ভিসা আবেদন জমায় অতিরিক্ত একহাজার টাকা কার!

প্রশান্তি ডেক্স ॥ ভিসা অফিসের দৌরাত্ব্য এখন কোথায় গিয়ে ঠেকেছে তা ভাষায় প্রকাশ করার আর কোন সুযোগ থাকল না। ভিসা প্রার্থীরা ভিসার আবেদন করতে গেলে এক হাজার টাকা উপরি না দিলে ভিসার আবেদন গ্রহণ করেন না বরং নানা অযুহাতে প্রার্থীকে ফিরত পাঠিয়ে দেন। যদি কারো প্রতিনিধি যায় তাহলেতো উপরিওয়ালাদের পোয়া বারো। প্রশান্তির ক্রাইম রিপোর্টার নিজে যখন কোম্পানির বিদেশী কর্মীর নির্ভরশীদের ভিসা এক্সটেনশন এর আবেদন নিয়ে যায় তখন ঐ উপরি খাওয়া লোকেরা দুটি বাচ্চার ভিসা আবেদনের ফাইল থেকে দুই হাজার টাকা নিয়ে আবেদন গ্রহণ করেছে। আমাদের প্রতিনিধি অনেক তর্কাতর্কি করেও কোন উপকার না পেয়ে পরিচয় গোপন করে দুই হাজার টাকা দিয়ে আবেদনগুলো জমা করেন। এই নৈরাজ্যের অবসান কবে হবে? ডিজিটাল বাংলাদেশ করলাম এখন স্মার্ট বাংলাদেশ করনের প্রক্রিয়ায় আমরা নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখছি কিন্তু আমাদের প্রচেষ্টায় বাঘড়া দিয়ে যাচ্ছে এইসকল দুর্নাম সৃষ্টিকারী ডাকাতরা।

ভিসা অফিসে ভিসার আবেদন হারিয়ে যাওয়ার প্রবনতা প্রায়ই পরিলক্ষিত হয়। গত দশ বছরে এর প্রভাব বহুবার দেখেছি কিন্তু ইদানিং এর প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়ে জনঅসন্তোস থেকে আন্তর্জাতিক অসন্তোসে পরিণত হয়েছে। সরকারের গুনগান গাওয়ার পরিবর্তে এমনকি সরকারের সকল উন্নয়ন ও সফলতার বিপরীতে এই দুর্নাম সকল অর্জনকেই ম্লান করে দিচ্ছে। একটি এক্সিট ভিসা পেতে যত প্রকার হয়রানি তার সবটুকুই ভিসা প্রার্থীরা পাচ্ছে। তবে ওপরিওয়ালারা যদি ওপরি পেয়ে যায় তাহলে কোন প্রকার হয়রানি ছাড়াই খুবই সহজে ভিসা দিয়ে দিচ্ছে। তবে এই ক্ষেত্রে উপরি আয়ের জয়জয়াকার বন্ধ না করলে এবং বর্তমান ভিসা ব্যবস্থার পরিবর্তন না করলে মনে হয় আমার সরকারকেই দেওলিয়া করে ছাড়বে। এই উপক্রমবস্থায় সরকারের ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। নতুন প্রশিক্ষিত ডায়নামিক সৎ অফিসার দিয়ে এমনকি অভিজ্ঞ কর্মীদের ঢাকা আগারগাঁও অফিসে নিয়ে এসে দুর্নাম গুছানোর সুযোগ রয়েছে নতুবা আগামী নির্বাচনের পূর্বে মগের মুল্লুকের চেয়ে আরো নিচে নেমে যাবে এই অফিস দুরাবস্থার।

একজন ভিসা প্রার্থী তার ভিসার জন্য অপেক্ষা করেন নিরাপত্তা ছাড়পত্র এবং কর্মানুমতি পাওয়ার দীর্ঘসুত্রিতার জন্য। তবে যদি এই দীর্ঘসুত্রীতার সময়ে তাদের দেশ ত্যাগের প্রয়োজন হয় তাহলে নিয়মানুযায়ী অতিরিক্ত জরিমানা এবং ভিসা ফি ও কোম্পানীর জরিমানার পর নির্ধারিত সময়ে ভিসা নিয়ে দেশ ত্যাগ করা কিন্তু দুভাগ্য হলো সকল প্রকার জরিমানা দেয়ার পরও ঐ প্রার্থী তার প্রয়োজনীয় সময়ে ভিসা না পেয়ে দুই অথবা তিনমাস দেরি করে ভিসা নিয়ে এই দেশ থেকে তিক্ত অভিজ্ঞতার জুলি নিয়ে অথবা তাদের জরুরী প্রয়োজন নিস্ফলে বা বিফলে গিয়ে হতাশা এমনকি দু:খভরা মননিয়ে দেশ ত্যাগ করেন। মাঝপথে যে কাহিনী তা হলো ফাইল পাওয়া না যাওয়া এবং ফাইল পেয়ে পোটাপ দেয়ার পর তদন্তের চিঠি দিয়ে সময় ক্ষেপন করা। তবে জরিমানার সকল টাকা পরিশোধের পর কেন ঐ তদন্ত প্রয়োজন তার জবাব দেয়া জরুরী। যদি তদন্ত হয় তাহলে নির্ধারিত তারিখের পুর্বেই তদন্ত শেষ করে ভিসা দেয়ার ব্যবস্থা করার ব্যবস্থা করা হউক।

যদি তদন্তই হয় তাহলে কেন সকলের ক্ষেত্রে এই আইন প্রয়োগ করা হয়নি। যারা উপরি পরিশোধ করে তাদের কোন তদন্ত হয়নি এবং যারা উপরি পরিশোধ করে না তাদের তদন্ত হয়। এই বৈষম্য দুরীকরণের জন্য আশু পদক্ষেপ নেয়া জরুরী। প্রয়োজনে সকল অনিয়মের প্রমান দিয়ে সহায়তা করব। আশা করি আমাদের দেশ ও সরকার এর উপর কোনপ্রকাশ দুর্নাম আসুক তা আমরা কেউই কামনা করিনা। এমনকি নিজস্ব অফিস ব্যবস্থাপনায়ও এই দুর্নাম ঘুচানোর কাজে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান প্রধানগন আরো সচেতন হয়ে স্ব স্ব ক্ষেত্রে সুনাম অর্জনে কাজ করে যাবেন। এই বিষয়ে যদি কোন প্রকার সহযোগীতা প্রয়োজন হয় তাহলে আমরা শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে সহযোগীতা করার জন্য প্রস্তুত। আমরা চাই আমাদের সরকার ও অফিস আদালতের মর্যার্দা বৃদ্দি এবং দেশ ও বিদেশে এই সুনাম উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাক।

Leave a Reply

Your email address will not be published.