প্রশান্তি ডেক্স ॥ বাংলাদেশে মিথ্যা হত্যা মামলায় গ্রেফতার হওয়া একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টামন্ডলীর সভাপতি শাহরিয়ার কবির, দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত ও একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল হক বাবুকে মুক্তি দিতে অন্তবর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ)। গত বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে এই আহ্বান জানানো হয়েছে।
এক্স-এ দেওয়া বার্তায় আরএসএফ বলেছে, গত বুধবার এই তিন সাংবাদিককে মিথ্যা হত্যা মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। অন্তবর্তী সরকারের প্রতি আরএসএফ আহ্বান জানাচ্ছে আটক সাংবাদিকদের মুক্তি দেওয়ার জন্য। সংস্থাটি এমন নির্বিচার গ্রেফতার বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
গত মঙ্গলবার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গৃহপরিচারিকা লিজা আক্তারকে হত্যার অভিযোগে রমনা মডেল থানার মামলায় মোজাম্মেল হক বাবু এবং শাহরিয়ার কবিরের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। অন্যদিকে গুলি করে যুবক ফজলুকে হত্যার অভিযোগে রাজধানীর ভাষানটেক থানায় করা মামলায় শ্যামল দত্তকেও সাত দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে ৩০ আগস্ট আরএসএফ এক বিবৃতিতে বাংলাদেশে অন্তত ২৫ জন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলা দায়েরের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছিল। বিবৃতিতে আরএসএফের পরিচালক অ্যান্টোইন বার্নার্ডের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছিল, এসব মামলা দেওয়ার মূল কারণ হচ্ছে সাবেক সরকারের সঙ্গে যুক্ত বলে বিবেচিত সাংবাদিকদের নির্মূল করার একটি প্রক্রিয়া এবং এগুলো একটি নতুন স্তরে পৌঁছেছে। অভিযুক্ত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য প্রক্রিয়া করা হয়েছে যা ভয়ানক আইনি মারপ্যাঁচে ঘিরে রেখেছে। এর ফলে চলমান রাজনৈতিক পরিবর্তনের বিষয়গুলোকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তবর্তী সরকারকে অবশ্যই এই জঘন্য প্রক্রিয়ার অবসান ঘটাতে হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য গত ২৯ আগস্ট যে অভিযোগটি করা হয়েছে তাতে সিনিয়র সাংবাদিকদের টার্গেট করা হয়েছে এবং এটি চলমান সিরিজ মামলার একটি নতুন পর্যায়কে চিহ্নিত করেছে।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জুলাই মাসে একজন বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর জন্য ২৫ জনেরও বেশি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। সাংবাদিকদের তালিকায় থাকা ফারজানা রুপা ও শাকিল আহমেদকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিবৃতিতে অবিলম্বে তাদের মুক্তি ও এই ভিত্তিহীন অভিযোগগুলো প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়েছিল।