কসবা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের উদাসিনতায় এক স্কুল শিহ্মার্থীর মৃত্যু

ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ বিষধর সাপের কামড়ে আক্রান্ত বাকপ্রতিবন্ধী স্কুল পড়ুয়াকে এক শিশু শিহ্মার্থীকে  কসবা উপজেলা  স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে  যাওয়ার  পরেও এন্টিভেনম না দিয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে ঈসাদ ভূইয়া নামক শিক্ষার্থীর অকাল মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।  মারা যাওয়া শিশুটির বয়স দশ বছর। সে উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের পানিয়ারুপ গ্রামের মানসিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী আমিন ভূইয়ার ছেলে।

জানাযায়, গত রবিবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার পানিয়ারুপ গ্রামের বাড়ির কাছেই খেলাধুলা করার সময় বিষধর সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয় শিশু ঈসাদ।শিশুটি কিছুটা বাক প্রতিবন্ধী হওয়াতে বাড়িতে তেমন কিছু বলতে পারছিলো না। তার চিৎকার ও কান্নাকাটির পরে বাড়ির লোকজন  শিশুটির পায়ে সাপের কামড়ের দুটি খোচাঁ ক্ষত দেখে বুঝতে পারেন তাকে সাপে কামড় দিয়েছে। তখন বেলা দুইটার দিকে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয় শিশুটিকে। জরুরী বিভাগের  চিকিৎসকগন এন্টিভেনম সরবরাহ নাই জানিয়ে চিকিৎসা সেবা ও রেজিস্টার খাতাম নাম এন্টি না দিয়ে কুমিল্লায় রেফার্ড করে দেন। এসময় কসবার বিভিন্ন ফামের্সীতে এন্টিভেনম পাওয়া যায়নি বলে জানান নিহতের স্বজনেরা ।

নিহত শিশুটির স্বজন পানিয়ারুপ গ্রামের মোঃ পলাশ মিয়া জানান, শুরুতে কসবা পরবর্তীতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষনা করেন।বিসধর সাপের কামড়ে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই চিকিৎসক।তিনি আরো বলেন, শিশুটির বাবা আমিন ভূইয়া (৪০) মানসিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধি। ঈসাদও কিছুটা বাক প্রতিবন্ধি ছিল।

এদিকে গত সোমবার বিকেলে কসবা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ইমারজেন্সি কক্ষে একজন উপসহকারি মেডিকেল অফিসার থাকলেও আধিপত্য নিয়ে আছে মোঃ শাহিন নামে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মচারি।বিষধর সাপে নিহতের কথা জানতে চাইলে শাহিন বলেন আমাদের এখানে সাপে কাটা কেউ আসেনি।শাহিন কোন পদে চাকরি করেন জানতে চাইলে সে কোন কথা বলেনি।পরে জানা যায় সে নাইট গার্ড।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নিজাম  উদ্দিনের কাছে আনতে চাইলে তিনি জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত এন্টিভেনম আছে। একই কথা বলেছেন ওইদিন দায়িত্বে থাকা ডাঃ আকিব ইকরাম। ডাঃ আকিব ইকরাম জানান , ওই সময় তিনি বাসায় ছিলেন। ইমারজেন্সি থেকে বিষধর সাপে কাটা রোগী এসেছে কিনা আমাকে জানানো হয়নি। তিনি আরও বলেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এন্টিভেনম মজুত আছে।

পরে গত সোমবার বিকেলে পানিয়ারুপ গিয়ে দেখা যায়, নিহত ঈসাদ ভূইয়ার বাড়িতে শোকের মাতম।মা-বাবা দুজনই প্রতিবন্ধি। ফুফু সেলিনা আক্তার জানান,আমাদের বংশে একমাত্র পুত্র সন্তান ঈসাদ ভূইয়া। দুপুর দুইটার সময় আমরা তাকে নিয়ে স্থানীয় মা মনোয়ারা ক্লিনিকে গেলে তারা আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। মা মনোয়ারা ক্লিনিক থেকে মাত্র ১মিনিটের দূরত্ব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।সেখানে নেয়ার পর কর্তব্যরত লোকজন আমাদের জানান তাদের কাছে সাপে কাটার এন্টিভেনম নেই।আমরা তখন তাদের পরামর্শে কিুমল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। পথে ঈসাদ দুবার বমি করে। কসবা থেকে কিুমল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে দুঘন্টা সময় ব্যয় হয়। কিুমল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইর্মাজেন্সিতে র্কতব্যরত চিকিৎসক তখন ঈসাদকে মৃত ঘোষনা করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.