প্রশান্তি ডেক্স॥ অবৈধ গ্যাস পাইপ লাইন উচ্ছেদে আরও জোরেশোরে মাঠে নামতে চায় পেট্রোবাংলার গ্যাস বিতরণ কোম্পানি। সূত্রগুলো বলছে, আগে অবৈধ গ্যাস পাইপলাইন অপসারণ করতে গেলে নানামুখী রাজনৈতিক বাধা আসতো, এখন আর সেটি আসবে না।
পেট্রোবাংলা এবং জ্বালানি বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তিতাস অনেকবার চেষ্টা করেও নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর এবং ঢাকার আশপাশের কিছু এলাকার অবৈধ গ্যাস পাইপলাইন উচ্ছেদ করতে পারেনি।
এসব জায়গায় গ্যাস পাইপলাইন উচ্ছেদ করতে গেলেই রাজনৈতিক বাধা আসতো। এখন আর সেটি আসবে না। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে চায় কোম্পানিগুলো।
সূত্র জানায়, জ্বালানি বিভাগের গত মাসের সমন্বয় সভায়ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চাওয়া হয়েছে। তাদের দিয়ে অবৈধ পাইপলাইন অপসারণের কাজ আরও জোরালো করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছিল।
তবে এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে নতুন সরকার কাজ শুরু করেছে। নতুন সরকার ইতোমধ্যে তাদের অগ্রাধিকার খাত চিহ্নিত করার উদ্যোগ নিয়েছে। এই খাতের মধ্যে বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতও রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করে তিতাস কোম্পানির একজন কর্মকর্তা বলেন, এমন অনেক জায়গাই রয়েছে, যেখানে তিতাস কোনও গ্যাসের লাইন দেয়নি। সেখানে একশ্রেণির মানুষ ব্যক্তিবিশেষের নাম ভাঙিয়ে গ্যাস সরবরাহ করছে। কিন্তু এতদিন এদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।
জ্বালানি বিভাগের একটি প্রতিবেদন বলছে, ১ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত ১০ হাজার ৭২২টি অবৈধ চুলার লাইন কাটা হয়েছে। আর এ সময়ে ২৩ কিলোমিটার অবৈধ লাইন অপসারণ করা হয়েছে।
এক মাসের এই পরিসংখ্যানে সবচেয়ে বেশি নারায়ণগঞ্জে ৮ হাজার ৭৯৪টি চুলা অপসারণ করা হয়। এরপর গাজীপুরে এক হাজার ৭৯২টি এবং ঢাকায় ১৩৬টি চুলার লাইন অপসারণ করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জে ২১ কিলোমিটার অবৈধ লাইন উচ্ছেদ করা হয়েছে। বাকি দুই কিলোমিটার লাইন গাজীপুরের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্রনাথ বলেন, ‘আমরা আগেও নানা প্রতিকূলতার মধ্যে নিয়মিত অভিযান চালিয়েছি। এখনও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি, পুলিশ পুরোপুরি কাজ শুরু করেনি। সব স্বাভাবিক হয়ে এলে আমরা ব্যাপক হারে অভিযানে নামার চেষ্টা করবো।’
পেট্রোবাংলা অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিষয়ে উদ্যোগী ভূমিকা নিলেও নানামুখী চাপ এবং বাধার কারণে সবসময় তা সফল হয়নি। তবে সরকার বদলের কারণে সফল অভিযানের আশা দেখছেন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।