‘তারেক অথর্ব, অযোগ্য ও লোভী’

বা ই॥ দলের দু:সময়ের কান্ডারী তিনি। ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত প্রায় হারিয়েই গিয়েছিলেন। সুবিধাভোগীরা যখন সটকে পড়ে তখন তিনি আলো ছড়ান। ৮০র দশকে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে রাজনীতিতে তিনি আলোচিন হন। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তিন জোটের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন তিনি। দুই নেত্রীর বৈঠকে তিনি ছিলেন অন্যতম উদ্যোক্তা। ৯১ এ বিএনপি ক্ষমতায় এলে তিনি প্রথম প্রতিমন্ত্রী, তারপর পূর্ণমন্ত্রী হন। ১৯৯৬ এ বিএনপি বিরোধী দলে গেলে ক্রমশ দলে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। অনেকেই মনে করেন, তাঁর সহধর্মিনী শেখ হাসিনার সহপাঠী হবার জন্যই তিনি বিএনপিতে অবিশ্বাসের ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছিলেন। ২০০১ এর নির্বাচনে তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। ২০০৭ সালে বেগম জিয়া গ্রেপ্তার হলে তিনি আবার সক্রিয় হন। দলের সিনিয়র নেতারা ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ করলেও তিনি খন্দকার দেলোয়ারকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন। বেগম জিয়ার অন্যতম আইনজীবী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ এর জ্বালাও পোড়াও রাজনীতির পর তিনি গ্রেপ্তার হন। জেল থেকে বেরিয়ে ঘরেই নিজেকে বন্দী করে রেখেছেন। স্থায়ী কামিটির সদস্য। ওই কমিটির বৈঠক ছাড়া দলের কোনো কর্মসূচিতে তিনি থাকেন না। কারণ কী? উওরে ঘনিষ্ঠদের বলেছেন, ‘অসৎ ও নীতিহীনদের নেতৃত্বের কারণেই তিনি রাজনীতিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।‘ তারমতে ‘বিএনপির নেতৃত্ব ত্যাগী কর্মী চায় না, দুর্বৃত্ত ও চাটুকারদের চায়। বিএনপি এখন দুর্বৃত্ত ও চাটুকাররা শাসন করছে।‘
ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া। স্বনামধন্য আইনজীবী, সজ্জন মানুষ। রাজনীতিতে নীতিবান এবং কর্মঠ ব্যক্তি হিসেবে সুখ্যাতি রয়েছে। মনোনয়ন বাণিজ্যের বিরুদ্ধে ২০০১ এ যারা প্রথম প্রতিবাদ করেছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া। কানাঘুষা আছে, ২০০১ এর নির্বাচনে তাঁর আসনে একজন ধনাঢ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিয়ে তারেক বেশ মোটা অংকের টাকা হাসিল করেছিলেন। রাগে, ক্ষোভে অভিমানে দূরে চলে যান রাজনীতি থেকেই। আইন পেশায় মনোনিবেশ করেন। ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেন ওলট-পালট করে দেয় বিএনপিকে। সিনিয়র সব নেতারা সংস্কারপন্থী হয়ে বেগম জিয়ারই অবসর চান। এসময় আবার সক্রিয় হন ব্যারিস্টার মিয়া। এসময় তাঁর আত্মীয় স্বজন বাধা দিয়েছিল, কিন্তু তিনি বলেছিলেন, ‘আমার দায়িত্ব আমাকে পালন করতেই হবে।‘ বেগম জিয়া তাঁকে পছন্দ করলেও, তারেকের অপছন্দের তালিকায় তিনি। তারেক জিয়াকে ব্যারিস্টার রফিক ‘একজন অর্থব, অযোগ্য ও লোভী’ রাজনৈতিক নেতা মনে করেন। তিনি মনে করেন, ‘বিএনপির অবস্থার জন্য তারেক এবং তার সাঙ্গপাঙ্গরাই দায়ী।
দলের নিবেদিত কর্মীরা তাঁকে দলের কর্মসূচিতে চায়। তাঁর সঙ্গে দেখা সাক্ষাতও করে। তাঁদের তিনি জানিয়ে দেন ‘বিএনপির রাজনীতিই তো ঠিক নেই। আগে রাজনীতি ঠিক হোক, তারপর দেখা যাবে।‘

Leave a Reply

Your email address will not be published.