কসবা উপজেলায় কৃষ্ণচূড়া ফুলে সেজেছে গ্রীষ্মের প্রকৃতি

ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ বাংলা সাহিত্যে সংস্কৃতি আরো অনেক বহু আন্দোলনের পটভূমির সঙ্গে কৃষ্ণচূড়া গাছের সম্পর্ক খুব নিবিড়। কবি সাহিত্যিকদের ছড়া কবিতা গানের উপমা হিসেবে নানা ভঙ্গিমায় এসেছে এই ফুলের সৌন্দর্য্য বর্ণনা। বৈশাখের শেষপ্রান্তে আকাশে পতঙ্গ তাপদাহের মাঝে প্রকৃতি যেন নিজেও তার প্রাণ ফিরে পায় কৃষ্ণচূড়া ফুলের সৌন্দর্যে।  গ্রীস্মের এই নিষ্প্রাণ রুক্ষতা ছাপিয়ে প্রকৃতিতে কৃষ্ণচূড়া নিজকে মেলে ধরেছে আপন মহিমায়। গ্রাম বাংলার অপরূপ প্রতিচ্ছবি কে আরও নতুন করে রূপে সাজিয়ে দিচ্ছে এই ফুলকে।

কসবা উপজেলা পৌর শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত বিজনা নদীর পাশে ও পৌর এলাকার সরকারি বয়েজ স্কুল প্রাঙ্গন উপজেলা প্রশাসন কার্যালয় প্রাঙ্গনে দাঁড়িয়ে থাকা বেশ কিছু গাছ আপন মনে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে গাছে গাছে এমন টাই মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে কৃষ্ণচূড়া। যেন লাল রঙে কৃষ্ণচূড়ার পসরা সাজিয়ে বসে আছে প্রকৃতি, যে কারো চোখে এনে দিচ্ছে শিল্পের দ্যোতনা। কসবা উপজেলা সারা দেশের মতোই কৃষ্ণচূড়া ফুলে সেজেছে গ্রীষ্মের প্রকৃতি। সবুজ চিরল পাতার মাঝে যেন আগুন জ্বলছে। গ্রীষ্মের ঘাম ঝরা দুপুরে কৃষ্ণচূড়ার ছায়া যেন প্রশান্তি এনে দেয় অবসন্ন পথিকের মনে। তাপদাহে ওষ্ঠাগত পথচারীরা পুলকিত নয়নে, অবাক বিষ্ময়ে উপভোগ করেন এই সৌন্দর্য্য।

তাছাড়াও পৌর শহরের হার্ড পয়েন্টে ছোট একটি কৃষ্ণচূড়া গাছের নান্দনিকতা উপভোগ করছে সবাই। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গ্রামে কৃষ্ণচূড়া গাছ লক্ষ করা গেছে। গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপদাহে ফুল ফুটে কৃষ্ণচূড়া মুগ্ধতা ছড়িয়ে পথচারীদের থমকে তাকাতে বাধ্য করছে।

কৃষ্ণচূড়া উদ্ভিদ উচ্চতায় সাধারণত ১২ থেকে ১৫ মিটার হলেও শাখা-পল্লবে এটির ব্যাপ্তি বেশ প্রশ্বস্ত। ফুলগুলো বড় চারটি পাপড়ি যুক্ত। মুকুল ধরার কিছু দিনের মধ্যে পুরো গাছ ফুলে ফুলে ভরে যায়। কৃষ্ণচূড়ার ফুলগুলো বড় ৭ থেকে ৮টি পাপড়িযুক্ত গাঢ় লাল। ফুলের ভেতরের অংশ হালকা হলুদ ও রক্তিম হয়ে থাকে।

পাপড়িগুলো প্রায় ৮ সেন্টিমিটারের মতো লম্বা হতে পারে। কৃষ্ণচূড়া জটিল পত্র বিশিষ্ট এবং উজ্জ্বল সবুজ। প্রতিটি পাতা ৩০-৫০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ২০-৪০ টি উপপত্র বিশিষ্ট।

কবিগুরু রবি ঠাকুরের ভাষায় ‘গন্ধে উদাস হওয়ার মতো উড়ে তোমার উত্তরী কর্ণে তোমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জরি’ আজ টিকে আছে নড়বড়ে অস্তিত্ব নিয়ে। তবে ক্রমে ক্রমে বাড়ছে কৃষ্ণচূড়া গাছের কদর। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শোভাবর্ধনে কৃষ্ণচূড়া গাছ অতুলনীয়। তাই সৌন্দর্য্যর পাশাপাশি মানুষ ও প্রকৃতির স্বার্থেই বেশি করে কৃষ্ণচূড়া গাছ লাগানোর আহ্বান জানান প্রকৃতিপ্রেমীরা।

শোভা বর্ধনকারী এ বৃক্ষগুলো দেশের গ্রামীণ জনপদের পাশাপাশি শহরের মানুষের কাছেও সমান গুরুত্ব বহন করে। প্রতিদিনই কৃষ্ণচুড়া গাছের কাছে ছুটে আসেন অসংখ্য মানুষ। ছবি তুলে নিয়ে যান। এমন সৌন্দর্য দেখতে কেউ ভুল করেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published.