প্রশান্তি ডেক্স ॥ কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল বাস্তবায়নে অসংখ্য নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে। এমনকি টানা চার মাস কাজ বন্ধও রাখতে হয়েছিল। পরে বিদেশি বিশেষজ্ঞ দল এনে জটিলতা নিরসন করে এগিয়ে নিতে হয়েছে টানেলের কাজ। ছোট ছোট এমন হাজারও প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে শুধুমাত্র আন্তরিকতা ও উদ্যমের কারণেই নির্ধারিত সময়েই সম্ভব হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম সুড়ঙ্গ সড়কের সফল বাস্তবায়ন। আজ এই বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমান টানেল উদ্ভোধন করলেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
হারুন উর রশিদ বলেন, ‘টানেল প্রকল্পের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমি প্রকল্প কর্মকর্তা হিসেবে যুক্ত ছিলাম এখনও আছি। আমার ৪৪ বছর চাকরি জীবনের দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় বলে প্রত্যেকটি প্রকল্পের কমন কিছু সমস্যা থাকে। আমাদের দেশের জন্য সেটা হচ্ছে ভূমি অধিগ্রহণ সমস্যা। ভূমি অধিগ্রহণ একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এখানে ভূমি অধিগ্রহণ সমস্যাটা অন্যভাবে অনুভব করেছি। এটা একটি জি টু জি প্রজেক্ট। চীনের এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয় তখন একটা ধারা ছিল প্রকল্পের কাজ শুরু করার আগেই প্রকল্পে যা জমি দরকার হবে সবই তাদেরকে সম্পূর্ণভাবে হস্তান্তর করতে হবে। যেটা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সম্ভব নয়। পরে এক্সিম ব্যাংকে আমরা বিষয়টি বুঝিয়ে এ সমস্যা সমাধান করেছি।’
এই প্রকৌশলী বলেন, ‘এর আগে বাংলাদেশের প্রকৌশলীরা টানেলের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন না। দেশের বাইরে যারা গিয়েছেন তারা শুধু টানেল দেখেছেন কিংবা ভেতর দিয়ে গেছেন। টানেলের নির্মাণ কৌশল সম্পর্কে অবগত ছিলাম না। আমাদের দেশের মাটির যে ধরন তাতে টানেল করা খুবই চ্যালেঞ্জিং। যেহেতু নরম মাটি। তবে শক্ত মাটিতে টানেল করা খুবই সহজ। এটা যেহেতু আমাদের প্রকৌশলীদের জন্য নতুন। আমরা দেখে দেখে শিখেছি। এখানে বিদেশি বিশেষজ্ঞরাও ছিলেন। তাদের সহায়তা নিয়ে আমরা বিভিন্ন সমস্যা অতিক্রম করেছি।’
তিনি বলেন, ‘টানেলের যখন উত্তর টিউবের খনন কাজ শুরু হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন করেছিলেন। টানেলের খনন কাজ যখন শুরু করি তখন পাঁচ শতাংশ যাওয়ার পর বিশেষজ্ঞ দল এবং আমরা একটা বিষয় অনুভব করি। খননের বোরিং মেশিন মাটির নিচের দিকে যাওয়ার পরিবর্তে ওপরের দিকে উঠতে শুরু করে। এ কারণে চার মাসের মতো কাজ বন্ধ ছিল। মাটি নরম হওয়ার কারণে এটি হচ্ছে। শক্ত মাটি হলে এটা হতো না। পরে বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ দল আসার পর এ সমস্যার সমাধান করেছি।’
এইভাবে অসংখ্য সমস্যা সমাধান করে আজ জাতির জন্য উন্মুক্ত হলো বঙ্গবন্ধু টানেল। যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে যাত্রা শুরু করল। আজ সকাল ১০টায় নগরীর পতেঙ্গা প্রান্তে টানেলের নামফলক উন্মোচন করেন এরপর টানেলের আনোয়ারা প্রান্তে কাফকো কলোনি সংলগ্ন কেইপিজেড মাঠে জনসভায় বক্তব্য দেন। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এ জনসভার আয়োজন করা হয়েছে।