জসীমউদ্দীন ইতি ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি ॥ ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসে ঠাকুরগাঁওয়ে আমনের পাকা ধানগাছ নুয়ে পড়েছে। ক্ষতির মুখে পড়েছে শীতকালীন আগাম শাকসবজিসহ বিভিন্ন ধরনের রবিশস্য। ঘরে তোলার সময় ধানগাছ নুয়ে পড়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকেরা।
গত শুক্রবার সকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলি মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসের কারণে অনেক খেতে পাকা ও আধা পাকা ধানগাছ মাটিতে নুয়ে পড়েছে। খেত থেকে পানি সরে না যাওয়ায় কেটে রাখা ধান নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া শীতকালীন আগাম সবজির খেতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সদর উপজেলার সালান্দর এলাকার কচুবাড়ী গ্রামের কৃষক আলী হোসেন বলেন, আকাশ ভালো থাকায় জমিতে পাকা ধান কেটে রেখেছিলাম শুকানোর জন্য। কিন্তু গত দুই দিন বৃষ্টি হওয়ায় এখন দুশ্চিন্তায় পড়েছি।
সালান্দর এলাকায় সামিউল ইসলাম নামের আরেক কৃষক জানান, গত বছর ধানের ভালো দাম পাননি। এ নিয়ে হতাশায় ছিলেন। গত সপ্তাহ থেকে ধান কাটা শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ঝড়-বৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ যেন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে দেখা দিয়েছে ঘূর্ণিঝড় দানা।
সদরের রায়পুর এলাকার কৃষক বেলাল হোসেন বলেন, বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসের কারণে ইতিমধ্যে তাঁদের চরম ক্ষতি হয়ে গেছে। এক একর জমিতে আগে যেখানে প্রায় ৪০ মণ ধান পাওয়া যেত, এখন সেখানে ৩০ মণ করে আসতে পারে।
১২ বিঘা জমিতে আমনের আবাদ করেছেন সদর উপজেলার নতুনপাড়া এলাকার কৃষক মনসুর আলী। তিনি জানান, ইতিমধ্যে চার বিঘা জমির ধান ঘরে তুলেছেন। আট বিঘা জমির ফসল মাঠে আছে। ঝোড়ো বাতাসের কারণে তাঁর অধিকাংশ খেতের ধানগাছ নুয়ে পড়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার পাঁচ উপজেলায় চলতি বছর আমন ধান চাষ হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে বিভিন্ন আগাম জাতের ধান আবাদ হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসে যেসব খেতের ধানগাছ নুয়ে পড়েছে, সেসব ধান দ্রুত কাটার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। বৃষ্টি আর না হলে ধানের বেশি ক্ষতি হবে না।