দাম্ভিকতা এবং হিংসা এই দুইটি শব্দ মিলে সর্বনাশে একাকার হয়েছে সর্বত্র। এই দুইটি শব্দের প্রায়োগিক ব্যবহারে বিনাশ হচ্ছে শান্তি ও স্থিতিশীলতা এবং নিশ্চয়তা অর সর্বোপরি সেবার কাজের ফলপ্রসুতা। দাম্ভিকতা অনেকাংশে নিজের ক্ষমতাকেও প্রকাশ করে। আর ঐ ক্ষমতাটাই দাম্ভিকতাকে টিকিয়ে রেখে কার্য্যে পরিণত করছে। ক্ষমতা কিন্তু সেবার জন্য। ক্ষমতা ভালবাসার জন্য। ক্ষমতা ক্ষমার জন্য। ক্ষমতা সার্বিক কল্যাণে মানবতার বা সৃষ্টির দেখাশুনা ও পরিচর্যার জন্য। কিন্তু বর্তমানে ক্ষমতা হলো অন্যের ক্ষতির জন্য। নিজের দাম্ভিকতাকে প্রকাশের জন্য। বিনম্রতাকে কলুশিত করার জন্য। এই হচ্ছে এখনকার দৈনন্দিন হালচাল।
রাজনৈতিক ব্যক্তি থেকে পাড়ার চায়ের দোকানদার এমনকি সর্বস্তরের উচু-নীচু মানুষগুলো এখন যার যার অবস্থান থেকে ক্ষমতা কেন্দ্রীক দাম্বিকতায় মিলেমিশে হিংসা বিদ্দেষ চরিতার্থ করে যাচ্ছে। কেউই আর এখন শান্তি, স্থিতিশীলতা আর নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তা এবং সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায় বুঝে চলার বা সৃষ্টিকর্তার বিধানের আলোকে এগিয়ে যাওয়ার অথবা স্ব স্ব ধর্মের বিধানানুযায়ী দিনগুজার করার অবস্থানে নেই। সবাই এইখ জাগতিকতায় মিলেমিলে একাকার। অথবা দুনিয়াবী কামীয়াবী হাছিলে মত্ত্ব মাতাল। আজকের এই পৃথিবীতে যত নৈরাজ্য বা বিভেদ সবই হয়েছে ঐ দাম্ভিকতা ও হিংসার সংমিশ্রনে।
নেতারা আজ দম্ভিকতার সুরে কথা বলে এবং কাজ করে। যারা গত বা ক্ষমতায় নেই তারা তাদের ক্ষমতার আমলের দাম্ভিকতা এখন প্রকাশ করে বা বুলি আওড়াই। কিন্তু এই ক্ষমতা আর কতক্ষণ। দুনিয়ার ক্ষমতা পালাবদলেও কি আমরা শিক্ষা নিতে পারি না। তবে দুনিয়াতেই আর কয় দিন! এই ক্ষমতাতো একদিন শেষ হবেই; তাই সময় থাকতে সাবধান হউন। ক্ষমতাকে বিনম্রতায় আবৃত করুন এবং এবং ক্ষমা ও ভালবাসার আলিঙ্গনে আবদ্ধ করে সেবার মানুষিকতাকে বৃদ্ধিকল্পে জাগ্রত হউন এবং সেবকের ভুমিকাকে প্রস্ফুটিত করুন। আপনাকে সুযোগটা দেয়া হয়েছে এবং এই সুযোগ সঠিক পথে এবং সঠিক অবস্থানে প্রয়োগ করে সেবার মানদন্ডকে মজবুত করুন।
ইদানিং মানুষের অসহায়ত্বের কথা প্রকাশিত হচ্ছে এবং দাম্ভিকতা ও হিংসা জেরে আগামীর দাম্বীকতাকে জানানও দিচ্ছে। তা বন্ধ করুন। যা যেই ক্ষমতা নেই সে বিনা কারণে অন্যের মহা ক্ষতি সাধন করে নিজের ক্ষমতা জাহির করছে। একটি উদাহরণ হলো একজন ভিসা প্রত্যাসি তার ভিসা প্রাপ্তিতে আবেদন করেন। কিন্তু উক্ত সময়ের মধ্যে তার নিরাপত্তা ছাড়পত্র সম্পন্ন হয়নি। কিন্তু তিনি তার চিকিৎসা এবং বাবার অন্তিম মুহুত্বটুকু পাশে থেকে শেষ বিদায় জানানোর প্রয়োজনে এক্সিট ভিসার আবেদন করেন। কিন্তু ঐ আবেদন করার সময় সরকারের বেধে দেওয়া জরিমানা এবং ডাবল ভিসা ফি দিয়ে সুনিশ্চিত টিকেটের সংমিশ্রণে ভিসা প্রাপ্তিতে সবিনয় আবেদন এবং সাক্ষাত করেন। যদিও নিয়মানুযায়ী তার একবারই ভিসা ফি দেয়ার কথা কিন্ত ঐ অফিসার দুইবার নিয়ে নেয় কিন্তু জরুরী প্রয়োজনের চাহিদায় কোন প্রতিবাদ না করে কাংখিত এক্সিট ভিসার অপেক্ষায় থাকেন। একসপ্তাহ পরে জানতে পারে যে, তার ফাইল পাওয়া যায় নাই। তাই তাকে পুনরায় পুরোনো ফাইলের কপি জমা দিতে হবে। কি অদ্ভুদ নিয়ম রে ভাই! (বেড়া দেয়া হলো পাহাড়া দেয়ার জন্য আর ঐ বেড়াই ক্ষেত খেয়ে ফেললো)। যাক সেই অনুযায়ী পুরোনো ভিসার আবেদনের সকল কাগজ জমা দেয়া হলো এবং ভিসার জন্য পাসপোর্টও জমা নেয়া হলো। কিন্তু ভিসা আনতে গেলে জানানো হলো ভিসা হবে না দেরি হবে। পুলিশ রিপোর্ট লাগবে; তদন্ত হবে এতদিন তিনি বাংলাদেশে কি করেছেন? আশ্চর্য্য না হয়ে আর কি হওয়া যায় বলূন। এই হলো সেবার নমুনা। ইমারজেন্সি বা প্রয়োজনে এক্সিট নেয়ার কি এই বিধান!। অসুস্থ্য মানুষ আরো অসুস্থ্য হলো আর বাবাকে দেখার প্রত্যাশী একেবারে ভেঙ্গে খান খান হয়ে ফিট হলো। এই হলো সেবার ক্ষেত্রে ক্ষমতা এবং দাম্ভিকতার অমায়িক দুব্যবহার।
সেবার সকল ক্ষেত্রেই এই অমায়িক দুব্যবহারে আমার সরকারের অক্লান্ত পরিশ্রম; উন্নয়ন এবং সুনাম ও সম্মান বিফলে যাচ্ছে। হিংসা, দাম্ভিকতা এবং অযোগ্যদের অতিরঞ্জিত বাড়াবাড়িতে সরকারের এবং দেশের সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব সুস্পষ্ট হচ্ছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই নেতিবাচকতার মূলে সরকার নয় বরং সরকারের অধিনের অধিনস্তরা। যেমন; ভিসা অফিস, এনজিও, নিরাপত্তা ছাড়পত্রে সংশ্লিষ্টরা, কর ও ভ্যাট অফিস সংশ্লিষ্টরা। তাই সরকারকে আরো আন্তরিকতার সহিত এই জায়গাগুলোতে কাজ করতে হবে। যোগ্য এবং সেবার মানুষিকতাসম্পন্ন আর সরকারের মনোভাবের বহিপ্রকাশে সমুজ্জ্বলদের কাজে লাগাতে এখনই পরিবর্তন অত্যাসন্ন। ভিসা অফিসকে ডেলে সাজানোর আবশ্যিকতা জরুরী হয়ে পড়েছে। এই দাম্ভিকতা ও হিংসা চরিতার্থে ব্যবহৃতরা যতদিন পদে থাকতে ততদিনই সরকারের দুর্নাম সাধিত হবে। আন্তর্জাতিক মহল সরকারের উপর যাতে আর দায় চাপাতে না পারে সেজন্য এখন জঞ্জাল দুরীকরণের পদক্ষেপ নিয়ে সামনে এগুতে হবে। এই আহবান রেখেই আগামীর শুভ প্রত্যাশায়।