প্রশান্তি ডেক্স ॥ দেশে বর্তমানে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২২ হাজার ১৭৪টি। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বর্তমান সরকারের সময় গত ১৫ বছরে নতুন করে এমপিওভুক্ত হয়েছে ৬ হাজার ৮০৭টি। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা।
এমপিওভুক্ত হওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা মাসে বেতনের মূল অংশ ও কিছু ভাতা সরকার থেকে পেয়ে থাকেন। এমপিওভুক্তির এ সিদ্ধান্ত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখছে এবং দীর্ঘ মেয়াদের শিক্ষার মানোন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, ‘এমপিওভুক্ত করা মানে শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তা দেওয়া। সে কারণেই এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা পেশায় মনোযোগী হবেন। এতে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার মানোনয়নে ভূমিকা রাখছে, এবং দীর্ঘ মেয়াদে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে এসব প্রতিষ্ঠানগুলো ভূমিকা রাখবে।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হবে কিনা জানতে চাইলে অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসলে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ধারাবাহিকতা থাকবে। এতে শিক্ষার মানোন্নয়ন হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে মোট ২২ হাজার ১৭৪টি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসা।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালার আলোকে বর্তমান সরকার ২০০৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত সময়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের আওতাধীন ৫ হাজার ৯৭টি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করেছে। নতুন এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রতি মাসে বরাদ্দ দিচ্ছে সরকার।
২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮০ হাজার ৮০৬ জন, বেসরকারি কলেজের ১৭ হাজার ৪৫৮ জন অর্থাৎ সর্বমোট ৯৭ হাজার ৮৬৪ জন শিক্ষক কর্মচারীকে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। এতে শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে।
২০০৯ সালে ৭৫২টি এবং ২০২৩ সালে ২৫১০টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অধীনে স্কুল-কলেজ এমপিওভুক্তি বৃদ্ধির হার ২৩৪ শতাংশ।
২০০৯ সালে ১২ হাজার ৪৭০টি এবং ২০২৩ সালে ১৫ হাজার ৯৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। এতে বৃদ্ধির হার ২১ শতাংশ। তাছাড়া ২০০৯ সালে ৩৮৬টি এবং ২০২৩ সালে ৬১২টি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ২০০৯ সালে ৭৬৮টি, ২০২৩ সালে ১১৪৭টি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ, ২০০৯ সালে ৯৬৪টি, ২০২৩ সালে ১০৬৯টি ডিগ্রি কলেজ এমপিওভুক্ত করা হয়েছে।
২০০৯ সালে মোট এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান ছিল ১৫ হাজার ৩৪০টি। আর ২০২৩ সালে মোট এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান ২০ হাজার ৪৩৭টি। এতে স্কুল ও কলেজ মোট হয়েছে ৫ হাজার ৯৭টি। স্কুল ও কলেজ মোট বৃদ্ধির হার ৩৩ শতাংশ।
এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীন ১ হাজার ৭১০টি কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নতুন করে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে।
বর্তমান সরকার পরবর্তীতে ক্ষমতায় আসলে এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হবে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে যোগ্য সব প্রতিষ্ঠানকে পর্যায়ক্রমে এমপিওভুক্ত করা হবে।