প্রশান্তি ডেক্স॥ অগ্রহায়ণ মাস শেষ হতে আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। এরপরেই শুরু হবে পৌষের হাড়কাঁপানো শীত। অবশ্য হেমন্তের শুরু থেকেই হিমালয়ের কোলঘেঁষে অবস্থিত উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে শীতের আবহ বিরাজ করছে। আর এখন তো কনকনে শীত পড়ছে জেলাটিতে। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত কনকনে শীতে নাকাল উত্তরের এ জেলা। গত দুই দিন তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও কমেনি শীতের দাপট। আজও জেলার তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রির ঘরে।
গত শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় রেকর্ড হয়েছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিনের তুলনায় সামান্য তাপমাত্রা বাড়লেও অব্যাহত রয়েছে শীতের প্রকোপ।
পঞ্চগড়ের প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ জানান, দু-দিন ধরে তাপমাত্রা বেড়ে ১২ ডিগ্রির মধ্যে রেকর্ড হচ্ছে। গত শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তাপমাত্রা ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। আজও কিছুটা কুয়াশা দেখা গেছে।
ভোর থেকে বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায় হালকা কুয়াশা। কুয়াশা ভেদ করে সূর্য উঠলেও ঝলমলে রোদের সকাল নেই। প্রকৃতিজুড়ে দেখা গেছে হালকা কুয়াশাচ্ছন্ন প্রকৃতি। তবে প্রভাব পড়ছে না কাজকর্মে। সকালেই কাজে যেতে দেখা গেছে দিনমজুর, পাথরশ্রমিক, চা-শ্রমিক, কৃষক থেকে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষজনকে।
পাথরশ্রমিক কামাল, নাসিরসহ কয়েকজন জানান, গত কয়েকদিন ঝকঝকে সকাল দেখা গেলেও গত শুক্রবার ভোরে কিছুটা কুয়াশা পড়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত বেশ ঠান্ডা লাগে। তারপর আর ঠান্ডা নাই। কিন্তু সকালে কাজে বের হলে শীত বেশি মনে হয়। কাজে যেতে মন না চাইলেও পরিবারের কথা চিন্তা করে কাজে যেতে হয়।
ভ্যানচালক আরশাদ আলী, তৌফিক ও আলমাস জানান, শীতের কারণে ভ্যানে অনেকেই চড়তে চায় না। যারা শ্রমিক, তারা দূরে গেলে ভ্যানে চড়েন। খুব ঠান্ডা লাগে। অনেক সময় জ্বর-সর্দি, কাশি হয়। কিন্তু কী করার, সংসার তো চালাতে হবে।
স্থানীয়রা বলছেন, সন্ধ্যার পর থেকেই শুরু হয় ঠান্ডা বাতাস। রাত বাড়তে থাকলে বাড়ে কনকনে শীতের প্রকোপ। সাধ্য অনুযায়ী শীত নিবারণে লেপ, কম্বল, তোশক ও কাঁথা নিতে হচ্ছে রাতে। সকাল ৯টার পর থাকছে না ঠান্ডার প্রভাব। দিনে-রাতে দুই রকম আবহাওয়ার কারণে প্রায় ঘরে ঘরে জ্বর-সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছে মানুষ।
জেলার পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে বেড়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগীর ভিড়। শিশু ও বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসকরা শীতে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় পরামর্শসহ চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন।