ঠাকুরগাঁওয়ে হরিপুরে গেরুয়াডাংগী গ্রামের ৪০০-৫০০পরিবার লোকজনের বের হওয়ার কোন রাস্তা নেই

জসীম উদ্দীন ইতি ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি॥ ৬০ থেকে ৭০ টি পরিবারের ৪০০ থেকে ৫০০ জন সদস্য নিয়ে বসবাস। মাঠে ফসলি জমিতে বাড়ি নির্মাণ করে সববাস শুরু করে পরিবারগুলো। মাঠের মধ্যে গঠে উঠা গ্রাম থেকে বের হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনো রাস্তা নেই। দীর্ঘ দিন ধরে চেষ্টা করছে অর্থের বিনিময়ে জমি ক্রয় করে রাস্তার নির্মাণের জন্য। কিন্তু কেউ রাজি হচ্ছে না রাস্তার জমি দিতে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম ও ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম সহ গ্রামবাসীদের সাথে বসে রাস্তার জমি ক্রয় করার প্রস্তাব দেন। জমির মালিকদের মতের অমিল থাকার কারণে ৮ থেকে ১০ বার বসার পরেও কোনো লাভ হয়নি। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গ্রামের নির্দিষ্ট রাস্তা না থাকায় দূভোগে পড়েছে গ্রামবাসী। গ্রামের শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাতায়াত করে। মাঠে ক্ষেতের আইল দিয়ে জুতা হাতে নিয়ে কাঁদা-পানি দিয়ে যেতে হয়। অনেক সময় আইল দিয়ে যাওয়ার সময় পড়ে গিয়ে কাপড় গুলো কাঁদা-পানিতে নষ্ট হয়ে গেলে শিক্ষার্থীরা বাসায় ফিরে যেতে বাধ্য হয়। উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যেতে পারে না। গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে পারে না। চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় গ্রামের গর্ভবতী মায়েদের । গ্রামের রাস্তা নাই এমন কথা শুনার পরে ছেলে মেয়েদের বিয়ে ভেঙ্গে যায়। মানুষের চলাচলের জন্য নেই কোনো রাস্তা। ক্ষেতের আইল দিয়ে ঐ জনগোষ্ঠীকে চলাচল করতে হচ্ছে যুগের পর যুগ। প্রতিটি নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দিলেও তাদের ভাগ্যে জুটছে না একটি রাস্তা। সনদ পেলেও নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত ঐ জনপদের বাসিন্দারা। রাস্তার জন্য জমি দিতে নারাজ জমির মালিকরা। সব সমস্যা সমাধান হবে একটি রাস্তা নির্মাণ করা হলে। শাহিন আলম জানান, তাদের গ্রামে ঢোকার সরকারি কোনো রাস্তা নেই। যুগ যুগ ধরে অন্যদের ক্ষেতের আইল দিয়ে চলাচল করতে হয় তাদের। নির্বাচনের সময় প্রতিশ্রুতি দিলেও জয়ের পর রাস্তা নির্মাণের কথা ভুলে যান জনপ্রতিনিধিরা।

মোহাম্মদ আব্দুস সবুর বলেন, আমরা গ্রাম বাসবাসীরা মাঠের মধ্যে বাড়ি করে বিপাকে পড়েছি। ধান ক্ষেতের আইল মানুষের জমির উপর দিয়ে চলাফেরা করতে হয়। হরিপুর উপজেলা নিবার্হী অফিসার স্যার কে অনুরোধ করছি তিনি যেনো আমাদের গ্রামের রাস্তার ব্যবস্থা করে দেয়। গেদড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বলেন, গ্রামের মানুষের চলাচলের জন্য কোনো সরকারি রাস্তা নাই। যে পাশে দিয়ে রাস্তা করা যাবে সেই জমির মালিকদের সাথে নিয়ে কয়েক বার বসা হয়েছে। গ্রামবাসী জমি কিনে রাস্তা করার জন্য রাজি হলেও জমির মালিক জমি বিক্রি করতে রাজি হননি।

গেদুড়া ইউপি চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম বলেন, এই গ্রাম ৫০ থেকে ৬০ টি পরিবার বসবাস করে। এই গ্রামটা অনেক বড় একটা গ্রাম। গেরুয়াডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করার পর থেকে। গ্রামের মানুষের চলাচলের সমস্যা হয়েছে। গ্রামবাসী ও জমির মালিকদের সাথে নিয়ে একাধিক বার বসার পরে সমাধান করতে পারিনি। এই বিষয়ে এখন প্রশাসন ছাড়া রাস্তার সমাধান হবে না। তাই প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। এবিষয়ে হরিপুর উপজেলা নিবার্হী অফিসার আরিফুজ্জামান বলেন, রাস্তার বিষয় নিয়ে আমার কাছে আসছিলো। ইউপি চেয়ারম্যান ও স্টুডেন্ট দের বলা হয়েছে। জমির মালিকদের সাথে বসে আলোচনা করার জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published.