কসবায় সবজি চাষে দুই বন্ধুর সবুজ বিপ্লব

ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ কসবা উপজেলায় দুই বন্ধু এমদাদুল হক ও কবির আহমদ। এক যুগের প্রবাস জীবন শেষে ২০১২ সালে ফেরেন দেশে। যৌথ উদ্যোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কসবায় তারা গড়ে তুলেন কৃষি খামার ‘বিজনা এগ্রো ফার্ম’। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আগাম জাতের সবজি চাষে সাফল্য পেয়েছেন। সফল উদ্যোক্তা হিসাবে মেলে ধরেছেন নিজেদের। ৫০ বিঘার খামার থেকে এখন বছরে কোটি টাকা আয় করছেন দুই বন্ধু।

সরজমিন কসবায় বিছনা নদীর পাড়ে বিজনা এগ্রো ফার্মের অন্তত ৫০ নারী-পুরুষকে কাজ করতে দেখা যায়। এখানে দেশি-বিদেশি উন্নত জাতের আগাম টমেটো, শসা, করলা সহ ঋতুভিত্তিক সব ধরনের শাকসবজি চাষ হচ্ছে। আগাম জাতের তরমুজ চাষেও ভালো ফলন এসেছে। চলতি বছর খামারের ৩৫ বিঘা জমিতে চাষ করছেন শীতকালীন আগাম জাতের টমেটো। প্রায় ৬ বিঘা জমিতে।

চলছে কাঁচা মরিচ রোপন । শ্রমিকরা জানান, বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা এসে খামার থেকে প্রতি কেজি টমেটো পাইকারি ৮০-৯০ টাকা দরে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

বিজনা এগারো ফার্মের মালিক এমদাদুল হক ও কবির আহমেদ জানান , উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে টিঘরিয়ায় বিছনা নদীর পাশে ১৫ বিঘা কৃষি জমি লিজ নিয়ে কৃষি খামার করেন। দুই বন্ধুর বিনিয়োগ ছিল ১৩ লাখ টাকা। প্রথম দুই বৎসর লাভ হয়নি। তবে তৃতীয় বছর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সব সময় আগাম জাতের শাকসবজি চাষ করেন। বর্তমানে টমেটো বেশি করা হচ্ছে। বিশ্বাস, সততা ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে দুই বন্ধু এখন এলাকার সবচেয়ে বড় কৃষি উদ্যোক্তা। সরকারের সহযোগিতা পেলে দুই বিঘা জমিতে গ্রীনহাউজ করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তারা। লব্ধ গান ও আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে কৃষিকে নতুন উচ্চতায় নেওয়ার চেষ্টায় বিভোর এমদাদ ও কবির প্রতিমাসে শ্রমিকদের বেতন দিচ্ছেন প্রায় ৬ লাখ টাকা। পাশাপাশি আগ্রহী যুবকদের ও উৎসাহ দিচ্ছেন কৃষিকাজ করে বেকারত্ব দূর করার।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজেরা বেগম জানান, উচ্চমূল্যের কৃষি জাত ফসল চাষবাদ করে সফলতা পেয়েছেন প্রবাসী ফেরত দুই বন্ধু এমদাদ ও কবির।

তারা গ্রীষ্ম ও শীতকালীন ফসল চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। তাদের মত বেকার যুবকরা কৃষিকাজে মনোযোগী হলে উৎপাদিত কৃষি পূর্ণ দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.