সরকারকে ‘সুবোধবালক-বালিকার মতো’ পদত্যাগের আহ্বান মির্জা ফখরুলের

প্রশান্তি ডেক্স॥ সরকারের ‘সময় শেষ’ উল্লেখ করে তাদের ‘ভালো ছেলের মতো, সুবোধ বালক-বালিকার মতো’ পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জাফখরুল ইসলাম আলমগীর।

গত শুক্রবার (১৪ জুলাই) বিকালে নোয়াখালীর মাইজদী শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে কৃষকদল, শ্রমিক দল, তাঁতী দল, মৎস্যজীবী দল ও জাসাসের আয়োজনে অনুষ্ঠিত পদযাত্রায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে পদযাত্রায় বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন।

এ সময় মির্জাফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নিরপেক্ষ সরকার, নির্দলীয় সরকার থাকলে আওয়ামী লীগের ভাত নেই। সবাইকে বোকা বানিয়ে বিচার ব্যবস্থার ওপর জোর দিয়ে, খায়রুল হকের ওপর জোর দিয়ে পার্লামেন্টে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিধান বাতিল করা হয়। কারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকলে আওয়ামী লীগ ৩০টি আসনও পেতো না।’

মির্জাফখরুল আওয়ামী লীগের নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘তারা বলে, “নির্বাচন আমাদের অধীনে হবে। আমরাই ভোট কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ করবো। আমরাই ভোট দেওয়াবো, আমাদের মতো করে সবাইকে ভোট দিতে হবে। নইলে চলে যেতে হবে।” এমনকি আমাদের ভোটারদের এখনও বলে তারা ভোট কাকে দেবে। “যদি বিএনপিকে ভোট দিতে চাও তাহলে তোমার ভোট হয়ে গেছে।” ভোট কেন্দ্রে যেতেই দেয় না।’

শেখ হাসিনাকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আমাদের বলে তাদের অধীনে নাকি ভোট দিতে হবে। ২০২১ সালে শেখ হাসিনা আমাদের ডেকে বলেন নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে, সবাই ভোট করতে পারবেন। সবাইকে বলেন ভোট করতে, আমি কোনও বাধা দেবো না। আমরা ভাবলাম, বোধ হয় শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে। আগের রাতে ভোট হয়ে গেলো। এখন আবার বলছে আমরা সুন্দর ভোট করবো। আমাদের অধীনেই ভোট হবে। ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন হবে। আহারে কী আবদার! শিয়ালের কাছে বারবার কুমিরের বাচ্চা দেওয়া যাবে না। বারবারই খেয়ে ফেলবে। আমরা এবার আর খেতে দেবো না।’

আওয়ামী লীগকে হুঁশিয়ারি দিয়ে ফখরুল বলেন, ‘আর কোনও সময় নেই, তাদের সময় শেষ। আমি পরিষ্কারভাবে বলেছি। আবারও বলছি, ভালো ছেলের মতো, সুবোধ বালক-বালিকার মতো পদত্যাগ করেন, সংসদ ভেঙে দেন। যদি ভালোয় ভালোয় শোনেন, পদত্যাগ করেন তাহলে তো ভালো। তা না হলে ফয়সালা হবে রাজপথে।’              

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আট বছর কারাগারে রাখা হয়েছে। তিনি গণতন্ত্রের জন্য আপসহীন সংগ্রাম করেছেন। রাষ্ট্র মেরামতের জন্য আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। আমাদের নেতা তারেক রহমান এই ৩১ দফা দিয়ে আমাদের একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছেন।’

পদযাত্রায় আরও বক্তব্য রাখেনু কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম প্রমুখ।

এ সময় নোয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ আজাদ, জেলা যুবদলের সভাপতি মনজুরুল আজিম সুমন, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান, জেলা বিএনপির সদস্য মো. গোলাম মোমিত ফয়সাল, জেলা শ্রমিক দলের সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিনসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.