ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষনে ৮ মাসের অন্তসত্বা স্বামী পরিত্যক্ত বাকপ্রতিবন্ধী দুই সন্তানের জননী । উপজেলার মেহারী ইউনিয়নের চৌবেপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত একই গ্রামের জসিম মিয়ার ছেলে ইজিবাইক চালক নাইম মিয়ার বিরুদ্ধে কসবা থানায় মামলা দায়ের করেছেন বাকপ্রতিবন্ধী নারীর পিতা মোঃ আবদুল করিম। বিষয়টি নিয়ে গ্রামে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সুবিচার ও সন্তানের পিতৃপরিচয় পেতে এলাকার সাংসদ আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন পরিবার ও এলাকাবাসী।
অভিযোগ ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার চৌবেপুর গ্রামের নোয়াবাড়ী এলাকায় অতি সাধারন কৃষক আবদুল করিমের বাকপ্রতিবন্ধি প্রায় এক যুগ আগে একই গ্রামের মুছা মিয়ার ছেলে সুলমান মিয়ার সাথে বিয়ে হয়। বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় গত ৪ বছর বিচ্ছেদ হয় সুলমান মিয়ার সাথে। ৮ বছরের সংসার জীবনে এক ছেলে ও এক মেয়ের মা হন ওই বাকপ্রতিবন্ধী নারী। বিচ্ছেদের পর থেকে দুই সন্তান নিয়ে বাবার বাড়ীতেই আলাদা ঘরে বসবাস করেন ওই নারী।
গত প্রায় এক বছর ধরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বাকপ্রতিবন্ধী ওই নারীকে ধর্ষন করা করার অভিযোগ উঠে একই গ্রামের জসিম মিয়ার ছেলে নাইম মিয়ার বিরুদ্ধে। প্রতি রাতেই নাইম ধর্ষনের উদ্দেশ্যে ওই বাড়িতে যেতো। মেয়ের বাবা রাতের বেলায় মানুষের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘর থেকে টর্চ মারলে দৌড়ে পালিয়ে যেতো নাইম। বিষয়টি নাইমের পরিবারকে জানালে তারা এসে ক্ষমা চান আবদুল করিমের নিকট এবং নাইম এ বাড়িতে আর আসবেনা বলে প্রতিশ্রুতি দেন।
কিছুদিন আগে গভীর রাতে আবারো নাইম ঘরে ঢুকে বাকপ্রতিবন্ধী ওই নারীর সংগে শারীরিক মেলামেশা করে ঘরের জানালা দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় আবদুল করিমের পরিবার দেখতে পায় নাইমকে। বিষয়টি জানাজানি হলে এ নিয়ে প্রতিবেশী কিছু সাহেব সর্দার সমাধান করে দেয়ার নামে অভিযুক্ত পক্ষের সাথে যোগসাজসে সময়ক্ষেপন করেন। ধীরে ধীরে অন্তসত্বা হয়ে পড়ে ওই নারী। মেয়ের শারীরিক পরিবর্তন দেখে মা-বাবা জানতে চাইলে মেয়ে ইশারায় বুঝায় সে অন্তসত্বা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে আলট্রাসনোগ্রাম করালে চিকিৎসক জানান সে প্রায় ৮ মাসের অন্তসত্বা । পরে মা-বাবা মেয়েকে নিয়ে নাইমদের বাড়িতে গেলে লোকজনের সামনে ওই নারী নাইমকে ধর্ষক হিসেবে সনাক্ত করেন।
নিরুপায় হয়ে নারীর বাবা গত ২৩ এপ্রিল বিকেলে নাইমের বিরুদ্ধে ধর্ষনের মামলা করেন বাকপ্রতিবন্ধী নারীর বাবা।
নারীর বাবা জানান, আমার এই বোবা মেয়ের গর্ভে নাইমের ৮ মাসের সন্তান। আমি রাষ্ট্র ও সমাজের কাছে ন্যায় সংগত বিচার চাই।
এ বিষয়ে নাইমের বাবা জসিম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে আমাদের বাধার মুখে ছেলে নাইম ওই বাড়িতে যায়না। এরপরেও যদি দোষী সাব্যস্থ হয় আমি যে কোনো বিচার মাথা পেতে নেব।
গ্রামের ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান, স্বপন ব্যাপারী, অলি মিয়া, আবদুল কাইয়ুম ও মো. শাহীন মিয়াসহ গ্রামের নিরপেক্ষ লোকজন জানান, নাইম খারাপ প্রকৃতির ছেলে। এর আগেও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন।
কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।