প্রশান্তি ডেক্স॥ ইউনাইটেড মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে খতনা করাতে গিয়ে শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় ডিবিতে তার বাবার আবেদন ও খতনা করাতে দুই শিশুর মৃত্যুর বিষয়ে গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশীদ বলেছেন, যারা এই ঘটনায় জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
গত রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আমরা বিষয়টি জেনেছি। থানাগুলোতে মামলা হয়েছে। ডিবি পুলিশ ছায়াতদন্ত করছে। বাবা-মায়ের কোল থেকে এভাবে শিশু হারিয়ে যাবে, এটা কোনোভাবেই মানা যায় না।’
তিনি বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আগে এলাকায় কোনও ধরনের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ছাড়াই খতনা করানো হতো। কিন্তু এখন কথিত কিছু অবৈধ ভুয়া ক্লিনিকে ছোট ছোট শিশুদের খতনার নামে অ্যানেস্থেসিয়া দিয়ে অজ্ঞান করা হচ্ছে। কিন্তু পরে আর জ্ঞান ফিরছে না। এমনকি এসব ক্লিনিকের অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার অনুমোদনও নেই।’
আয়ানের বাবাকে হুমকির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আয়ানের বাবা ডিবিতে আবেদন করলে আমরা মামলা তদন্ত করবো। প্রতিষ্ঠান অনেক বড়। তিনি সাধারণ মানুষ, প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লড়াই করে পারবেন না। তবে আমরা তার পাশে আছি। হাসপাতালটির অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার অনুমোদন ছিল না। তারপরও তারা অ্যানেস্থেসিয়া দিয়েছে। শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনার দায় তারা এড়াতে পারে না।’
এর আগে এদিন দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে লিখিত অভিযোগ দেন শিশু আয়ানের বাবা শামীম আহমেদ। এ সময় শামীম আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইউনাইটেড হাসপাতালের বিরুদ্ধে মামলা করায় আমাকে হত্যার ভয় দেখানো হচ্ছে। এই ঘটনায় আমি শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি। ঘটনায় জড়িতদের কেউ ধরতে পারছে না। অথচ রামপুরার জে এস হাসপাতালে যে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটলো সঙ্গে সঙ্গে দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অথচ এই ঘটনার দুই মাস হলেও গ্রেফতার করা হচ্ছে না।’
ঘটনার দিনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘খতনা করাতে ২০ থেকে ২৫ মিনিট লাগার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সেটা দুই ঘণ্টায়ও শেষ হয়নি। মূলত আমার ছেলেকে খতনা করানোর নামে ইন্টার্ন শিক্ষার্থীদের ক্লাস করানো হয়েছে। এই ক্লাস করাতে গিয়ে অতিরিক্ত অ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগ ও রক্তক্ষরণে আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। এক ঘণ্টার একটা ক্লাসের বলি হতে হলো আমার ছেলে আয়ানকে। এই ঘটনায় জড়িত দুই চিকিৎসকসহ হাসপাতালের ৮ জনের বিরুদ্ধে আমি ডিবিতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তাদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছি।’