ঢাকায় আসছেন চীনের ভাইস মিনিস্টার

প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স ॥ রোহিঙ্গা ও অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আলোচনার জন্য গত শুক্রবার (২৬ মে) ঢাকায় আসছেন চীনের ভাইস মিনিস্টার সান ওয়েইডেং। বেইজিংয়ের চার সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়ে আজ শনিবার ফরেন অফিস কনসালটেশনে যোগ দেবেন তিনি। বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।

আগামী রবিবার (২৮ মে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন প্রতিনিধি দলের নেতা ভাইস মিনিস্টার সান ওয়েইডেং। এবারের সফরে উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক সফর নিয়েও আলোচনার সম্ভাবনা আছে।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান ও ওয়াশিংটন সফর, ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে বাংলাদেশের আউটলুক ঘোষণা এবং আপাতদৃষ্টিতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অস্বস্তিকর সম্পর্কের মধ্যে চীনের ভাইস মিনিস্টার কিছুটা তড়িঘড়ি করে ঢাকায় আসছেন। সার্বিকভাবে বিবেচনা করলে বৈঠকটি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

এ বিষয়ে চীনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুনশি ফায়েজ আহমেদ বলেন, ‘বেইজিং আমাদের একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার। ঢাকা ও বেইজিংয়ের মধ্যে নিয়মিত ও বিশেষ বৈঠকের মাধ্যমে এটি প্রমাণিত হয় তারা অব্যাহতভাবে বাংলাদেশকে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে ও যাবে।’

প্রধানমন্ত্রীর সম্প্রতি তিন দেশ সফরের বিষয়ে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘যেকোনও ধরনের উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক সফর হলে সম্পর্কের গভীরতা আরও বেশি হবে।’

তিনি জানান, ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক ঘোষণার পর অনেকের ধারণা হয়েছিল যে বাংলাদেশ পশ্চিমাদের চাপের মুখে আছে এবং এ ধারণা যদি চীনও পোষণ করে, তবে তারা অবশ্যই বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়াবে সহযোগিতার জন্য।

উল্লেখ্য, চীনের সঙ্গে বছরের শুরুতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং কয়েক ঘণ্টার জন্য ঢাকায় আসেন। গত এপ্রিলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ওয়াশিংটনে যাওয়ার এক দিন আগে মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ দূত দেং শিজুন ঢাকায় আসেন। এর দুই সপ্তাহ পর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনার জন্য ১৮ এপ্রিল কুনমিং যান বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব।

ভূ-রাজনীতি : বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সরব যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের বক্তব্যকে চাপ প্রয়োগের কৌশল হিসেবে অনেকে বিবেচনা করছে। অন্যদিকে ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে আউটলুক ঘোষণা ও জাপান সফরের সময়ে সাউথ চায়না সুমদ্র নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থানের বিষয়টিও বুঝতে চায় চীন।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কূটনীতিক বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে যে ঘটনাগুলো ঘটছে, সেগুলো বিবেচনা করা হলে দেখা যাবে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের কিছু বোঝাপোড়ার বিষয় রয়েছে।’

উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘এটি কোনও গোপন বিষয় নয় যে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অস্বস্তিকর সম্পর্ক থাকলে চীন সেটির সুযোগ নেবে। আবার অন্যদিকে ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক ঘোষণা ও সাউথ চায়না সুমদ্র নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান কোন প্রেক্ষাপটে নেওয়া, সেটিও বুঝতে চাইবে তারা। অর্থাৎ মোটাদাগে বাংলাদেশের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ হওয়ার আগে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চাইবে চীন।’

ওই কূটনীতিক আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে চীনের জন্য বড় একটি ইতিবাচক বার্তা হবে যদি নির্বাচনের আগে উচ্চপর্যায়ের একটি রাজনৈতিক সফর হয়। সেটি ঢাকা হতে পারে অথবা বেইজিং হতে পারে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published.