১৭লাখ টাকার জমি দেওয়ার পরও চাকরির জন্য চাইলেন ঘুষ; শিক্ষক কারাগারে

প্রশান্তি ডেক্স ॥ পঞ্চগড়ে প্রতারণার অভিযোগে করা মামলায় জাকির হোসেন (৪৮) নামে এক প্রধানশিক্ষককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গত বৃহস্পতিবার (৯ মে) দুপুরে পঞ্চগড়ের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক (আমলি আদালত-১) অলরাম কার্জী এই আদেশ দেন। অভিযুক্ত জাকির হোসেন আটোয়ারি উপজেলার ডাংগীরহাট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

এর আগে ১৬ জানুয়ারি আদালতে হাজেরা খাতুন নামে এক নারী বাদী হয়ে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলা করেন। পরদিন আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য আটোয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে গত ১০ মার্চ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় আদালত গত বৃহস্পতিবার জাকির হোসেনকে হাজির হওয়ার আদেশ দেন। হাজির হলে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।

মামলার এজাহার ও বাদীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডাংগীর হাট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর গত ২০০১ সালে হাজেরা খাতুনের মেয়েকে ওই বিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার ওয়াদা করেন প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন ও ম্যানেজিং কমিটি। সেই সঙ্গে বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির তৎকালীন সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক রেজুলেশন করে হাজেরা খাতুনের মেয়েকে চাকরি দেওয়ার অঙ্গীকার করেন। রেজুলেশন সম্পন্ন হলে স্কুলের নামে ১৭ লাখ টাকা মূল্যের ১৭ শতক জমি দানপত্র দলিলের মাধ্যমে দান করেন।

এদিকে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বিদ্যালয়টির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। বিধি মোতাবেক হাজেরা খাতুনের মেয়ে মোস্তাকিমা বেগম আয়া পদে আবেদন করেন। পরে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হলেও চাকরি দিতে আট লাখ টাকা দাবি করেন প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন। বার বার প্রধান শিক্ষকের কাছে হাজেরা বেগম অনুরোধ করে জমি ফেরত চান নতুবা আয়া পদে মেয়ে চাকরি দিতে বলেন। মেয়ের চাকরি না দেওয়ায় তিনি মামলা করেন।

হাজেরা খাতুনের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান মুক্তা জানান, যেহেতু জমি দান করেছিলেন বিদ্যালয়ের নামে সেই সঙ্গে রেজুলেশন করেও চাকরি মেলেনি- এছাড়াও তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। সে কারণে আদালত আজ জাকির হোসেনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন। আমরা আশা করি, আদালতে ন্যায় বিচার পাবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published.