ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ কসবায় প্রকাশ্য দিবালোকে ডিবি পরিচয়ে শরিফুল ইসলাম নামক এক যুবককে অপহরণ করে তিন দিন পর বাড়ির পাশে মুর্মূষ অবস্থায় ফেলে পালিয়েছেন অপহরণকারীরা। অপহরনের শিকার শরিফুল ইসলাম উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নেরন শ্যামবাড়ি গ্রামের সবুজ মিয়ার ছেলে অপহরন কারি শওকত খান একই গ্র্রামের মৃত শারফুদ্দিন খানের ছেলে।
২০২২ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্য বিরোধ চলে আসছিলো। এ বিষয়ে শরিফুল ইসলামের স্ত্রী রোজিনা আক্তার কসবা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন । প্রতিকার না পেয়ে রোজিনা আক্তার ও গ্রামবাসী গত ১৬ মে কসবা প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করে শওকত খানসহ ডিবি পরিচয়দানকারী সন্ত্রাসী চক্রটিকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে রোজিনা জানান, তার স্বামী শরিফুল ইসলামকে গত ৮ মে বিকেলে কসবা টি.আলী কলেজের গেইটের সামনে মারধর করে জোরপূর্বক ফিল্মী কায়দায় মুখে হাত ঢুকিয়ে অপহরনকারী দলের ৫/৬ জন সদস্য কালো একটি মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নিয়ে যায় । কুমিল্লা শহরের বাটপাড়া খান প্রেসের ২য় তলায় হাতে পায়ে শিকল দিয়ে বেধে নির্যাতন চালায়। এদিকে অপহরনকালে কসবা টিআলী কলেজের পাশে বসবাসকারি সৈয়দ আলী নামক এক ব্যক্তি ও তার ছেলে তাদের সহযোগিতা করে । শরিফের বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার শুনে স্থানীয় ব্যবসায়িরা এগিয়ে গেলে সৈয়দ আলী অপহরনকারীদের ডিবি বলে পরিচয় করান এবং সকলকে চলে যেতে বলেন।
অপহরনকারীরা শরিফুল ইসলামকে নিয়ে চলে গেলে ডিবি পরিচয়দানকারীদের বিষয়ে স্থানীয় ব্যবসায়িদের কিছুটা সন্দেহ হয়। তারা সৈয়দ আলীকে জানিয়ে দেয় ছেলেটির যদি কিছু হয়, তাহলে আমরা আপনাকে ছাড়বোনা। রোজিনা জানান, স্থানীয় ব্যবসায়িদের কারনেই শওকত গংরা ভয়ে আমার স্বামীকে হত্যা না করে ৩দিন পর বাড়ির পাশে হাত পা বাধা অবস্থায় ফেলে যায়। এমতাবস্থায় আমরা তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করে শরিফুল ইসলামের কথামতো ঘটনাস্থলে যাই এবং স্থানীয় ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন, রুবেল মিয়া, আব্দুল হান্নানসহ অনেকের সংগে কথা বলে সত্যতা যাচাই করি এবং ৮ জনকে আসামি করে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি ।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শওকত খান ও তার দলবল এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে। কসবা থানা পুলিশ শ্যামবাড়ি গ্রামের বাজারে তার অফিস থেকে বিপুল পরিমান দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে । সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, মূলগ্র্রাম ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান মুন্সি হাবিবুর রহমান মাহফুজ, সাবেক ইউপি সদস্য শিশু মিয়া, শরিফুল ইসলামের দাদী রাবেয়া আক্তার, মা নিলুফা আক্তার, গ্রামবাসি আব্দুল মন্নান, মোহাম্মদ ওবায়েদ উল্লাহ, জামাল ভূইয়া, রনি ভূইয়াসহ অনেকে।
অভিযুক্ত শওকত খানের সংগে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি সরকারী চাকুরী করি। আমি এই ঘটনার সাথে জড়িত নই।
কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।