কিছু মোড়ল দেশ বাংলাদেশে তাদের তাঁবেদার সরকার চায়ঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বাআ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে কিছু মোড়ল দেশ এখানে (বাংলাদেশে) এমন সরকার চায় যারা তাদের পদলেহন করবে। এরা যাদের বন্ধু হয় তাদের আর শত্রু লাগে না। ইউক্রেন বন্ধু হয়েছিল তাদের আজ কী অবস্থা।”

গত বুধবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগের জাতীয় শোক দিবসের এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর দিকে ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, “গণতন্ত্রের লেবাসধারী কয়েকটি দেশ আছে, তারা খালি গণতন্ত্র খুঁজে বেড়ায়। অথচ আইন করে আমরা স্বাধীন নির্বাচন কমিশন করেছি। ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য রক্ত দিয়েছে আওয়ামী লীগ, আজ আমাদের শুনতে হয় ভোটের অধিকারের কথা।”

পশ্চিমা বিশ্বের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, “তারা মানবাধিকার, গুম-খুনের কথা বলে। আমার বাবা-মায়ের খুনি রাশেদ আমেরিকায়। বারবার অনুরোধ করি। খুনিকে কেন তারা লালন-পালন করে। আরেকজন নুর। আছে কানাডায়। ফেরত দেয় না। ডালিম, রাশেদ, পাকিস্থানে। মুসলেম উদ্দিনের খোঁজ পাওয়া যায় না। বাকি যাদের পাওয়া গেছে ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।”

১৫ আগস্ট হত্যাকান্ডের বিষয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, “১৫ আগস্ট হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল খুনি মোশতাক এবং তার দোসর মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত না থাকলে, মোশতাক কখনোই এটা করতে সাহস পেত না। করতে পারত না। খুনি জিয়া যে জড়িত ছিল এটা সম্পূর্ণভাবে প্রমাণিত।”

শেখ হাসিনা বলেন, “১৫ আগস্টের খুনিদের বিচার করা হবে না এই অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছিল। সে খুনিদের শুধু বিচার থেকে রেহাই দেওয়া হয়নি, তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছিল। খুনিদের দূতাবাসের চাকরি দেওয়া হয়। এই খুনিরা যখন দূতাবাসের চাকরি পায়, অনেক দেশ নেয়নি। এই হত্যাকান্ড মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের প্রতিশোধ নেওয়া হয়েছিল।”

সরকারপ্রধান বলেন, “যেভাবে জিয়াউর রহমান জাতির পিতাকে হত্যা করেছিল, জিয়াকেও একইভাবে খুন হতে হয়েছিল। তার লাশের কিন্তু খবর নাই। সংসদ ভবনে সেখানে যে কবরটা দেওয়া আছে, সেখানে জিয়াউর রহমানের কোন লাশ নাই। জেনারেল এরশাদ কিন্তু এই কথাটা বলে গেছে। বলেছিল তার লাশ তো পাওয়া যায়নি। কারণ জিয়ার লাশ খালেদা জিয়া দেখে নাই। জিয়ার লাশ তার ছেলে তারেক রহমান দখে নাই। কোকো দেখে নাই, তার পরিবার-পরিজন আত্মীয়-স্বজন কেউ দেখে নাই। জেনারেল এরশাদ একটি বাক্স এনে জনগণকে ধোকা দিয়ে সংসদ ভবনের জায়গায় মাটি দিয়ে রেখে দিয়েছে। সেটাও অবৈধ স্থাপনা। বিএনপি নেতাকর্মীরা সেখানে ফুল দেয়। কাকে দিচ্ছে ফুল তারা কি সেটা জানে? জানে না।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা যখন ১৫ আগস্টে শোক দিবস পালন করি, আমাদের চেনা-পরিচিত অনেকেই ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন করে না। এদিনে কতগুলো মানুষকে হত্যা করেছে, বিএনপি ১৯৯১ সালে জামায়াতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ক্ষমতা আসার পরে শুনলাম খালেদা জিয়ার জন্মদিন ১৫ আগস্ট। কত বড় বেইমান, অমানবিক হলে পরে যেদিন সারাদেশে মানুষ শোক পালন করে আর সেই দিনটাকে সে জন্মদিনের হিসেবে পালন করে।”

সরকারপ্রধান বলেন, “খালেদা জিয়ার বিয়ের সময় তার জন্মতারিখ ১৫ আগস্ট ছিল না। খালেদা জিয়া মেট্রিক পরীক্ষা দিয়েছিল, যদিও সে ফেল করেছে, সেখানেও তার জন্ম তারিখ ১৫ আগস্ট নয়। একটা মানুষ কতটা অমানবিক হলে পরে শোক দিবসে জন্মদিন পালন করে।”

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল, ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ফজলে নূর তাপস, উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.