সংঘাত বাড়াতে চায় না ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ?

প্রশান্তি ডেক্স ॥ গাজায় আর সংঘাত বিস্তৃত করতে চায় না লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। হামাস নেতা নিহত হওয়ার পর এক যৌথ বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। 

বুধবার বৈরুতে দেওয়া এক বক্তৃতায়, হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ বলেন, হামাসের উপ প্রধান হত্যার পর আমরা চুপ থাকতে পারি না। তিনি বলেন, তার সশস্ত্র বাহিনী শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে যদি ইসরায়েল লেবাননে যুদ্ধ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তবে তিনি হামাসের সমর্থন নিয়ে ইসরায়েলের বিপক্ষে কোনও মন্তব্য করেননি।

ইসরায়েল আরৌরিকে হত্যার বিষয়টি অস্বীকার না করলেও হামাসকে নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের আকস্মিক হামলায় ১২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন এবং ২৪০ জনকে জিম্মি করা হয়েছে। 

এদিকে ফিলিস্তিনি আগ্রাসনে ইসরায়েলে মোট ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর সংখ্যা ২২ হাজার ৩১৩তে পৌঁছেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে এই সংখ্যা গাজার ২৩ লাখ জনগণের শতকরা ১ ভাগ। 

ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র, রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি, হিজবুল্লাহর সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার জন্য ইসরায়েল কী প্রস্তুতি নিচ্ছে জানতে চাইলে বলেন, আপনি এইমাত্র যা বলেছেন আমি তার প্রতিক্রিয়া জানাব না। আমরা হামাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দিকে মনোনিবেশ করছি।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি, নাসরাল্লাহর বক্তৃতা সম্পর্কে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের বলেন, হামাসের সাহায্য ও সহায়তার জন্য হিজবুল্লাহকে আমরা কখনও ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখিনি।

আরেক মার্কিন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বলেন, হিজবুল্লাহ বা ইসরায়েল কেউই যুদ্ধ চায় না। তিনি বলেন, আমরা যা কিছু বলতে পারি তা থেকে হিজবুল্লাহর ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে যাওয়ার কোনও ইচ্ছা নেই। তিনি আরও বলেন, মার্কিন কূটনৈতিক দূত আমোস হোচস্টেইনও ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে উত্তেজনা প্রশমিত করার জন্য ইসরায়েল সফর করবেন।

গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে হিজবুল্লাহ লেবাননের দক্ষিণ সীমান্ত জুড়ে ইসরায়েলের সঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। বুধবার, দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় স্থানীয় হিজবুল্লাহ কর্মকর্তা এবং অন্য তিন সদস্য নিহত হয়েছেন।

লেবাননে ১২০ জনেরও বেশি হিজবুল্লাহ এবং দুই ডজনেরর মতো বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে, পাশাপাশি ইসরায়েলে অন্তত নয়জন ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন।

নাসরাল্লাহ বলেছেন, ইসরায়েল লেবাননের বিরুদ্ধে পূর্ণ যুদ্ধ শুরু করলে হিজবুল্লাহর লড়াইয়ের কোনও নিয়ম থাকবে না। আরৌরির মৃত্যুর পর ইসরায়েলের শীর্ষ ইসলামি শত্রুদের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকা থেকে একটি বড় নাম মুছে গিয়েছে।  

৫৭ বছর বয়সী সালেহ আল-আরৌরি ছিলেন ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর উপপ্রধান এবং গ্রুপটির সশস্ত্র শাখা কাসাম ব্রিগেডের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৮৭ সালে হামাসে যোগ দেন। ইসরায়েলি কারাগারে ১৫ বছর কাটানোর পর লেবাননে দীর্ঘদিন ধরে নির্বাসিত জীবনযাপন করছিলেন আরৌরি।

৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

Leave a Reply

Your email address will not be published.