ঘূর্ণিঝড় মোখাঃ প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে রক্ষা, যেতে হয়নি আশ্রয়কেন্দ্রে

বাআ ॥ দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের আবাসন নিশ্চিতকল্পে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অন্যতম উদ্ভাবন আশ্রয়ণ প্রকল্প। এই প্রকল্পে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে ১ম, ২য় ও ৩য় পর্যায়ে সর্বমোট ৪৫৯টি ঘর ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। চতুর্থ পর্যায়ে গত ২২ মার্চ টেকনাফ উপজেলার মোট ৮৭টি পরিবারকে জমিসহ ঘর দেওয়া হয়। উপহারের ঘর পেয়ে এবার ঘূর্ণিঝড় মোখায় নিরাপদে নিজ ঘরেই ছিলেন তারা। মোখা টেকনাফজুড়ে ব্যাপক তান্ডব চালালেও উপহারের ঘরের তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

গত সোমবার (১৫ মে) টেকনাফ উপজেলায় প্রধানমন্ত্রী দেওয়া ঘরে বসবাসরত বাসিন্দাদের সঙ্গে আলাপ করে এমন তথ্য জানা গেছে। টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নে শীলখালী চৌকিদার পাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর উপহার পেয়েছেন নুরুন নাহার বেগম। তিনি বলেন, ‘আমি দেড় বছর আগে সরকারের কাছ থেকে ঘর পেয়েছি। এখন নিরাপদেই আমার দুই সন্তানকে নিয়ে বসবাস করছি।’

নুরুন নাহার আরো বলেন, আমার বয়স ৫৬ বছর। এই বয়সে এবার প্রথমবারের মতো ঘূর্ণিঝড়ের সময় নিরাপদে নিজ ঘরেই বসবাস করেছি। অতীতে যতবার ঘূর্ণিঝড় হয়েছে ততবার আমাদের ঘর উড়িয়ে নিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের পর নতুন করে ঘর নির্মাণ করতে হতো। এবার তা করতে হয়নি।

সামছুর নাহার নামের আরেক নারী বলেন, আমার স্বামী গাড়ি চালক। এক বছর আগে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের বাড়ি পেয়েছি। তাই এবার ঘূর্ণিঝড়ে আমাদের আশ্রয় কেন্দ্র যাওয়া লাগেনি।

প্রধানমন্ত্রীর ঘর উপহার পাওয়া হাসিনা বেগম বলেন, আমার স্বামী সাগর থেকে মাছ ধরে। পাঁচ সন্তান নিয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেওয়া ঘরে বসবাস করি। আট মাস আগে এই ঘর আমাদের উপহার দেওয়া হয়েছে।

হাসিনা আরো বলেন, এবার ঘূর্ণিঝড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়া লাগেনি। নিরাপদে এই ঘরের মধ্যে ছিলাম। তিনি বলেন, অতীতে অনেক ঘূর্ণিঝড়ের মুখোমুখি হতে হয়েছে। যতবার ঘূর্ণিঝড় হয়েছে ততবার আমাদের ঘর ভেঙ্গে গেছে। ঘূর্ণিঝড়ের পর পুনরায় ঘর নির্মাণ করা হতো। কিন্তু এবার কোনো কিছু হয়নি আমাদের।

নৌকা চালক জহুর আহমেদ বলেন, আমি নৌকার মাঝি। আমার স্ত্রী সন্তান নিয়ে প্রধানমন্ত্রী দেওয়া উপহারের ঘরে থাকি। ঘূর্ণিঝড় মোখার সময় ঘরেই ছিলাম। আমাদের আশয় কেন্দ্রে যাওয়া লাগেনি। এর আগে গত রোববার (১৪ মে) দুপুরে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় মোখা। এর মূল আঘাতটি মিয়ানমারে হওয়ায় অপেক্ষাকৃত কম ক্ষতি হয় বাংলাদেশের। ফলে ধীরে ধীরে আতঙ্কের ঘূর্ণিঝড় মোখার বিপদ কেটে স্বস্তি ফিরে এখানকার মানুষের মনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.