বৈষম্যের সংস্কারেও বৈষম্য

অন্তবর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. ইউনূছ সাহেবের সংস্কার কর্মসূচিতেও সংস্কার দরকার। কারণ যারা করবে সংস্কার তাদেরও সংস্কার করা দরকার। এযাবতকাল পর্যন্ত ড. ইউনুছ সরকার যা করেছে তা হুবহু প্রশংসা পাবার যোগ্যতায় পরিপূর্ণতা পায়নি এবং পাবার জন্য যা যা দরকার ছিল তার আংশিক পুরণে সক্ষম হয়েছে মাত্র। তবে গতানুগতি সরকারগুলোর ন্যায় এই জনআকাঙ্খার সরকারও কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তবে রাষ্ট্র পরিচালনায় আরো কঠোর হওয়া দরকার। সহনশীল আচরণ এবং উদারতা দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করা যায়না তা এই কয়দিনে নিশ্চয়ই ইউনুছ সরকার বুঝতে পেরেছে। তবে কঠোর হওয়া এই সরকারের জন্য বৈষম্যের বেড়াজালে আবদ্ধ হওয়ারই ন্যায় । তাই সহনশীলতা ও উদারতা দিয়ে যতটুকু সম্ভব তার সবটুকুই করার প্রয়োজনীয় গুরুত্বারূপের পর্যায়ে নিয়ে এসে কার্যক্রম তরান্বিত করা দরকার। একটি যৌক্তিক সময় পর্যন্ত এই সরকার নিজেদেরকে রাষ্ট্র পরিচালনায় নিয়োজিত রাখতে পারবে কিন্তু ঐ যৌক্তিক সময়ে সঠিক কাজটুকু সযতনে সম্পন্ন করতে না পারলে জন আকাঙ্খার বিস্ফোরণে এই সরকারকেও বিদায় নিতে হবে। তাই বিদায়ের আগে নিজেদের এবং দেশের সকল প্রায়োগিক আকাঙ্খা পুরণে সচেষ্ট হউন।

সংস্কারের ছড়াছড়িতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারই অনুচ্চারিত রয়েছে। যেমন শিক্ষায় সংস্কার এবং শিক্ষকদের মর্যাদায় সংস্কার। শিক্ষকদেরকে আমলাতন্ত্রের উর্দ্ধে স্থান দেয়ার ব্যবস্থা আশু প্রয়োজন। লূটপাতের সহিত জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার কাজে গতিশীলতা আনয়ন করা জরুরী। যারা হাসিনা সরকারকে লুটপাটে সহায়তা করেছে এবং নিজেরাও লাভবান হয়েছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির বিধানে আবদ্ধ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন এবং আত্মসাৎকৃত অর্থ রাষ্ট্র মেরামতের কাজে ব্যায় করার জোর দাবি রাখছি। তথ্য প্রযুক্তি খাতের দুর্নীতির মুখোশ উন্মোচন করা এবং তথ্য প্রযুক্তি খাতের নের্তৃত্ব দেয়া সংগঠনগুলোর রিফর্ম করা এমনকি ঐ নেতাদেরকে আইনের আওতায় আনা এখন সময়ের দাবি। কারণ তারা সালমান এফ রহমান এবং পুলক এর ছত্রছায়ায় থেকে নিজেরা আখের গুছিয়েছে এবং ঐ মোড়লদেরকে আখের গুছাতে সাহার্য্য করেছে। তথ্য প্রযুক্তি খাতের ধ্বংস ডেকে নিয়ে আসছে আর প্রযুক্তি খাতের সৎ ও সাহসি এমনকি দেশকে দেয়ার স্বাক্ষ্য বহনকারীদের মামলা ও হামলার ভয়ে তাড়িয়ে বেড়িয়েছে। তাই এই সংগঠনের নেতা এবং তাদের কলংকিত নের্তৃত্বের বিচার এখন সময় ও যুগের দাবি। সকল বৈষম্যের অবসানকল্পে এই বিচার প্রায়োগিক প্রথম স্তরের দাবি রাখে।

ইদানিং এও দেখা যাচ্ছে যে, ঐ সংগঠনের কলূষিতরা আবার কেউ কেউ  বর্তমান সরকারের সংস্কার কমিটিতে ঠায় পেয়েছে। তাই এই সরকারের সংস্কার কমিটিরও সংস্কার করা দরকার। বেসিস নিয়ে কথা বলতে গিয়ে যারা নির্যাতিত এবং জেল-জুলুম সহ্য করেছেন তাদেরকে খুজে বের করে আগামীর করনীয় ঠিক করতে হবে। দরবেশ বাবার কেলেঙ্কারী ফাস করে যারা জেল-জুলুমের স্বীকার হয়েছে তথ্য প্রযুক্তি আইনে স্বপরিবারে মামলা এবং জেল খেটে এখনও কোর্টমুখী তাদেরকে খুজে বের করে তাদের অভিজ্ঞতা এবং আগামীর করনীয় ঠিক করতে সহযোগীতা হাত অবারিত করতে হবে। নতুবা এই বৈষম্যবিরোধী সরকারের সফলতা শতভাগ সফল হবে না। এখন দেখেছি ঐ নির্যাতিতরা কোন কিছুর সঙ্গে যুক্ত হতে বা যুক্ত হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত বা তাদের কোন পরামর্শ পর্যন্ত নেয়া হয়নি। অন্তরবর্তীকালীন সরকার ঐ নির্যাতিতদের সঙ্গে বসে আগামীর করনীয় ঠিক করার জন্য সময়ের প্রয়োজনে যুগের দাবিকে সামনে এনে কাজ করার আহবান জানাচ্ছি। সাংগঠনিকভাবে এবং থানা থেকে মামলার তথ্য সংগ্রহ করে এই নির্যাতিতদের খুজে বের করুন অথবা উদাত্ত আহবানের মাধ্যমে তাদেরকে ডাকুন যেন তারা সকলেই উপদেষ্টাদের সঙ্গে বসে আগামীর করনীয় ঠিক করে একসঙ্গে এগিয়ে যেতে এবং সংস্কার ও সরকারকে এগিয়ে নিতে কার্যরত থাকতে পারে।

অনেকেই এরই মধ্যে উপদেষ্টাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চেষ্টা করেছে কিন্তু যোগাযোগ করতে পারেনি। পিএ বা পাবলিক রিলেশন কর্মকর্তাগণ সুযোগ দেনননি বলেই প্রতিয়মান হয়েছে। যার নির্লোভ তারা হয়তো একবার চেষ্টা করে আর যাননি এবং যাবেনও না তাই তাদের খুজে পাওয়ার ব্যবস্থা করুন। নতুবা হলুদ এবং পুর্বের চাটুকার ও নব্য চাটুকারদের দ্বারা আবৃত হয়ে জনআকাঙ্খাবিমুখ হয়ে পড়বেন। পূর্বের সরকারগুলোও এই একই বৃত্ত্বে আবৃত্ত হয়েছিল এবং কলঙ্কজনক বিদায় জনসম্মুখ্যে দৃশ্যমান। তবে পরামর্শ শুনার জন্য আকাঙ্খা এবং সুযোগ উন্মক্ত রেখে সহযোগীতা গ্রহণে প্রস্তুত থাকুন। আপনাদেরকে সহযোগীতা করতে নির্লোভমানুষগুলো সদা প্রস্তুত। এখন শুধু খোজা এবং আহবানের মাধ্যমে ঐক্যে যুক্ত করে ঐক্যবদ্ধতার মূলমন্ত্রে এগিয়ে যাওয়ার অপেক্ষা।

আমার সঙ্গে সকলেরই পরিচয় – আলাপ আছে কিন্তু আমি ঘনিষ্টভাবে কারো সঙ্গেই সম্পর্ক রেখে চলায় অপারগ তবে পরামর্শ এবং প্রয়োজনে পাশে থেকে এগিয়ে নিতে ও যেতে সর্বোপরি সর্বাত্মক সহায়তা অব্যাহত রাখতে আগ্রহী। আমাদের সার্বজনীন কল্যাণের তরে আমি সর্বদা প্রস্তুত এবং জীবনের বাকি দিনগুলো ব্যায়ে নিয়োজিত। তাই আমার সমর্থন, সহযোগীতা এবং পরামর্শ অর্ব্যাহত থাকবে। জাতির এই ক্রান্তিকালে বলতে চাই নেতিবাচক দৃষ্টান্তের সকল কাজের বিচার অত্যাবর্শক। যার যতটুকু সম্মান তাকে তার ততটুকু দেয়া জরুরী। আল্লাহর কালাম বলে “তুমি যেরকম আশা কর সেইরকম আগে করে দেখাও”। হ্যা আমরা সকলেই সম্মান আশা করি তাই আগে আমরা সম্মান করে দেখাই যেন পরে আমরাও সম্মান পেতে পারি। রাষ্ট্রীয় সম্পদ/ ব্যক্তি সম্পদ চুরি, হাইজ্যাক, ডাকাতি, দখল এবং খুন ও ধর্ষন এর বিচার সর্বাগ্রে করে দেখাতে হবে। কারন এই সরকার জনগণের কোনে সুনির্দিষ্ট দলের নয়। সচিবালয়ে যারা আন্দোলনের জন্য প্রবেশ করেছে এবং এর অভ্যন্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার প্রমানাদিসহ বিচার করে উপযুক্ত শাস্তি দিয়ে জনসম্মুখ্যে প্রকাশ করে জাতিকে দেখাতে হবে যাতে আদূর ভবিষ্যতে কেউ এই ধরনের দু:সাহস আর কোনদিনও করতে না পারে।

সকলের কথা শুনা এবং মত প্রকাশের রাস্তা উন্মুখ রেখে সামনে এগুতো হবে। সকলের কথা শুনার জন্য একটি কমিশন গঠন করে সুযোগ করে দিন যেন রাস্তায় না নেমে দাবি-দাওয়া নিয়ে ঐ কমিশনে গিয়ে হাজির হয় এবং সকল দাবি-দাওয়া উপস্থাপন করে কমিশনের মাধ্যমে উপদেষ্টাগণ শুনে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহন করে নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা এবং সকল বৈষম্যের অবসান করতে পারেন। তবে কমিশনকে মনিটরিং করার জন্য উপদেষ্টা সমন্বয়ে একটি কমিটি প্রয়োজন। কারণ তাদের কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা জরুরী। যদি এইভাবে জনআকাঙ্খা পুরন করা যায় তাহলে আর কোন রাজনৈতিক সরকারের প্রয়োজন নেই বরং এই সরকার এবং এই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এবং যেতে পারে অনাদিকাল। কথায় আছে ঠেকলে তিন মাথার কাছে যাইয়ো। ঠিক এই সরকার এখন তিন মাথাওয়ালা। কারণ জাতি ঠেকেছে তাই তিন মাথার স্মরণাপন্ন হয়ে তারুন্যকে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এই এগিয়ে যাওয়ায় সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদ ও অভীপ্রায় পরিপূর্ণতা পাক এই কামনা করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.