ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ কসবা উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে ব্যাপক, দুর্নীতি, মহিলা সদস্যদের সংগে অসদাচরণ, অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনলেন ওই ইউনিয়নের ৪জন ইউপি সদস্য। তারা গতকাল ২১ জুন কসবা প্রেসক্লাবে জনাকীর্ণ এক সংবাদ সম্মেলন করে এ সমস্ত অভিযোগ তোলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে সকলের পক্ষে লিখিত অভিযোগ পাঠ করেন খাড়েরা ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য রতœা আক্তার। তিনি বলেন; খাড়েরা ইউপি চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে মহিলা সদস্যদের কোনো কিছু না জানিয়ে এবং অধিকার বঞ্চিত করে প্রকল্প গ্রহণ, ভিজিডি বরাদ্দ করেছেন। এ বিষয়ে জিঙ্গাসাবাদ করলে ৭, ৮, ৯ নং সংরক্ষিত মহিলা আসনের রেহেনা বেগম (৬২)’র সাথে অশালীন আচরণ করেন যা তিনি ভাষায় করতে না পেয়ে ঘুমরে ঘুমরে কেঁদেছেন।
৪০ দিনের কর্মসূচীর আওতায় বুগীর থেকে গোলাসার পর্যন্ত সড়ক মেরামতে ৯৫ জন মাটি কাটা শ্রমিক দিয়ে কাজ না করে রাতের আধাঁরে ভেকু মেশিন দ্বারা একরাতে মাত্র ২০ হাজার টাকা খরচ করে প্রায় সাড়ে সাত লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে চেয়ারম্যান। বুগীর অদু মিয়ার বাড়ি থেকে ঈদগাহ মাঠ, সোনার গাঁ কানু খাঁ বাড়ি থেকে সোনা মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থানের আওতায় প্রকল্প বরাদ্দ হয়।
ওই প্রকল্প ও হত দরিদ্র শ্রমিকদের দিয়ে কাজ না করিয়ে চেয়ারম্যানের ভাইয়ের মেয়ের জামাতা নোমান নামক এক ব্যক্তির ভেকু দিয়ে কাজ করিয়ে প্রায় আড়াই লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। সংবাদ সম্মেলনে মহিলা সদস্য রেহেনা বেগম আরো জানান এরকম আরো বহু প্রকল্প তার পছন্দের ৪/৫ জন সদস্যদের নিয়ে কাজ করে। এছাড়া পুরো উন্নয়ন প্রকল্পের ৮০% কাজই তার নিজ গ্রাম গোলাসারে বরাদ্দ দিয়ে পুরো ইউনিয়নকে বঞ্চিত করছে। এছাড়া মহিলা সদস্য রেহেনা বেগম ও অন্যান্যদের দাবিয়ে রাখার জন্য চেয়ারম্যান তার বাহিনীর লোক দ্বারা মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানীর চেষ্টা করছে। ভেকু মেশিন দ্বারা মাটি কাটার ফলে খাড়েরা ইউনিয়নের হত দরিদ্র শ্রমিকরা অর্ধাহার ও অনাহারে রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আনু মেম্বার বলেন ট্যাক্স এর কথা বলে ইউনিয়নের প্রতি বাড়ি থেকে ৫শত থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করে চেয়ারম্যান জনগণকে হয়রানী করেছে।
রেহানা বেগম জানান চেয়ারম্যানের নানা দুর্নীতি ও অসদাচরনের জন্য দু’বার উপজেলা নির্বাহী অফিসারে নিকট অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাইনি। এ ব্যাপারে নির্বাহী অফিসারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান একটি অভিযোগ পেয়েছেন এবং তদন্তের জন্য প্রকল্প কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলন চলাকালে চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন সাংবাদিকদের ফোনে জানান তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। সংবাদ সম্মেলনে রতœা আক্তার, পারভীন আক্তার ও আনু মিয়া ছাড়াও বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন হুমায়ুন কবির, আবু নাছার, আনু মেম্বার, হাবিবুর রহমান, হেবজু মিয়া এম মাহবুবসহ আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দগণ উপস্থিত ছিলেন। এঘটনায় পুরো এলাকায় আলোচনার ঝড় উঠেছে।