প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স ॥ ভারতের ১৮ তম লোকসভা নির্বাচনের শেষ ধাপের ভোট আজ শনিবার। তার আগে গত বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বিকেল ৫ টায় শেষ পর্বের প্রচারণা শেষ হয়েছে। প্রচারণা শেষ করেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গিয়েছেন কনিয়াকুমারী। সেখানে বিবেকানন্দ রক মেমোরিয়ালে ধ্যানে বসেছেন তিনি। আজ শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানেই থাকার ঘোষণা দিয়েছেন মোদি। ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রক মেমোরিয়ালের চারপাশে দুই হাজারের বেশি পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। কোস্টগার্ড এবং নৌবাহিনীও নজরদারি রাখবে।
মোদি এমন এক জায়গায় ধ্যানে বসেছেন যা ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরের এই মিলনস্থল। ১৮৯২ সালে এই স্থলেই ভারতের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীরভাবে চিন্তামগ্ন হয়েছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। সেখানেই সমুদ্রের বুকে পাথরের টিলার ওপর ১৯৭০ সালে গড়ে তোলা হয় এক ধ্যানগৃহ।
তবে মোদির এই ধ্যান নিয়েও রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম হয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালেও লোকসভা ভোটের প্রচারণা শেষ হওয়ার পরদিনই তিনি হিমালয়ের তুষারতীর্থ কেদারনাথের গুহায় ধ্যানে বসেছিলেন। আর সেই ছবি টেলিভিশনের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল ভারতের ঘরে ঘরে। এবারও তাই করতে চাইছেন তিনি।
মোদির এই প্রচারণা ঠেকাতে তাই নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়েছে বিভিন্ন দল। গত বুধবার কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা, অভিষেক সিংভি ও সৈয়দ নাসির হুসেন নির্বাচন কমিশনে গিয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দেন। সেখানে বলা হয়েছে, মোদি ধ্যানে বসলে দেশের সব টেলিভিশন, রেডিও ও প্রচারমাধ্যমে তা নিয়ে হৈচৈ করবে। প্রত্যক্ষ না হলেও সেটা হবে পরোক্ষ প্রচার। আর তাতে ভোটাররা প্রভাবিত হবেন। চিন্তা করার কোনও অবকাশই পাবেন না।
পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উত্তর প্রদেশসহ বিভিন্ন রাজ্যের ৫৭ আসনে ভোট হবে শেষ দফায়। তার মধ্যে বারানসিও আছে। আর এই বারানসিতেই এবারও প্রার্থী হয়েছেন মোদি।
সিপিএমের তামিলনাড়ু ইউনিট প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির ধ্যানের দৃশ্য সম্প্রচারের উপর নিষেধাজ্ঞা চেয়েছে।
এভাবে ভোটের আগে পরোক্ষ প্রচারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করেছেন তৃণমূল নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতার একটি রোডশোতে জনতাকে উদ্দেশ্য করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, ধ্যান করতে চাইলে করুন। কিন্তু টিভিতে তা যাতে দেখানো না হয়, পত্রিকায় যাতে প্রচার না হয়। নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি দেখতে হবে। মোদিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, কেউ কি ক্যামেরা নিয়ে ধ্যান করতে যান?
তবে বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র শেহজাদ পুনাওয়ালা বলেছেন, হিন্দু বিরোধী মনোভাবের কারণেই মোদির ধ্যানকে আচরণবিধি লঙ্ঘন বলছে কংগ্রেস।