প্রশান্তি ডেক্স ॥ বাংলাদেশে আল-কায়েদা মতাদশের্র কেউ রয়েছে কিনা, তারা জঙ্গিবাদকে উদ্বুদ্ধ করছে কিনা, অনলাইন-অফলাইনে সক্রিয় কিনা এসব বিষয় খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দারা। আফগানিস্তানে গিয়ে যুদ্ধে অংশ নিয়ে অনেকেই বিভিন্ন দেশে আবারও ফিরে গেছে। কারা কারা ফিরেছে বা কারা অংশ নিয়েছিল তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সম্প্রতি জাতিসংঘের এক রিপোর্টে, বাংলাদেশ-মিয়ানমার-ভারত উপমহাদেশে আল-কায়েদার কার্যক্রমের বিষয় উঠে আসে। তার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসব বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা করছে। জঙ্গি নিয়ে কাজ করা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ইউনাইটেড নেশনসের সিকিউরিটি কাউন্সিলের গত ২৫ জুলাই প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের ৭১ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, আফগানিস্থানে আল-কায়েদা কোর ৩০ থেকে ৬০ সদস্যের মধ্যে স্থিতিশীল রয়েছে, সেখানে সমস্ত আল-কায়েদা যোদ্ধা ৪০০ বলে অনুমান করা হয়, পরিবারের সদস্য এবং সমর্থকদের অন্তর্ভুক্তসহ ২০০০ ছুঁয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ভারতীয় উপমহাদেশে আল-কায়েদার (একিউআইএস, তালিকাভুক্ত নয়) প্রায় ২০০ যোদ্ধা রয়েছে, ওসামা মেহমুদ (তালিকাভুক্ত নয়) আমির। একটি সদস্য রাষ্ট্র মূল্যায়ন করেছে যে আল-কায়দা প্রতিবেশী বাংলাদেশ, ভারত শাসিত জম্মু ও কাশ্মীর এবং মিয়ানমারে তাদের কার্যক্রম ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য একিউআইএস (আল কায়েদা ইন দা ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট) গঠন করছে।
সেই সদস্য রাষ্ট্রটি আরও উল্লেখ করেছে যে একিউআইএস’র কিছু সীমিত উপাদান ইসলামিক স্টেইট খোরাসানের সঙ্গে যোগ দিতে বা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, আল-কায়েদা বলে নয় আফগানিস্তানে আমাদের দেশ থেকে অনেকেই তথাকথিত হিজরত যুদ্ধের নামে গিয়েছে। অনেকের তালিকা বিভিন্ন সময় এসেছে। আল-কায়েদার এক্টিভিটিস আফগানিস্তানে এখন অনেকাংশেই কমে গেছে। সেখান থেকে অংশ নেওয়া অনেকেই হয়তোবা নিজ নিজ দেশে ফিরে এসেছে। ফিরে আসার পরে গোপনে তাদের এক্টিভিটিস থাকতে পারে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের এক্টিভিটিস নেই বলে ধারণা গোয়েন্দাদের। অনেকেই আফগানিস্তানে গিয়েছে এবং পরে বাংলাদেশে ফিরে এসেছে বলে তথ্য রয়েছে।
জাতিসংঘের রির্পোেটর প্রেক্ষিতে এলিট ফোর্স র্যাবের একজন কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বাংলাদেশ-ভারত-পাকিসÍান-মিয়ানমার বিশেষ করে ভারত উপমহাদেশে ২০০ জন সদস্যের এক্টিভিটিস রয়েছে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। তারা আল-কায়েদার পক্ষে ছিল। কিন্তু এখন আল-কায়েদার তেমন এক্টিভিটিস নেই। প্রতিবেদনে যে সংখ্যা প্রকাশ করা হয়েছে যদি বিভিন্ন দেশে ফিরে গিয়ে থাকে তাদের তালিকার পাশাপাশি অবস্থান সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। এছাড়া বাংলাদেশে বসে কেউ আল-কায়েদার মতাদর্শে বাংলাদেশে কার্যক্রম চালাবে তা কখনোই সম্ভব নয়, সব সময় সাইবার মনিটরিং পেট্রোল জোরদার রয়েছে।
সম্প্রতি ভারতে বেশ কয়েকজন জঙ্গি ধরা পড়েছে সেই প্রেক্ষিতেই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের কথা উল্লেখ করা হয়েছে জানিয়ে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল-মঈন বলেন, আল-কায়েদার মতাদর্শ কিংবা আল-কায়েদার সঙ্গে এখনও সম্পর্ক রয়েছে বাংলাদেশে এমন কেউ রয়েছে কিনা এসব বিষয়ে গোয়েন্দারা খতিয়ে দেখছে। সব বিষয় মাথায় রেখেই গোয়েন্দারা কাজ করছে।