বৈষম্যের অবসানে আবারো বৈষম্য

জুলাই ও আগষ্ট জুড়েই ছিল দাবি আর দাবি এবং বৈষম্য দুরীকরণের নিমর্ম হা হা কার। ঐ হাহাকারের সূত্র ধরে এখনও চলছে বিরাজমান সমাজ ও সংস্কৃতির চর্চা। কবে হবে ঐসকল বৈষম্য দুর। কেউ জানে না তবে জানার চেষ্টাও করেনা। যে বৈষম্য বিতারিত হয়েছে সেই বৈষম্যই আবার আতে ঘ্যা হয়ে ফিরে আসছে। না এসেই বা উপায় কি? আমরা বেশী স্বাধীন হয়ে জীবন যাপনে অভ্যস্থ নয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বৈষম্যের বিরুদ্ধে নব বৈষম্য তৈরীতে ব্যস্ত এখন স্বাধীনতা ভোগকারীরা। মিথ্যা এবং গুজব ও সম্মানিতদের অসম্মানকরণের প্রতিযোগীতায় লিপ্ত। আর এই লিপ্তাবস্থার অবসান জরুরী। যেহেতু একটি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন স্বার্থক হয়েছে এবং সফলতায় পর্যবসিত হওয়ার পথে সেইহেতু এই বৈষম্যে যেন আর নতুন কোন বৈষম্যের সৃষ্টি না হয় এমনকি অতিতের দৃষ্টান্তগুলোর ন্যায় নতুন দৃষ্টান্তের সৃষ্টি বা উদাহরণ তৈরী না হয় সেই দিকে দৃষ্টিগোচর করুন। তাহলে বৈষম্যের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছায় আত্মত্যাগকারীদের আত্মার শান্তি সুনিশ্চিত হবে না এমনকি তাদের আত্মত্যাগের অমূল্যায়ন হবে। একই বিষয়ে বার বার আত্মত্যাগ কাম্য নয় বরং এই আত্মত্যাগের মাধ্যমেই সকল বৈষম্যের অবসান হউক। নতুন সূর্য্য, নতুন আশা, নতুন দিগন্ত অবারিত হউক সাম্যের বেড়াজালে।

যারা সুযোগ পেয়েছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলছি; আপনারা আরো ধৈয্যশিল হউন এবং সকলের প্রতি সহনশীল আচরণ করুন যা আপনারদের বাহ্যিক ব্যবহারে প্রকাশ করুন। আপনারা শাসক না হয়ে বরং সেবক হয়ে কাজ করুন। সকলের প্রতি সম আচরণ করুন। যে সকল বৈষম্য এখনও আপনাদের দৃষ্টিগোচরে আসছে সেগুলোর সমাধান করুন এবং কাউকেই তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করিবেন না। পূর্বের ন্যায় কন্ঠরোধ এবং অধিকার বঞ্চিতের প্রক্রিয়ায় নিজেদেরকে নিয়োজিত না করে বরং আরো উদার হয়ে সকলের কথা মনযোগ দিয়ে শুনে সেই অনুযায়ী কাজ করুন এবং জরুরী পদক্ষেপ নিন। এই বিষয়ে ন্যায়পাল প্রথা চালু করুন এবং একটি ন্যায়পাল কমিটি গঠন করুন যারা ঐসকল বৈষম্য এবং আন্দোলনকারীদের কথা মনযোগ দিয়ে শুনে আপনাদের কাজে সহযোগীতা করবেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে আগামীর সকল অগ্রযাত্রাকে ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত রাখবেন। ন্যায়পালদের আরো দায়িত্ব দিন যাতে সরকারি কাজে এবং অফিস আদালতের বৈষম্যগুলো দুরীকরণে সুস্পষ্ট ধারনা দিয়ে সকল বৈষম্য দুরীকরণে দ্রুত কাজ করার সুযোগ অবারিত হয় এবং সাম্য ও ন্যার্য্যতা সুনিশ্চিত হয়।

শেখ হাসিনার কবল থেকে ছিনতাই হওয়া ক্ষমতা এসেছিল ছাত্র জনতার নামকরণে এবং সেই ক্ষমতা আবার অদৃশ্য ডাকাতের কবলে পড়ে ডাকাতদের দখলে গিয়ে এখন ডাকাতদের অঙ্গলির নির্দেশেই চলছে। তবে আপনারা এখন ঐ ডাকাতদের দখলে আছেন তারপরও বলব নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশ ও জনগণের কল্যাণের তরে যতটুকু সম্ভব কাজ করুন। সুযোগ পেলে ডাকাতের কবল থেকে বেড় হয়ে এসে সকল বৈষম্যের বেড়াজাল ছিন্ন করে ইতিহাসে নিজেদেরকে সুপ্রতিষ্ঠিত করুন। নতুন করে আর কোন বৈষম্যের জন্ম না দিয়ে পুরুনো জঞ্জাল দুরীকরণে মনোনিবেশ করুন।

রাজনীতিকে কলুষিতমুক্ত করণের তরে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করুন। নতুনত্ব নিয়ে আসুন এবং নতুনের আহাবানে সাড়া জাগানোর কাজে নতুনদেরকে উৎসাহিত করুন। পুরোনো গুণেধরা সমাজ ব্যবস্থাকে নতুনত্ব দিয়ে রাঙ্গিয়ে দিন। নতুনের জয়জয়াকার এবং নতুনের কেতন উড়ান। পুরোনোদেরকে দেশ পরিচালনায় নয় বরং সহযোগীতায় নতুনদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ দিন। ক্ষমতার পালাবদল নয় বরং ক্ষমতায় প্রকৃত উদারতায় নবজাগরণকে উজ্জিবিত করে সেবা ও সাম্যকে আর ন্যায্যতাকে আলিঙ্গক করুন। সৃষ্টিকর্তা আপনাদেরকে অবারিত সুযোগ দিয়েছেন এবং সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পর্যাপ্ত সহযোগীতা অব্যাহত রেখেছেন। তাই এই সুযোগকে হেলায় না ফেলে বরং সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা ও অভিপ্রায়কে সুপ্রতিষ্ঠীত করুন। জয় হবেই সুনিশ্চিত।

জনগণ যারা অতি উৎসাহ নিয়ে লম্ফযম্ফ শুরু করেছেন তাদেরকে বলি ধৈর্য্যধারন করুন এবং যারা চেষ্টায়রত তাদেরকে সুযোগ দিন যেন তারা তাদের কাজটুকু সযত্নে করে জনআকাঙ্খার প্রতিফলন বাস্তবে দৃশ্যমান করতে পারে। এই দেশ আমাদের সকলের এবং এই দেশ কারো ব্যক্তিগত সম্পদ নয় যা ৫২, ৬৯, ৭১’র চেতানার ফসল। সেই চেতনার স্রোতের বহিপ্রকাশ ছিল ৫ আগষ্টের জনরোশ ও জনআকাঙ্খার ফল। সেই ফল এখন পরিচর্যায় রয়েছে তাই এই পরিচর্যাকালীন সময়ে নেতিবাচক ভুমিকা না রেখে ইতিবাচক ভুমিকায় অবতীর্ণ হউন। আন্দোলন ও পরিবর্তন একদিনে হয়না বরং সময় নিন এবং সুযোগ দিন আর সময় ও সুযোগের মধ্যে নিজেদেরকে প্রমান করুন নিজেরাই শ্রেয় তাহলেই সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদ এবং অভিপ্রায় আপনার মাধ্যমে সুপ্রতিষ্ঠিত হবে।

প্রতিহিংসা নয় বরং ক্ষমার মাধ্যমে সকল কর্মকান্ড পরিবচালনা করুন। ক্ষমা এবং ভালবাসা মিশ্রিত কর্মকান্ডের ফল হবে শান্তি ও স্থিতিশীলতা এবং নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তার দৃশ্যমান বাস্তবতা। ক্ষমতা শুধু পরিচর্যা ও দেখা-শুনার জন্য; সেবার জন্য; ভালবাসা ও ক্ষমা প্রদর্শনের জন্য। এই বাইরে গিয়ে ক্ষমতা ব্যবহার কারীদের দৃষ্টান্ত সুখকর নয়। তাই সম্মান পাবার আশা করলে নিজে আগে সম্মান প্রদর্শন করুন। তাইলে সম্মান এর ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন থাকবে। এই বিষয়ে সৃষ্টিকর্তার একটি আয়াত দিয়ে শেষ করতে চাই “তোমরা যেরকম আশা কর সেইরকম তোমরা আগে করে দেখাও”। হ্যা এর মধ্যেই আমাদের জীবন। তবে সৃষ্টিকর্তা এও বলেছেন “তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মত মহব্বত কর”। হ্যা এও আমাদের জন্য এখন প্রযোজ্য। আমরা সকলেই সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায়ে পরিচালিত হই এবং তার অভিপ্রায় সুপ্রতিষ্ঠিত করি। সৃষ্টিকর্তার দৃষ্টিতে সবাই সমান। আর আমাদের আন্দোলনের স্লোগানও তাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published.