প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স ॥ ভারতের ১৮তম লোকসভা ভোটের কাউন্টডাউন শুরু। গত শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল থেকেই দেশের অপর রাজ্যগুলোর মতো শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ। এদিন উত্তরবঙ্গের ৩ আসন- কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়িতে ভোট গ্রহণ করা হয়।
লোকসভার ৫৪৩টি আসনে এবার নির্বাচন হচ্ছে সাত দফায়। গত শুক্রবার প্রথম দফায় ২১টি রাজ্যের মোট ১০২ আসনে ভোট হয়।
ভোটগ্রহণের সময় সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা। রাজ্যের এই তিন আসনে প্রতিদ্বন্ধিতায় আছেন মোট ৩৭ জন প্রার্থী। কোচবিহার আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৬৬ হাজার ৮৯৩ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ৯ লাখ ৫১ হাজার ৯৯৬ জন। পুরুষ ভোটার ১০ লাখ ১৪ হাজার ৮৬৪ জন। তৃতীয় লিঙ্গ ৩৩ জন। এই আসনে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন মোট ১৪ জন প্রার্থী।
আলিপুরদুয়ার আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ১৭ লাখ ৭২ হাজার ৮৭৭ জন। এই আসনে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ১১। জলপাইগুড়ি আসনে মোট ভোটার ১৮ লাখ ৮৫ হাজার ৯৫০ জন। এই কেন্দ্রে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ১২।
প্রথম দফায় মোট ৫ হাজার ৮১৪ বুথের মধ্যে মোট স্পর্শকাতর ৭৪৬টি। এরমধ্যে কোচবিহার লোকসভা আসনে মোট বুথ ২ হাজার ৪৩, স্পর্শকাতর বুথ ১৯৬। আলিপুরদুয়ার লোকসভা আসনে মোট বুথ ১ হাজার ৮৬৭। তারমধ্যে স্পর্শকাতর বুথ ১৫৯। জলপাইগুড়ি আসনে মোট বুথ ১৯০৪। তারমধ্যে স্পর্শকাতর বুথ ৩৯১।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোট ১১২ কোম্পানি মোতায়েন করা হয়েছে। সব বুথেই থাকছেন ৬ জন করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। বুথের বাইরে থাকছে রাজ্য পুলিশের বিশেষ টিম।
মুখ্য নির্বাচনি কর্মকর্তার দফতর সূত্রের জানা গেছে, ১৯৮৬ ব্যাচের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অনিল অলোক সিনহাকে বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসেবে পাঠানো হচ্ছে। আর ১৯৮৪ ব্যাচের অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস কর্মকর্তা অনিল কুমার শর্মাকে বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক করা হয়েছে। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, নির্বাচনের পরেও এই তিন আসনে বাহিনী মোতায়েন থাকবে।
কমিশন সূত্রে খবর, ভোট পরবর্তী সহিংসতা ঠেকাতে ওই তিন আসনে ৬ কোম্পানি করে বাহিনী মোতায়েন থাকবে। ওই বাহিনীর একাংশকে স্ট্রংরুম পাহারা দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হবে। বাকি বাহিনী থাকবে সহিংসতা ঠেকাতে। পশ্চিমবঙ্গের প্রথম দফার ভোটে কেবল কেন্দ্রীয় বাহিনী নয়, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে রাজ্য পুলিশও। প্রথম দফার তিনটি আসনে ১০ হাজারের বেশি রাজ্য পুলিশ মোতায়েন করবে নির্বাচন কমিশন।
রাজ্যের প্রথম দফায় যে তিন আসনে ভোটগ্রহণ হয় তাতে গতবারের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল অনুসারে এগুলোতে জয়লাভ করেছিল বিজেপি। তিন আসনের মধ্যে কোচবিহারে ফের লড়াই করছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ অধিকারী। এই আসনের অধিকাংশ অঞ্চলই সংবেদনশীল। অতীতেও এই আসনে একাধিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এবারে সহিংসতার ঘটনা রুখতে বদ্ধপরিকর নির্বাচন কমিশন। এই আসনে বিজেপির নিশীথ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আছেন তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়া এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের নীতিশ চন্দ্র রায়। জলপাইগুড়িতে বিজেপি বর্তমান লোকসভা সদস্য জয়ন্ত কুমার রায়কে পুনরায় প্রার্থী করেছে। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক নির্মল চন্দ্র রায় এবং সিপিএমের যুব নেতা দেবরাজ বর্মনের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। আলিপুরদুয়ারে বিজেপি তার বর্তমান লোকসভা সদস্যের বদলে মনোজ টিগ্গাকে মনোনয়ন দিয়েছে। তিনি বর্তমানে দলের বিধায়ক হওয়ার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিজেপির বিধানসভা দলের প্রধান হুইপও। তৃণমূল কংগ্রেস দলের বর্তমান রাজ্যসভার সদস্য প্রকাশ চিক বারাইককে প্রার্থী করেছে। আরএসপির মিলি ওরাওঁ ভোটের ময়দানে রয়েছেন।