প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স ॥ রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার প্রায় দুই বছর পর অবশেষে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পেতে যাচ্ছে ইউক্রেন। আগামী মাসের মধ্যেই প্রথম এফ-১৬ বিমান ইউক্রেনে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে ইউক্রেন যখন এই মার্কিন যুদ্ধবিমানগুলো পেতে যাচ্ছে, তখন রাশিয়া ইতোমধ্যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করে ফেলেছে। এতে করে এফ-১৬-এর প্রভাব অনেকটাই কমে যেতে পারে। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ইউক্রেন শেষ পর্যন্ত পেলেও রণক্ষেত্রে দেশটির ভাগ্য রাতারাতি পাল্টে যাবে না। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ইউক্রেনের যুদ্ধ জয়ের জন্য গতিপথ পাল্টে দিতে পারবে না। কৌশলগত নিরাপত্তা বিষয়ক পরামর্শক মার্ক ক্যানসিয়ান বলেন, সরেজমিনে এফ-১৬-এর প্রভাব প্রতীকী হতে পারে, কিন্তু খুব বেশি তাৎপর্যপূর্ণ নয়। বিশেষত শুরুতে এর প্রভাব সীমিত থাকবে।
ইউক্রেনের সিকিউরিটি অ্যান্ড কোঅপারেশন সেন্টারের চেয়ারম্যান সের্হি কুজান বলেছেন, যথেষ্ট কার্যকর অপারেশনের জন্য অন্তত ৬০টি যুদ্ধবিমান প্রয়োজন হবে। তবে ইউক্রেনের আইনপ্রণেতা ওলেক্সান্দ্রা উস্তিনোভা বলেন, আকাশ প্রতিরক্ষা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে ১২০টিরও বেশি এফ-১৬ প্রয়োজন।
যুদ্ধবিমানের পাইলটের প্রশিক্ষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বর্তমানে ইউক্রেনের ২০ জন পাইলটকে এফ-১৬ চালানোর জন্য প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে এবং ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ প্রশিক্ষণ শেষ হতে পারে। তাই যুদ্ধবিমান পেলেও পাইলটের অভাবে যুদ্ধক্ষেত্রে এর ব্যবহার সীমিত হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইউরোপেও প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে। তবে যুদ্ধবিমান রক্ষণাবেক্ষণ পাইলট প্রশিক্ষণের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন।
রাশিয়া ইতোমধ্যে এফ-১৬ এর জন্য প্রস্তুত বিমানঘাঁটি ও অবকাঠামোতে আক্রমণ বাড়িয়েছে। সের্হি কুজান বলেন, প্রতিদিনই রাশিয়া সম্ভাব্য এফ-১৬ ঘাঁটি ও অবকাঠামো লক্ষ্য করে আক্রমণ চালাচ্ছে।
এফ-১৬ ও এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ কর্মীরা আসার পর এই ঘাঁটিগুলো আরও মূল্যবান লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই বিমান ঘাঁটিগুলি রক্ষার জন্য ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন হবে। কিন্তু ইউক্রেনের কাছে পর্যাপ্ত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও গোলাবারুদ নেই।
কুজান আরও বলেছেন, যখনই আমরা আমাদের যুদ্ধবিমানের সক্ষমতা বাড়াতে পারব, তখনই রাশিয়ার বিমানগুলোকে প্রতিহত করা সম্ভব হবে। তবে এই কয়েক মাস আমাদের জন্য খুব কঠিন হবে।
ধারণা করা হচ্ছে, এফ-১৬ যুদ্ধবিমান আসলেও যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনের ভাগ্য ততটা দ্রুত বদলাবে না। তবে এটি কিছুটা হলেও আকাশ প্রতিরক্ষা বাড়াতে সহায়ক হতে পারে।