কসবায় ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপনকে কেন্দ্রকরে আহলে সুন্না ও হেফাজত ইসলাম সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত৫০

ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপনকে কেন্দ্র করে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ও সিরাতুন্নবী সমর্থীত হেফাজত ইসলাম সমর্থকদের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আড়াইবাড়ী মাদরাসা ও মাদ্রাসা সংলগ্ন কদমতলী মোড়ে কোরআনের ভাস্কর্য ভাংচুর করা হয়। এতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় কদমতলী মোড় থেকে টি.আলী বাড়ির মোড় পর্যন্ত। এ ঘটনায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছে। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার, সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রায় তিনঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রাখা হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) পৌর এলাকার সুপার মার্কেট  চত্তরে হেফাজত সমর্থিতদের সিরাতুন্নবী (সাঃ) উপলক্ষে দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়। অন্যদিকে সকাল ১০টার দিকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত সমর্থিতরা ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন এলাকা থেকে কসবা কদমতলী মোড়ে জড়ো হয়ে জশনে জুলুশ (র‍্যালি) এর প্রস্তুতি নেয়। এক পর্যায়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ও হেফাজত সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় আড়াইবাড়ি মাদ্রাসা ও কদমতলী মোড়ে অবস্থিত কোরআন ভাস্কর্য ভাংচুর করা হয়। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে আড়াইবাড়ি গ্রামবাসীও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে কদমতলী মোড় থেকে টি.আলী বাড়ি মোড় পর্যন্ত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

এ বিষয়ে হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রিয় যুগ্ম প্রচার সম্পাদক মাওলানা ইয়াকুব উসমানী জানান, সকাল ১০ টার দিকে পাশবর্তী টি.আলী বাড়ীর মোড় থেকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অনুসারী পুরকুইল দরবার শরীফের পীর ছদর উদ্দিন সাহেবের সমর্থিতরা এসে তাদের উপর হামলা করে এবং কোরআনের ভাস্কর্য ও আড়াইবাড়ী মাদরাসায় আক্রমন করে। পরে তাদের সাথে আমাদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়।

এ বিষয়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত সমর্থিত পুরকুইল দরবার শরীফের পীর সাহেব মাওলানা ছদর উদ্দিন বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারিনি। তার আগেই হেফাজত সমর্থিত লোকজন নিজেরাই কোরআনের ভাস্কর্য ও আড়াইবাড়ী মাদরাসায় আক্রমন করে আমাদেরকে দোষারোপ করে গ্রামবাসীকে ক্ষেপিয়ে দিয়েছে আমাদের জশনে জুলুশ বানচাল করার জন্য। আমরা মনে করছি আড়াইবাড়ি দরবার শরীফের সাথে আমাদের দূরত্ব সৃষ্টি করার জন্য এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এ ঘটনায় আমাদের বহু লোকজন আহত হয়েছে।

আড়াইবাড়ী দরবার শরীফের পীর সাহেব মাওলানা গোলাম খাবির সাঈদী বলেন, হেফাজত নেতাদের সাথে জশনে জুলুশ নিয়ে সুন্নী সম্প্রদায়ের লোকজনের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় আড়াইবাড়ি দরবার শরীফ ও আড়াইবাড়ি কামিল মাদ্রাসার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তবে জশনে জুলশকারীরা আমাদের মাদরাসা ও কদমতলী মোড়ে কোরআনের ভাস্কর্য ভাংচুর করে বলে তিনি দাবী করেন।

কসবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার বলেন, দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রাখা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.