ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাক্ষণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ যশোহরের কন্যা ব্রাহ্মণবাডিয়ার কসবা উপজেলার সৈয়দাবাদ গ্রামে প্রেমিকের বাড়িতে এসেছিলো প্রেমিক বিয়ে করবে এই প্রতিশ্রুতি পেয়ে। বিয়ে না করে টাকা পয়সা রেখে কন্যাকে ধর্ষন করে তাড়িয়ে দেয় প্রেমিক।
১৯ জুন গভীর রাতে সৈয়দাবাদ গ্রামের এক বৃদ্ধ লোকের সহায়তায় স্থানীয় বিনাউটি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাজমুল আলম খান বেদনের মুঠোফোনে সাহায্য প্রার্থনা করলে তিনি একজন গ্রাম পুলিশের বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করেন।
পরদিন ২০ জুন চেয়ারম্যান অফিসে এঘটনা নিয়ে ওই কন্যা ও প্রেমিক রাব্বী মিয়ার পরিবারের সংগে কথা বলে চেয়ারম্যান। কন্যার দেয়া ৫০ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পর্যন্ত পৌঁছে দেয় চেয়ারম্যানের লোকেরা। তারা তাকে ঢাকার ট্রেনে ওঠিয়ে দেয়।
কিন্তু প্রতিবাদী কন্যা যশোরে বাড়িতে গিয়ে আবার ফিরে আসে কসবায়। স্থানীয় মানবাধিকার কর্মীদের সহায়তায় থানায় অভিযোগ দায়ের করলে কসবা থানার অফিসার্স ইনচাজ রাজু আহম্মেদ ২৩ জুন কসবা উপজেলার সৈয়দাবাদ গ্রাম থেকে রাব্বি মিয়াকে গ্রেপ্তার করে । এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
নির্যাতিতা কন্যা তার থানায় দায়ের করা অভিযোগে জানায়, গত দুইবছর যাবত সৌদি আরবে সৈয়দাবাদ গ্রামের মজিবুর রহমানের পুত্র সৌদি প্রবাসী রাব্বীর সংগে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। বিয়ে করবে এমন কথা বলে এবং বাড়ির কাজের দেনা পরিশোধ করতে হবে বলে প্রেমিকার কাছ থেকে সৌদি সত্তেরো হাজার রিয়াল ফুসলিয়ে নিয়ে নেয় রাব্বি। যা বাংলাদেশী টাকা প্রায় ৫ লাখ ৪৪ হাজার ।
গত ১৯ জুন প্রেমিকা প্রেমিকের বাড়িতে চলে আসে রাব্বির কথা মতো। মা-বাবা হারা কন্যাকে সৈয়দাবাদ চলে আসার জন্য অনুরোধ করলে বিয়ের খরচ বাবদ প্রেমিকা ৫০ হাজার টাকাও নিয়ে আসে। প্রেমিকের বাড়িতে আসার পর বিয়ে হবে এমন প্রতিশ্রুতি দেয় রাব্বি। এই দিন সন্ধা থেকে একতলা দালানের একটি কক্ষে জোরপুর্বক ধর্ষন করে রাব্বি। বিষয়টি তার মাকে জানালে এবং বিয়ের জন্য চাপ দিলে তাকে ওই রাতেই বাড়ি থেকে বের করে দেয়। রাতের আধারে এক বৃদ্ধ লোকের সহায়তায় গ্রাম পুলিশের বাড়িতে রাত যাপন করে। পরদিন স্থানীয় চেয়ারম্যান নাজমুল আলম খান বেদনের অফিসে পৌছালে সেখান থেকে মেয়েটিকে ছেলের লোকেরা জোরপূর্বক স্ট্যাম্পের স্বাক্ষর রেখে তাড়িয়ে দেয়।
বিনাউটি ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল আলম খান বেদন বলেন- ওই কন্যার এলাকার চেয়ারম্যানের নিকট আমি ফোন করলে বিয়ে পরাতে বলেন। আমার পক্ষে বিয়ে পড়ানো সম্ভব হয়নি তাই কণ্যার দেয়া ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করে আমি তাকে চলে যেতে বলি। নির্যাতিতা কণ্যা বলেন, আমাকে ভয়ভিতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আমি এর বিচার চাই এবং আমার কষ্টাজির্ত ১৭ হাজার রিয়াল ফেরত চাই। আমি এতিম সে আমার জীবন ধংশ করে দিয়েছে।
কসবা থানা ওসি মোহাম্মদ রাজু আহম্মেদ বলেন, আমরা আইন অনুযায়ী বিষয়টির ব্যবস্থা নিচ্ছি। ধর্ষিতা কন্যার ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ব্রাক্ষণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।