প্রশান্তি ডেক্স॥ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গত বৃহস্পতিবার (২৩ মে) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত গোপালগঞ্জে তার ৮৩টি দলিলের সম্পত্তি জব্দের আদেশ দেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদন বিবেচনায় নিয়ে এই আদেশ দেন আদালত।
আদালত সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সন্ধ্যায় দুদক এই আবেদন করে। তবে বেনজীরের বিরুদ্ধে এখনও দুদকে কোনও মামলা হয়নি।
মামলা ছাড়া কোনও ব্যক্তির সম্পত্তি ক্রোকের আবেদন করা যায় কিনা, এই প্রশ্নের উত্তরে ঢাকা জজ কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম বলেন, দুদক বিধিমালা ২০০৭-এর ১৮ বিধি অনুযায়ী অনুসন্ধান চলার সময়ে যেকোনও ব্যক্তির সম্পত্তি ক্রোকের আবেদন করতে পারবে দুদক। যাতে সম্পত্তি বেহাত না হয় সেজন্য এটা করা যায়। আর ভবিষ্যতে আদালতের রায়ের ওপর কোনও ধরনের প্রভাব যেন না পড়ে সেটাও একটা কারণ। এই ক্রোকের মেয়াদ থাকবে যেদিন থেকে কার্যকর হবে সেদিন থেকে ২৭০ কার্যদিবস। এই ২৭০ কার্যদিবস পার হয়ে গেলে আবার নতুন করে আবেদন করে সময় বাড়াতে হবে।
সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর থেকেই বেশ আলোচনায় পুলিশের সাবেক এই আইজিপি।
ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, বেনজীরের বিপুল সম্পদের মধ্যে রয়েছে গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়নে সাভানা ইকো রিসোর্ট নামের এক অভিজাত ও দৃষ্টিনন্দন পর্যটনকেন্দ্র। এছাড়াও তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ছয়টি কোম্পানির খোঁজ পাওয়া গেছে। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার বেশি হতে পারে।
প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়, ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে বেনজীর আহমেদের দামি ফ্ল্যাট, বাড়ি আর ঢাকার কাছের এলাকায় বিঘার পর বিঘা জমি রয়েছে। দুই মেয়ের নামে বেস্ট হোল্ডিংস ও পাঁচ তারকা হোটেল লা মেরিডিয়ানের রয়েছে দুই লাখ শেয়ার। পূর্বাচলে রয়েছে ৪০ কাঠার সুবিশাল জায়গাজুড়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য কমপক্ষে ৪৫ কোটি টাকা। একই এলাকায় আছে ২২ কোটি টাকা মূল্যের আরও ১০ বিঘা জমি।
অথচ গত ৩৪ বছর ৭ মাসের চাকরিজীবনে বেনজীর আহমেদের বেতন-ভাতা বাবদ মোট আয় ১ কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার ২০০ টাকার মতো।
বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চিঠি দেন সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। পরে দুদক অনুসন্ধান শুরু করে। অনুসন্ধানকালে তার সম্পত্তি ক্রোকের আবেদন করলো দুদক। আদালত সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ মঞ্জুর করেন।