হ য ব র ল

সবই যেন এখন হযবরল বা লেজে গোবরে পরিণত হতে যাচ্ছে। চারিদিকে যা দেখা যাচ্ছে তাই আমার কাছে হযবরল মনে হচ্ছে। দেশে এবং বিদেশে এই একই অবস্থা বিরাজমান রয়েছে বলে প্রতিয়মান হয়েছে। এই হযবরল অবস্থার জন্য দায়ী কারা এই প্রশ্ন এখন সকলের মনে উকি মারতে শুরু করেছে। তাই সময় এখনও রয়েছে এই হযবরল অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে। তাই সকলের নিকট বিনয়ী আহবান নূন্যতম ঐক্য ধরে রেখে হযবরল অবস্থান থেকে বের হয়ে আসুন। নতুবা আরো বড় ধরনের অশনিসংকেত মোকাবিলা এবং পরাস্ত হওয়ার আশংকা সৃষ্টি হচ্ছে।

রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং একে অন্যকে অবিশ্বাস ও ঘৃনা এই হযবরলতে সহায়ক ভুমিকা পালন করে কার্যকরি টনিক হিসেবে কাজ করছে। যারা ক্ষমতায় আছে এবং যারা এই ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করানোর কারিঘর এই দুইয়েই যেন এখন এক হযবরল অবস্থান বিরাজমান রয়েছে। সকলের নূন্যতম চাহিদার যোগানে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকলকে নিয়ে (কাউকে বাদ দিয়ে নয়) সামনের কঠিন সময় পার করতে হবে। সকলের সমন্বয়েই আগামীর বাংলাদেশ বির্নিমান সহজলভ্য হবে। কাউকে বাদ দিয়ে হওয়ার সম্ভাবনাটুকু ম্লান হয়ে এখন বিলিনের পথে। যারা যারা অপরাধি তারা বিচারের আওতায় আসছে এবং আসবে আর আইন তাঁর নিজস্ব গতিতে বহমান থাকবে। সেই আলোকে বিচার সুসম্পন্ন হবে। বিচারের আগে যেন কারো বিচার না করা হয় এবং ক্ষমতা ও শক্তির মহড়াও যেন না দেওয়া হয়। এইগুলো গুনেধরা এবং পতবে ভরা। এর কারণেই কিন্তু সাবেক সৈরাচারখ্যাত সরকারের করুন পরিণতি প্রত্যক্ষ্য রয়েছে। এর থেকেও আমাদের শিক্ষা নেয়া দরকার।

প্রশাসনে এমনি সরকারী অফিসগুলোতে হযবরল অবস্থার কারণে কাজগুলো সঠিক সময়ে হচ্ছে না এবং কাজের জটলা তৈরী হয়ে দেশের সকল অগ্রগতি পিছপা হচ্ছে। তাই এখনই এই বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দিয়ে পদক্ষেপ নেয়া জরুরী। দায়িত্ব নিয়ে কাজ করানোর সময় এখন। গড়িমসি বা অন্যের আশায় বা এখন চলতি সময়ে প্রচলিতভাবে উপরের নির্দেশ পাওয়ার আশায় দেরি করা বা গাফিলতি করার দায়ে প্রাতিষ্ঠানিক সাজা চালূ করা জরুরী হয়েছে পড়েছে।

ভিসা অফিসের মনগড়া আচরণে দেশী ও বিদেশী সকলেই এখন আস্থা হারানোর পথে এবং বিদেশীরা এই বাংলাদেশ থেকে বিমুখ হওয়ার দ্বাড়প্রান্তে। ভিসা এবং ওয়ার্কপারমিট ও সিকিউরিটি আর ভিসা ফি জটিলটা কাটানোর জন্য আশু পদক্ষেপ নেয়া জরুরী। ভোক্তভোগিরা উপযুক্ত ব্যক্তি বা স্থানের অভাবে প্রতিকার চাইতে পারছে না। হয়ত একদিন বিদেশীরাও তাদের ন্যায্য দাবী আদায়কল্পে রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে। কারণ একই ব্যক্তি এবং তার পরিবারের এক বছরের ভিসা ফির স্থলে দুই বছরের ভিসা ফি এমনকি সঙ্গে জরিমানা গুনতে হচ্ছে যা সম্পূর্ণই অবৈধ। আর এই অবৈধ অন্যায়ের দায় সরকার এবং রাষ্ট্রের কাধেই বর্তায়। ধরুন একজন ব্যক্তি তার ওয়ার্ক পারমিট এর আবেদন দিয়ে ভিসার আবেদন করেছে। আবেদনের দুইদিনের মাথায় ওয়ার্ক পারমিট পেয়েছে এবং সেই ওয়ার্কপারমিট ভিসা অফিসে জমাদান করা হয়েছে। কিন্তু সেই ব্যাক্তিকে তিনমাসের ভিসা দিয়ে দেয়া হচ্ছে। এটার কোন যৌক্তিকা কারণ আছে কি? তারপর পুনরায় আবার ভিসার আবেদন করে নিজ এবং পরিবারের সকলের ভিসা নেয়া হচ্ছে  আর সেই পরিবারের ১ বছরের ভিসার জন্য দুইবছরের ভিসা ফি দিতে হচ্ছে  এবং (এমনকি এনজিও’র ক্ষেত্রে সিকিউরিটির দেরির ফাদে পড়ে ) এতে জবাবদিহিতার কাঠগড়ায় সরকারকে ফেলেছে। কারো কারো ক্ষেত্রে এমনও হয়েছে যে, দুই বছরের ভিসা ফি দিয়ে একজন দুই বছরের এবং আর একজন ১৫ মাসের ভিসা পেয়েছে এবং কোন জবাবদিহিতা না থাকায় তাদেরকে হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে। এর দায়ও কিন্তু রাষ্ট্রের কাধে বর্তায়। এই বিষয়ে আরো অনেক জটিলতা রয়েছে তাই এই ষ্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বসে একটি যৌক্তিক সমাধান আশু কাম্য। এই ব্যাপারে আমাদের সহযোগীতা অব্যাহত থাকবে। 

স্কুল ও কলেজ বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ায় ফিরিয়ে নিতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করুন। আন্দোলন এবং সংগ্রাম তাদের জীবনের বারোটা বাজাচ্ছে এমনকি রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রযন্ত্রের এমনকি সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। এই বিষয়টি এখন গুরুত্বপূর্ণ। আর এই বিষয়টি দমনে কঠের থেকে কঠোর হওয়া জরুরী। তবে এই ক্ষেত্রে ছাত্র, শিক্ষক ও অভিভাবক সমন্বয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহন অত্যাবর্শকীয় হয়ে পড়েছে। দৃশ্যমান অবস্থার উন্নয়ন আশু কাম্য।

চাকরির বেতন সময়মত না পাওয়ার অভিযোগ শুনতে শুনতে কান তালামেরেছে। আন্দোলন দেখতে দেখতে চোখ বন্ধ হয়েছে। কিন্তু এর কোন সুরাহা হয়নি এবং আদৌ হওয়ারও সম্ভাবনা দেখিনা। তাই এর পিছনের কারনগুলো চিহ্নিত করুন এবং ঐ কারণগুলো সমাধানে কাজ করুন। মালিক, শ্রমিক এবং সরকার আর সঙ্গে ক্রেতাকে যুক্ত করে এর স্থায়ী সমাধান করুন। নতুনা অল্প আগুনের আচ থেকে বৃহৎ পরিসরে ধাও ধাও করে ঝালিয়ে পুড়িয়ে ছাড়খাড় করে দিবে।

সকলকেই বলব আমি থেকে আমরাতে পরিণত হউন। আমরা ও আমাদের বন্ধন সুদৃঢ় করুন। সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদ নিয়ে তাঁর অভিপ্রায় বাস্তবায়নে অগ্রসর হউন। নিজস্ব চিন্তা চেতনা এমনকি ভাবনা থেকে বের হয়ে সামগ্রিক ও সামষ্টিক চিন্তা চেতনায় মনোনিবেশ করুন। কাউকে হেয় নয় এমনকি কাউকে ছোট করে অথবা ক্ষতি করে নয় বরং সকলকে ভালবেসে ক্ষমা ও ভালবাসায় সকলের জন্য একযোগে কাজ করুন।

প্রশ্ন হলো সকলের জন্য কাজ করলের কেন এতে অনৈক্য ও মতানৈক্য? সকল রাজনৈতিক দল ও মতের লোকেরাইতো জনকল্যানে এমনকি সকলের তরে দেশমার্তৃকার কল্যাণে কাজ করতে চাই তাহলে কেন এত বৈষম্য? এই বিষয়গুলোর ফয়সালা হওয়া জরুরী। তবে পুরাতনদের বার বার পরীক্ষা করা হয়ে গেছে কিন্তু নতুনদের এখন কোন পরীক্ষায় পড়তে হয়নি। তাই যারা এখন নতুন এবং তরুন তারা বর্তমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে আগামীতে হয়তো নতুনের জয়গানও জাতিকে গাইতে হতে পারে। আর যদি বর্তমানের ভাবমূর্তী এবং সেবার ধরনে পুরানো গতানুগতিক ভাবধারা মুর্তিমান হয় তাহলে জনগণ ভাববে কোথায় ফিরে গেলে মন্দের ভাল হয়। সেই আশার গুরেবালি হউক এই কামনা করি। নতুনের কেতন উড়ে পৃথিবীময় শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তার বলয় তৈরী হউক। সকল হযবরল দূর হউক এই কামনাই করি এবং আগামীতে আরো কিছু নিয়ে হাজির হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.