সিএসডিতে সেবার বৈচিত্র

প্রশান্তি ডেক্স ॥ মানুষের জন্য মানুষ এবং দেশের সকল মানুষই একই শ্রেণীভুক্ত যা আশরাফুল মাখলুকাত খ্যাতি সম্পন্ন। আর সৃষ্টিকর্তার দৃষ্টিতে মানুষ সকলই সমান এবং একই ভাবে সকলেরই আগমন ও প্রস্থান। এই আগমনে এবং প্রস্থানে কোন ভেদাভেদ নেই। তবে মাঝখানের জীবনে বিভিন্ন জাতি, গোষ্টী, বর্ণ এবং কর্মতে ভেদাভেদ রয়েছে। আর এই সকল ভেদাভেদের কারণে সৃষ্টি হচ্ছে জটিলতা এমনকি বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য। আর এতে পূর্ন হচ্ছে পাপের পসরা। সৃষ্টি হচ্ছে নি:সঙ্গতা এবং উঁচু-নীচু ভেদাভেদ আর সমাজে ধরেছে ফাঁটল, বিভেদ এবং হানাহানি ও মারামারি। এতেও আবার সমমনা এবং সমগোত্রীয় এমনকি উুঁচু-নীচু ভেদাভেদের আশ্রয় এবং প্রশ্রয় পরিলক্ষিত হয়।

এতক্ষনের আলোচনা শুধু সার্বজনীন দৃষ্টিভঙ্গিতে কিন্তু এখন একটি বিষয় স্পষ্ট করে বলছি। সামররিক এবং বেসামরিক তকমাবেষ্টিত সমাজ ব্যবস্থা নিয়ে। পাকিস্থান আমলের উৎপাদিত শব্দ সিভিলিয়ান আজও বহাল তবিয়তে দৃন্ডায়মান। বিশেষ করে ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় প্রবেশ অথবা যাতায়তের প্রয়োজনে ঐসকল রোড ব্যবহারের সময় নানাবিধ জটিলতায় এই সিভিলিয়ান শব্দটির ব্যবহার প্রচলিত রয়েছে। যাতে সমাজ ও সংস্কৃতি থেকে আলাদা একটি সভ্য জাতি, গোষ্ঠি ও বর্ণ এই সমাজে বসবাস করছে। যাদের কর্মজীবন এবং অবসর জীবন দুটোই এখন সামরিক কেন্দ্রীক। তারা এই সমাজের এবং তাদের ভাষায় উচ্চারিত শব্দ সিভিলিয়ান এর ঘর থেকে আগত বা সিভিলিয়ানরাই তাদের ভিত্তিমূল এই কথাটি ভুলে গেছেন। তারা এখন অন্ধকারের মাঝে আলো হিসেবে নতুন উদ্ভাবিত এক নব্য সমাজ ব্যবস্থার আবরণে বসবাস করছেন এবং করতে চাচ্ছেন। যা সম্পূর্ণ ই পারস্পরিক সাম্য ভার্তৃত্ববোধ এর বন্ধনমুক্ত। আমার খুবই দু:খ হয় ঐ সকল পুরা কপালের সন্তান, পিতা, ভাই, বন্ধু, আত্মীয়দের জন্য। তাদের অবসরের পরও যেন তারা নিজেদেরকে ঐ ক্ষমতার মহারথি ভেবে সকল কিছু আলাদাভাবে পরিচালিত করতে চান।

একটি ঘটনা যা অদ্য ১১.৩৫ মিনিটে বারিধারা সিএসডিতে অনাকাংখিতভাবে ঘটল… তা হলো এই “আমি সিএসডিতে জরুরী প্রয়োজনে কিছু কেনাকাটা করে বিল পরিশোধ করতে যাই। সেইখানে মোট তিনটি কাউন্টার এবং দুটিতে ভীর আর একটিতে একজন দাড়িয়ে। সেই সুবাধে আমি ঐ একজনের পিছনে দাড়িয়ে অপেক্ষা করি এবং আমার বিলও পরিশোধ করি। বিল পরিশোধ করে ফেরার সময় একজন ভদ্রলোক এসে ঐ কাউন্টার এর বিল কালেক্টরকে জিজ্ঞাসা করে এটা কি সামরিক; তখন ঐ কাউন্টার এর দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি বলে জি; তাহলে তিনি জিজ্ঞাসা করেন কেন তাহলে ঐ বাইরের লোকদের তুমি বিল করলে এবং ঐ বিলবয়কে যাচ্চেতাই গালি ও ধমক দিয়ে শাষাচ্ছে। আমি অসহায়ের মত দেখলাম এবং শুনলাম। এটা কি? এটা কি কোন সভ্য সমাজের এমনকি কোন মানুষের পক্ষ্যে বলা সম্ভব? আমি কিছু বলতে গিয়েও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে কাউন্টার ত্যাগ করে ফিরে আসি; আর ভাবি এই সমাজের যদি এতই সামরিক হওয়ার খায়েশ ; তাহলে তারা কেন এই লোকালয়ে বা জনগণের সম্পদের উপর বসবাস করছে? কেন তারা ভিন্ন কোন গ্রহে পারি দিচ্ছে না?

আমার প্রশ্ন হলো যদি তারা সামরিকই হবে কেন এই বারিধারাতে বেসামরিক বা বাইরের লোকদের বসবাসের সুযোগ দিল? কেন বাসা ভাড়া দিল এমনকি সিএসডিতে কেনাকাটার সুযোগ দিল? এখানে যারা বসবাস করে তারা বেশিরভাগই বাইরের লোক এবং ঐ বাইরের লোকদের উপার্জন দিয়েই এই সামরিক লোকদের জিবিকা নির্বাহ হচ্ছে। যা আগেও হয়েছিল এবং এখনও হচ্ছে। তাদের বাগাড়ম্বর কোথায়? তাই এই মনমানসিকতার পরিবর্তন আবশ্যক। নতুবা জাতি একদিন এই মানসিকতার জন্য তাদেরকে অভিষাপ দিবে অথবা বড় ধরণের কোন গণজোয়ারে ভাসিয়ে দিয়ে এই মানষিকতার অবসান ঘটাবে।

আমি কাউকে কষ্ট বা ছোট এমনকি বিচারের কাঠগড়াই দাঁড় করাতে চাই না বরং চাই এর অবসানকল্পে মন-মানসিকতায় এমনকি হৃদয়ের গভিরে ক্ষত সৃষ্টি  করাতে যাতে বিভেক ও জ্ঞান চেতনায় ফিরে এসে কায্যে পরিণত হয়। সমাজ থেকে থেকে জজ্ঞাল দুর হয় এবং সকলের সাম্য সহবস্থান কায়েম হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.