প্রশান্তি ডেক্স ॥ আগামী তিন দিন ধেমের বিভিন্ন জায়গায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। বৃষ্টির প্রভাবে গরম কমে আসবে। তবে চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
গত শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশ এবং সংলগ্ন উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকার একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে একই এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে এটি অবস্থান করছে। এটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও আরও ঘণীভূত হতে পারে। মৌসুমি বায়ূুর অক্ষের বর্ধিতাংশ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, পশ্চিম বঙ্গ ও সুস্পষ্ট লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
গত শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পারের ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের সৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
তাপপ্রবাহের বিষয়ে বলা হয়, ঢাকা, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, রাজশাহী, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, নীলফামারী, চুয়াডাঙ্গা এবং কুষ্টিয়া জেলাসহ ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের ওপর নিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু কিছু জায়গা থেকে প্রশমিত হতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
আজ শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরের ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ সময় রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। এ সময় সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।
আগামী রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরের ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। এসময় সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
চট্টগ্রাম বিভাগের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এদিকে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানি সমতল বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। চট্টগ্রাম বিভাগের মুহুরী, ফেনী ও গোমতী নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে। অপরদিকে হালদা, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি সমতল বাড়ছে।
আবহাওয়া সংস্থাগুলোর পূর্বাভাস অনুযায়ী, দেশে ও উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা থাকায় আগামী দুই দিন চট্টগ্রাম বিভাগের নদীগুলোর পানি সমতল দ্রুত বাড়তে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর জেলার কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। তবে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের নদীগুলোর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে।
আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্যানুযায়ী, আগামী দুই দিন উপকূলীয় অঞ্চলে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এর ফলে এই সময় বরিশাল ও খুলনা বিভাগের নদীগুলোর পানি সমতল বাড়তে পারে।
এছাড়া ব্রহ্মপুত্র-যমুনার সঙ্গে যুক্ত নদ-নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে, যা আগামী পাঁচ দিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে। আগামী তিন দিন পর্যন্ত এসব নদীর পানি সমতল ধীর গতিতে হ্রাস পেতে পারে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
সিলেট বিভাগের সুরমা ও কুশিয়ারার সঙ্গে যুক্ত নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে এবং অন্যান্য প্রধান নদীসমূহ-মনু, খোয়াই, সারিগোয়াইন, ধলাই ইত্যাদির পানি সমতল স্থিতিশীল আছে যা আগামী তিন দিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।