প্রশান্তি ডেক্স ॥ রাজশাহী কর অঞ্চলের উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়াকে ঘুষের টাকাসহ হাতেনাতে ধরেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযোগের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার তার অফিসে অভিযান চালায় দুদকের টিম। অভিযানের সময় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পুরো অফিস। এ সময় ঘুষের অর্থসহ হাতেনাতে ধরা পড়েন এই কর্মকর্তা। তখন দুদক কর্মকর্তাদের ওপর চড়াও হন তারা। কর অফিসের কর্মচারীরা দরজা ভাংচুর করেন। অবরুদ্ধ করা হয় দুদক কর্মকর্তাদের। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। এরপর দুপুর প্রায় আড়াইটার দিকে পুলিশের সহায়তায় ওই কর্মকর্তাকে আটক করে দুদক।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, রাজশাহী কর অঞ্চলের উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়ার দফতরের দরজা ভাঙ্গা এবং ভেতরের কাগজপত্র নিচে ছড়ানো ছিটানো। এ বিষয়ে দুদকের রাজশাহীর বিভাগীয় পরিচালক কামরুল আহসান বলেন, অভিযোগকারী একজন নারী গাইনি চিকিৎসক। তার নাম ডা. ফাতেমা সিদ্দিকী। তাকে আয়করের ফাইল রিওপেন ও মামলার ভয় দেখিয়ে ৬০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন এই কর্মকর্তা। এ বিষয়ে তিনি দুদকে অভিযোগ করেন। আজকে সেই ৬০ লাখ টাকার প্রথম কিস্তির ১০ লাখ টাকা দেওয়ার সময় ওই কর্মকর্তাকে হাতেনাতে আটক করা হয়।
তিনি আরও বলেন, তখন কর অফিসের কর্মচারীরা আমাদের ওপর চড়াও হয়। আমরা নিজেদের আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছি। এরপর আমরা পুলিশের সহায়তা নিই। এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদক আইনে মামলা হবে। এ বিষয়ে কর অঞ্চল রাজশাহীর কর কমিশনার মো. শাহ আলী বলেন, আজকে আমাদের অন্য একটি শাখায় ট্রেনিং প্রোগ্রাম চলছিল। দুদক কর্মকর্তারা এখানে আসার পর আমাকে ফোন করে বলেছিলেন, এখানে একটা অভিযোগ পাওয়া গেছে। সে ভিত্তিতে তারা কাজ করবেন। তিনি বলেন, দুদক একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। তারা স্বাধীনভাবে কাজ করে। এর বাইরে তারা আমাদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন। আমার অফিস তাদের সহযোগিতা দিয়েছে। আর হাতাহাতি বা হামলার বিষয়টি আমি বলতে পারবো না। কারণ, সে সময় আমি সেখানে ছিলাম না। আর অফিসিয়ালি এই বিষয়ে কেউ কিছুই জানায়নি।
রাজশাহীর কর কমিশনার আরও বলেন, কর অফিসের ওই পদের কর্মকর্তা যে কাজগুলো করেন, তার লিগ্যাল কিছু প্রসিডিউর আছে। সেখানে প্রত্যেকটা কাজ কমিশনার অফিসে জানাতে হয় না। এখন ওই ফাইল সম্পর্কে কী কার্যক্রম হচ্ছে, সেটা জানা ছিল না। এখন উদ্ভূত ঘটনা সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা যেভাবে নির্দেশনা দেবেন, সেভাবেই কাজ করা হবে।
গ্রেফতারের পর উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়াকে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের দেখে জোরে জোরে বলেন, আমি অফিসের বাইরে ছিলাম, তখন ডা. ফাতেমা সিদ্দিকী অফিসে ঢুকে টাকাগুলো ড্রয়ারে রেখেছে। এই সময় দুদকের লোকজন আমাকে ধস্তাধস্তি করে রুমে ঢুকিয়ে দরজা আটকে মারধর করে। পরে দরজা খোলা হয়েছে।