সামনে নির্বাচন। অন্তত এইটুকু দাবি করতে পারি, ’৭৫ সালের পর থেকে যে সমস্ত নির্বাচন হয়েছে, আর আমরা ক্ষমতায় আসার পর থেকে যে নির্বাচন হয়েছে, অন্তত সেই ধরনের চুরি, ভোটকেন্দ্র দখল করা, কারচুপি করার সুযোগ তো এখন নেই। এখন ছবিসহ ভোটার তালিকা, আইডি কার্ড হয়ে গেছে। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স আছে, সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরে ফেলার সুযোগ নেই।
বিএনপির আমলে করা এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটারও ভোটার তালিকায় এখন আর নেই। নির্বাচন কমিশনের স্বতন্ত্রতা বজায় রেখে আমরা একে সম্পূর্ণ অবাধ নিরপেক্ষ করে গড়ে দিয়েছি, যাতে জনগণ নিজেদের ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে পারে। তিনি বলেন, জনগণ যাকে খুশি ভোট দেবে- এটা আমাদেরই ে¯্লাগান। ‘আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো’- আমরা যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করেছি, তার লক্ষ্য ছিল জনগণের ভাতের অধিকার, নিরাপত্তা, জীবনমান উন্নত করা। সেই ভোট-ভাতের আন্দোলন কিন্তু আমাদেরই করা।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন ‘আমাদের আন্দোলন, রাষ্ট্র পরিচালনায় যে যে কথা আমরা দিয়েছি, আমরা তা রেখেছি। মাঝখানে করোনাভাইরাস আর ইউক্রেন যুদ্ধ যদি না হতো, আমাদের প্রবৃদ্ধি ৮ ভাগের ওপরে ছিল, আমরা আরও এগিয়ে যেতে পারতাম। আমাদের দারিদ্রের হাড় ২০ ভাগে নামিয়ে এনেছিলাম। আরও দুই থেকে তিন শতাংশ দারিদ্র কমিয়ে আনতে পারতাম। তবে এখানে থেমে থাকলে হবে না, হতাশাগ্রস্ত হলে হবে না। আমি কখনও হতাশায় ভুগি না, একটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে চলি, আমার তো হারানোর কিছু নেই’।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, যে দল বেশি লাফায় সে দলের দুই নেতাই হচ্ছে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা না পারবে ইলেকশন করতে, না পারবে ক্ষমতায় আসতে। তিনি বলেন, বিএনপি নিজের গঠনতন্ত্র নিজেরা ভঙ্গ করছে। কারণ, তাদের গঠনতন্ত্রে আছে সাজাপ্রাপ্ত আসামি দলের নেতা হতে পারে না। এখন সেই সাজাপ্রাপ্ত আসামিকেই দলের নেতা বানিয়ে রেখে দিয়েছে। এখন এই দলের কাছে কী আশা করবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দলীয় সরকারের অধীনেও যে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে পারে, সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোই এর প্রমাণ। ২০০৮ এর নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট ৩০০ সিটের মধ্যে পেলো মাত্র ৩০টি সিট। আর ২৭০টি পেলাম আমরা মহাজোট। ২০০৮ এর নির্বাচন যেটাকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু বলা হয়, সেই নির্বাচনেই যখন তাদের (বিএনপি) এই দুরবস্থা, এখন তো আমরা কাজ করে মানুষের আস্থাটা অন্তত অর্জন করতে পেরেছি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য অনেকগুলো আন্তর্জাতিক ও দেশীয় এজেন্সি উন্মুখ হয়ে আছে। ৪০ জনের নামে (ওয়াশিংটন পোস্টের বিজ্ঞাপন) যেটা এসেছে, ওটার পেছনেও কিছু অ্যামবিশন আছে। এতে কোনও সন্দেহ নেই। যাদের ইচ্ছা, তারা জনগণের কাছে যাবে। নির্বাচন যাতে অবাধ-সুষ্ঠু হয়, তার জন্য নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় সংশোধনী বা সংস্কার আনা হয়েছে।
নির্বাচন ইভিএমে করতে চেয়েছিলাম উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এতে করে সবাই ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভোট দিতে পারতো, ফলাফলও সঙ্গে সঙ্গে পাওয়া যেতো। কিন্তু এটি নিয়ে এতো আলোচনা-সমালোচনা, আমরা বিষয়টি এখন নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিয়েছি।
নতুন রাষ্ট্রপতি (মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন) প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রপতি একজন পোড় খাওয়া মানুষ এবং একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। পঁচাত্তর পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান তাঁকে গ্রেফতার করে ডান্ডাবেড়ি দিয়ে রেখেছিলেন। কারণ তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী। তিনি জুডিশিয়াল সার্ভিসেও চাকরি করেছেন। বিএনপির আমলে বাধ্য হয়ে তাঁকে চাকরি ছাড়তেও হয়েছে। কাজেই আমি মনে করি, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাঁর মাঝে ওই দায়িত্ববোধ, রাজনৈতিক সচেতনতা, দেশপ্রেম ও ব্যক্তিত্ব আছে। নতুন রাষ্ট্রপতিরও সবসময় এই প্রচেষ্টাই থাকবে নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়। শেখ হাসিনা বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব সরকারের একার নয়, সবার। সবাইকে সে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে সাংবাদিকদেরও দায়িত্ব আছে। সত্যের জয় হয়। এটা কেউ ঢাকতে পারে না, এটা আমি বিশ্বাস করি।