ভজন শংকা আর্চায্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাক্ষণবাড়িয়ার কসবায় তৃতীয় লিঙ্গের সোহেল রানা হত্যার দুইদিন পর মামলা গ্রহন করে পুলিশ প্রধান আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে। গত সোমবার বিকেলে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত স্বাপেক্ষে অন্যান্য আসামীদেরও গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে তৃতীয় লিঙ্গের প্রায় ৫০/৬০জন মানুষ কসবা থানা চত্তরে অবস্থান নিয়েছিলো। কসবা থানা অফিসার্স ইর্নচাজ তাদের আশ্বস্থ করলে এরা থানা ক্যাম্পাস ত্যাগ করে।
নিহত সোহেল রানা দুষ্ট’র স্থানীয় অভিভাবক নাজমা আক্তারের দায়েরকৃত মামলা থেকে জানা যায় গ্রেপ্তারকৃত মামলার প্রধান আসামী রাকিব (২৩) একজন অটোচালক। রাকিব কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের কলেজ পাড়ার নাছির মিয়ার পুত্র। গত ৭/৮ মাস যাবত রাকিবের পরিচয় এবং তাদের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। রাকিবের অটোরিক্সা দিয়ে ঘুরাঘুরি করতো এবং তাদের তৃতীয় লিঙ্গের সংগঠনের কাজ কর্ম করতো।
সোহেল রানা সেকান্দার পাড়ার জসীম উদ্দীনের বাড়িতে ভাড়া থাকতো। সেখানে মাঝে মাঝে সোহেল ও রাকিব একত্রে রাত কাটাতো। বাদিনী নাজমা আক্তারের মেয়ে অজন্তা হিজড়া ছিলো সোহেল রানার গুরু।
গত ৩০ জুন রাত ৯টা ২০ মিনিটে বাদিনী নাজমা আক্তারের কন্যা অজান্তা হিজড়াকে রাকিব মুঠোফোনে জানায় সে সোহেল রানার লাশ সেকান্দার পাড়ার জামগাছের নীচে পড়ে আছে। নাজমা আক্তারের দাবী তার কন্যা অজান্তা হিজড়ার শীষ্য সোহেল রানা দুষ্টুকে রাকিব অজ্ঞাতনামা আসামীদের নিয়ে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে তার লাশ ঘটনাস্থেলে ফেলে রাখে।
খোজঁ নিয়ে জানা যায় অজান্তা হিজড়াকে গুরু মেনে ঢাকা থেকে কসবায় এসেছিল সোহেল রানা এক বছর আগে। সোহেল রানা দিনাজপুর জেলার চিরিবন্দর থানার আব্দুলপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সুকদেবপুর গ্রামের ছাদের আলীর সন্তান।
তার চাচা আল আমিন মুঠোফোনে জানান তৃতীয় লিঙ্গের সন্তান হওয়ায় সামাজিক অবহেলার কারনে পারিবারিক বন্ধন ছেড়ে সোহেল রানা ঢাকায় থাকতো। পরে অজান্তা হিজড়ার হাত ধরে কসবায় চলে যায়।
গত ১ জুলাই ময়না তদন্তের পর সোহেল রানার পরিবারের লোকজন তার লাশ দিনাজপুরে তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানেই তার দাফন সম্পন্ন হয়।
কসবা থানার অফির্সাস ইনর্চাজ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষগুলো তাদের একজন সহপাঠীকে হারিয়ে ভাড়াক্রান্ত ও আবেগে আপ্লুত। তিনি বলেন প্রাথমিক ভাবে খুনী সনাক্ত ও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছে রাকিব। তদন্তের স্বার্থে আপাতত আর কিছু বলা যাচ্ছে না । আমি তাদের শান্ত থাকতে অনুরোধ করেছি। সহসাই সমস্ত ঘটনা উদঘাটন করে আমরা আপনাদের (সাংবাদিকদের) জানাবো।