প্রশান্তি ডেক্স ॥ সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্তে সময় দিতে হবে, ৫০ বছর লাগলেও দিতে হবে। গত বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
গত শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে এর ব্যাখ্যা দেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, ‘এটা তো বিতর্কের প্রশ্ন নয়, আমার দুঃখ হয় আপনার এটাকে অন্যভাবে নেন। ব্যাপারটা হচ্ছে, আমি বলেছি, যারা সত্যিকারের এ অপরাধটা করেছে, তাদের শনাক্ত করার জন্য সব রকম চেষ্টা করেও যদি সময় লাগে, আপেক্ষিকভাবে আমি বলেছি, যারা এই খুনটা করেছে, তাদের ধরতে যদি ৫০ বছরও সময় লাগে, তাদের আমরা ধরবো। এই কথার ওপর ভিত্তি করে আপনারা মনে করেছেন যে সত্যি ৫০ বছর লাগবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার কথা হচ্ছে সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত আসল অপরাধীকে ধরার জন্য। আমাদের আইনি কাঠামোতে বলা হয়, যে অপরাধী নয়, তাকে হয়রানি করা যাবে না। প্রকৃত অপরাধীকেই ধরতে হবে। সেই কারণেই আমি এই কথাটা বলেছি। আর আপনারা গেলেন খেপে। আমি তো বুঝলাম না, আপনাদের জন্য ভালো কথা বললেও আপনারা খেপেন কেন?’
সাগর রুনির মামাল তদন্তে ধীরগতি হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীতে এমন অনেক মামলা আছে যে কারণে আমি এই সময়ের কথাটা বলেছি। যুক্তরাজ্যে ৪২ বছর পর আসামিদের ধরতে পেরেছে। কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রে ২৪ বছর পর খুনের মামলার রহস্য উদঘাটিত হয়েছে।’
আনিসুল হক বলেন, ‘এ মামলা নিয়ে পুলিশ চেষ্টা করছে। তাদের তদন্ত চলছে এবং তারা প্রকৃত অপরাধীকে এখনও ধরতে পারেনি। সে জন্যই তদন্তে সময় লাগছে। আপনারা কি চান এ তদন্ত বন্ধ হয়ে যাক? আমি এ কারণেই বলেছি এই মামলায় যতক্ষণ পর্যন্ত অপরাধীকে ধরা না হবে, তত দিন পর্যন্ত চলবে।’
গত ২৩ জানুয়ারি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার তারিখ ১০৫ বারের মতো পিছিয়েছে। পরবর্তী তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করেছেন আদালত।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনিকে হত্যা করা হয়। এরপর নিহত রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
প্রথমে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন ওই থানার এক উপপরিদর্শক (এসআই)। চার দিন পর চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। দুই মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করে রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ হয় ডিবি।
একই বছরের ১৮ এপ্রিল হত্যা মামলাটির তদন্তভার র্যাবের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশে দেন হাইকোর্ট। এরপর থেকে একের পর এক তারিখ বাড়ানো হলেও তদন্ত শেষ করতে পারেনি সংস্থাটি।