প্রশান্তি ডেক্স ॥ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আজ ভারতের সবচেয়ে বড় পণ্য হলো আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা। এটা বর্জন করলেই শেষ। বর্জন করার তো করছেই, এখন এটাকে তাড়ানো যায় কিনা। তাহলেই তো শেষ। এই একটা পণ্য বর্জন করলেই তো জাতির মুক্ত হওয়া সম্পন্ন। অন্য পণ্য বর্জন করার প্রয়োজন হয় না আমাদের।
গত শুক্রবার (২৮ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ জিয়াউর রহমানের ভূমিকা ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভার আয়োজন করে ‘অন্তরে মম শহীদ জিয়া’ নামের সংগঠন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ওবায়দুল কাদের বলেছেন সারা গণতান্ত্রিক দেশের লোক আমাদের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল, ভারত যদি পাশে না থাকতো, তাহলে আমরা এই ৭ তারিখের আমি, ডামি, স্বামী, নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারতাম না। এজন্যই এই ঝামেলার শুরু হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, জিয়াউর রহমান যদি স্বাধীনতার পাঠক হন, তাহলে লেখক কোথায়? সেই কাগজটি কোথায়? জিয়াউর রহমানকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আমাদের (বিএনপি) কোনও প্রচেষ্টার প্রয়োজন নেই। জিয়াউর রহমান নিজেই নিজের কর্মগুণে প্রতিষ্ঠিত জাতির অন্তরে, ইতিহাসে। জিয়াউর রহমানকে ছাড়া বাংলাদেশের ইতিহাস লেখা কখনোই সম্ভব নয়। আজকের ইতিহাস কখনোই পরিপূর্ণ ইতিহাস নয়।
তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমানের ছবি পাহারা দেওয়ার জন্য পুলিশ-র্যাবের প্রয়োজন হয় না। কারণ তার ছবি মানুষের অন্তরে আঁকা। অন্তরের ছবি কখনও ফ্যাকাসে হয় না। সুতরাং সেই ছবি কারও পক্ষে ছেড়া সম্ভব না।
জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে আপত্তি নেই জানিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, তিনি (শেখ মুজিবুর রহমান) তখন বলেছেন, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। আমি কথাটার সঙ্গে এখনও একমত। কারণ, আমাদের মুক্তি-স্বাধীনতার সংগ্রাম এখনও শেষ হয়নি। আমরা সেই মুক্তির সংগ্রাম এখনও করছি। আমরা মুক্ত নই। খালেদা জিয়া বন্দি আছেন, শুধু তাকে নয়, পুরো দেশ-জাতিকে আমরা মুক্ত করতে চাই একটি রাহুর গ্রাসের কবল থেকে। আমরা যে স্বপ্ন দেখে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি, সেই সংগ্রামটি শেষ হয়নি কেন? অর্থাৎ, আকাঙ্খিত স্বাধীনতা এখনও আমাদের আয়ত্তে আসেনি।
ভারতের প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন ১০ হাজার মানুষ ভারতের ভিসার জন্য আবেদন করে। ভিসার জমা ফি বাবদ ৮০০ টাকা করে জমা দিতে হয়। অর্থাৎ প্রতিদিন ৮০ লক্ষ টাকা। এটা ভিসা পেলেও ৮০০ টাকা দিতে হবে, না পেলেও দিতে হবে। মাসে ২ কোটি ২৪ লাখ টাকা বাংলাদেশ থেকে ভিসা ফি বাবদ ভারত আমাদের দেশ থেকে আয় করে। তাহলে বছরে কত কোটি টাকা?
গয়েশ্বর আরও বলেন, শুধু কি এটা। এরপর বর্ডার ক্রস করলে (ভারতে গেলে) দৈনিক কমপক্ষে ৫ হাজার টাকা খরচ হয়। ৭ দিন থাকলে ৩৫ হাজার টাকা খরচ। আসার সময় ৫০ হাজার টাকার বাজার খরচ। এরপর ওষুধ…. হোটেল খরচ। আর পণ্য বর্জন কী? বাংলাদেশের মানুষ যদি বলে কাল থেকে ভারতে যাব না, তাদের অর্থনীতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে একবার ভেবে দেখুন।
অন্তরে মম শহীদ জিয়ার উপদেষ্টা ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাছের মো. রহমতুল্লাহ, অ্যাডভোকেট রফিক সিকদার, জাতীয়তাবাদী তাঁতি দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।