প্রশান্তি ডেক্স ॥ রমজান মাস এলেই রাজধানী ঢাকার মেট্রোরেলে যাত্রীদের চাপ কয়েক গুণ বেড়ে যায়। বিশেষ করে ইফতারের আগে এই ভিড় চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। কর্মব্যস্ত মানুষের সঙ্গে শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এ সময় মেট্রোরেলে উঠতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। ফলে স্টেশনে দেখা দেয় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি।

গত মঙ্গলবার (৪ মার্চ) তৃতীয় রোজার দিন রাজধানীর উত্তরা, আগারগাঁও, ফার্মগেট ও মতিঝিলসহ বিভিন্ন স্টেশনে ঘুরে দেখা যায়, ইফতারের আগ মুহূর্তে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। যাত্রীরা জানান, ইফতারের আগে গন্তব্যে পৌঁছাতে সবাই দ্রুত মেট্রোরেলে ওঠার চেষ্টা করেন, এতে স্টেশনে দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। একটি ট্রেন আসার পর যাত্রীরা একসঙ্গে উঠতে চায়, ফলে দরজার সামনে প্রচণ্ড ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। এতে করে অনেকেই ট্রেনে উঠতে পারেন না।
মেট্রোরেলে উঠতে পারলেও গাদাগাদি করে দাঁড়ানো যাত্রীদের মধ্যে কেউ কেউ কষ্ট করে ছোট্ট জায়গায় নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করেন। অনেকে হাতল বা সিট ধরে ঝুলে থাকেন, অনেক সময় ভিড়ের কারণে দরজা পর্যন্ত বন্ধ হতে দেরি হয়।
ওঠানামা যেন যুদ্ধ
মিরপুর ১০ স্টেশনে অপেক্ষমাণ এক যাত্রী ইউসুফ রানা বলেন, ‘আমি প্রতিদিন সন্ধ্যার সময় অফিস শেষে মেট্রোরেল ধরি। কিন্তু রমজানে ইফতারের আগে ভিড় এতটাই বেড়ে যায় যে উঠতে পারবো কিনা সে নিয়েই দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়।’
অন্য এক যাত্রী আরিফুল হক বলেন, ‘ট্রেনে ওঠার পর স্বস্তি পাই না, গাদাগাদি অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এক হাতে ব্যাগ, অন্য হাতে হ্যান্ডেল ধরারও সুযোগ পাই না।’
সুফিয়া ইসলাম নামে আরেক নারী যাত্রী বলেন, ‘নারীদের জন্য আলাদা কোচ থাকলেও সেটাতে জায়গা পাওয়া মুশকিল হয়ে যায়। তাছাড়া, পুরুষদের গাদাগাদির কারণে স্টেশনে ওঠানামাও কঠিন হয়ে যায়।’
ট্রেন বাড়ানোর দাবি
চাপ ও ভোগান্তি কমাতে ট্রেন বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন যাত্রীরা। তারা বলেন, দুই ট্রেনের মধ্যবর্তী সময় কমিয়ে আনলে দ্রুত সময়ে স্টেশন খালি হয়। অন্যথায় লম্বা সময় অপেক্ষার কারণে প্ল্যাটফর্মে যাত্রীর চাপ বাড়তে থাকে।
রবিউল ইসলাম নামে এক যাত্রী বলেন, ‘রোজায় যাত্রী চাপ বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। গত দুই বছর ধরে দেখে আসছি এই চিত্র। এই সময়ে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।’
একই দাবি জানিয়ে আরেক যাত্রী আবির হোসেন বলেন, ‘ইফতারের সময় তো ফিক্সড। এই সময়ের মধ্যেই আমাদের তাড়া থাকে বাসায় ফেরার। তাই সরকার চাইলে বিকালে ট্রেন বাড়াতে পারে।’