ভিসা খড়ায় ভিসা প্রত্যাশিরা

প্রশান্তি ডেক্স ॥ বিদেশী দক্ষ শ্রমিক, উন্নয়ন কর্মী, ইমাম/পালক, ভিজিটর, বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ও শিক্ষার্থীরা কেহই আর বাদ যায় ঐ ভিসা খড়ায়। বিভিন্ন ছুটির প্রাক্কালে অথবা মিটিং এমনকি কোন কর্মশালার ঘেরাকলে ভিসা প্রত্যাশীরা দিশেহারা। আমাদের ভিসা অফিসের দৈন্যতা কোথায় তা খতিয়ে দেখা জরুরী। কেউ কেউ আবার জরুরী প্রয়োজনে দেশত্যাগ করতে গিয়ে বিমানবন্দর থেকে ফেরত এসে ভিসা প্রাপ্তিতে ভোগান্তির স্বীকার হন। ইমাজেন্সি ভিসা প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও এয়ার টিকেট বহুবার বাতিলের কবলে পড়তে হয় ভিসা জটিলতার কারণে। এইক্ষেত্রে উত্তরণের উপায় কি? পদ্দতি, জনবল, দক্ষতা, সততা, আন্তরিকতা নাকি অন্যকিছু তাও খতিয়ে দেখতে হবে।

তবে অবস্থাদৃষ্টে গত একযুগেরও বেশী সময়ের অভিজ্ঞতার আলোকে বলতে পারি যে, সততার ও আন্তরিকতার অভাবই এই ক্ষেত্রে বড় ভুমিকা রাখে তবে পদ্দতি বা সিষ্টেমও এর জন্য অনেকাংশে দায়ী। এই আলোচনা বিশদাকারে করার আগে ছোট কয়েকটি পরামর্শ উপস্থাপন করতে চাই। যারা এক্সিট ভিসা নিয়ে বিদেশ যেতে চাই তাদেরকে ভিসা অফিস থেকে ভিসা দেয়ার কোন প্রয়োজন নেই। বরং নিতীমালা অনুযায়ী জরিমানার এবং ভিসা ফির টাকা বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন সংগ্রহ করে এক্সিট অথবা ডিপারর্চার সিল দিলেই অনেকটা পরিশ্রম, সময় এবং ভোগান্তি লাগবে আর দেশের সুনাম ও সম্মান অক্ষুন্নকরণে কার্যকরি ভুমিকা রাখবে।

ই ভিসা, এন ভিসা মোট কথা কর্মী বা শ্রমিকদের ভিসার ক্ষেত্রে জটিলতা অবসানের জন্য এবং পরিশ্রম ও সময় এবং ভোগান্তি কমানোর জন্য আবেদনের পর কর্মীর ওয়ার্ক পারমিট এবং নিরাপত্তা ছাড়পত্র দেখেই কল ডেটের আগে ভিসার ব্যবস্থা সম্পন্ন করা। যদি কর্মীর ওয়ার্ক পারমিট (বিডা, বেপজা, এনজিও, ধর্ম মন্ত্রণালয়েরসহ ইত্যাদি হয়) তাহলে যদি সন্দেহ হয় তবে ঐ সংস্থার ওয়েবে গিয়ে দেখে নিলে হবে অথবা ঐ সংস্থায় ফোন দিয়ে ইমেইলের মাধ্যমে সমাধান করে কল ডেটের পূর্বে ভিসা কার্য সম্পাদান করার ব্যবস্থা উন্মুক্ত করুন। ভিসা প্রার্থীকে ঐ সিকিউরিটি এবং ওয়ার্কপারমিট মেইলের কথা বলে বা পাওয়া যায়নি বলে মাসের পর মাস ঘুরানো বন্ধ করা উচিত। সরকারের অতি গোপনীয় বিষয়গুলো গোপনেই সুসম্পন্ন করা জরুরী। পাবলিক সমাধানের অশা করার কারণে অতিগোপনীয়তা নষ্ট হচ্ছে এবং অসাধু চক্র বা শ্রেণীর উন্নতির সোপান তৈরী হচ্ছে। কর্মীদের পরিবারের ভিসার ক্ষেত্রে কর্মীর ভিসার সংযুক্তির ক্ষেত্রেও বিরম্বনা হচ্ছে। কর্মীর যেহেতু ওয়ার্কপারমিট আছে এবং সেই ওয়ার্কপারমিট মূলেই ভিসা পাচ্ছে সেইহেতু কর্মীর সঙ্গেই ভিসার ব্যবস্থা করলে ভিসা জটিলতার কাজটি সহজ হয়। কারণ কর্মীর ভিসা হওয়ার পর তার পরিবারের সঙ্গে যুক্ত করন করে আরো কয়েক সপ্তাহ দেরী করতে হয় এর মধ্যে ইমাজেন্সি বহিরাগমনের কোন সুযোগ থাকে না। যার জন্য উভয়ের প্রতি উভয়েরই ক্ষোভ পরিলক্ষিত হয়। তাই ভিসা কর্ম সহজীকরণের বিষয়ে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার কৌশল নির্ধারণে ভুমিকা রাখার আহবান জানাচ্ছি। আরো একটি বিষয় লক্ষ্যনীয় যে, বিদেশী কর্মীর পরিবারের সদস্য যারা ১৫ বছরের উদ্ধে তাদের আবার ভিসা ভ্যারিফিকেশন প্রয়োজন। এই অধ্যায়টিও জটিল কারণ এই ভ্যরিফিকেশন করতে বিদেশী কর্মীর ভিসার প্রয়োজন। ভিসা ছাড়া এসবি সুপারিশ করতে পারেন না তাই ভিসা প্রপ্তীতে দেরি হলে এসবির কথা শুনতে হয় এবং ভিসা প্রাপ্তির পর ভ্যারিফিকেশন সম্পন্ন হলে আবার ঐ ভ্যরিফিকেশন রিপোর্ট প্রাপ্তিতেও ভোগান্তি। ঐ রিপোর্ট পাপ্তির পর ভিসা অফিস আর পুলিশ যোগাগের মাধ্যমে কিভাবে দ্রুত সময়ে ভিসা নিশ্চিত করা যায় সেই বিষয়টিও করনীয়তে ঠিক করা উচিত। ছাত্রদের এবং ভ্রমন প্রত্যাশিদের ক্ষেত্রেও ভিসা সহজীকরণে ভুমিকা রাখতে পদ্ধতিগত পরিবর্তন জরুরী। এই ক্ষেত্রে এসবি, হোম, কর্মানুমতি দেয়ার ক্ষমতাপ্রাপ্তরা ভিসা অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধিকরণে গুরুত্বারূপ করার জোর দাবী রাখছি। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ দিয়েছে এবং ডিজিটাল ব্যবস্থা সকলের জন্য উন্মক্ত করেছি তাই এই সুযোগ কাজে লাগানো এবং ব্যবহার করার জন্য সকলকে অনুরোধ রাখছি। ডিজি মহোদয়কে সবিনয় অনুরোধ রাখছি আপনি একটি গুরুত্ব দিয়ে ভিসা প্রত্যাশিদের ভোগান্তি লাগাবে প্রশান্তি দিন। আপনার পদক্ষেপেই এই ভিসা অফিস দেশের সুনাম ও সুখ্যাতি অর্জনে ভুমিকা রাখবে। যদি আমাদের কোন প্রয়োজন হয় আমরা আপনাকে সহায়তা করতে প্রস্তুত। সময় বাচাতে এবং পরিচ্ছন্ন কর্ম সম্পাদন করতে যে পদ্ধতি অবলম্বন করা দরকার সেই পদ্ধতি এখন আমাদের আছে এবং শুধু ব্যবহার এবং সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য সাহস ও চিন্তা এবং কর্মের সমন্বয় দরকার। কর্মী যথেষ্ট কিন্তু কর্ম সম্পাদনে গাফিলতি আর উপরি আয়ের উৎসই ভোগান্তির কারণে পরিণত হয়। আগামী সংখ্যায় বিস্তারিত লিখব এবং এর থেকে উত্তরণের উপায়গুলো বিশদ আলোচনা করব।

Leave a Reply

Your email address will not be published.