ভজন শংকর আচার্য, কসবা(ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ কসবা পৌরসভার কাঞ্চনমুড়ি গ্রামে সোহাগ নামক এক ২০ বছর বয়সের যুবকের পায়ে পচন ধরায় তার বসবাসের জায়গা হয়েছে খোলা আকাশের নিচে একটি গাছের সাথে একটি বাশের মাচায়। মাথার উপর চট দিয়ে ছাউনির মতো থাকলেও রোদ বৃষ্টি ঝড়ে কোনো কাজ হয়না।
খোজ নিয়ে জানা যায় সোহাগের বাবা রিকসা চালক কুদ্দুস মিয়া। সংসারে ৪ বোন ১ ভাই। রিকসা চালিয়ে কোনো রকমে জীবিকা নির্বাহ করে। গত বছর পায়ের গোড়ালিতে ব্যাথা পেয়ে সোহাগ পঙ্গু হয়ে যায়। গ্রামবাসী ১১ হাজার টাকা সাহায্য করলে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করতে যায়। সেখানে ডাক্তার পরীক্ষা-নিরিক্ষা দেয়ায় পর টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় পরীক্ষা হয়নি। ফলে বাড়িতে ফিরে এসে কবিরাজি ও টুটকা চিকিৎসা করে। গত তিনমাস পূর্বে পায়ে পচন ধরে টিটেনাস হয়ে গেলে ভাড়া বাড়িতে বাড়িওয়ালা তাকে ঘরে থাকতে দেয়নি। পরে তার স্থান হয়েছে বাড়ির বাহিরে গাছতলায়।
গত বুধবার ২৬ জুলাই বিকেলে অর্গানাইজেশন ফর ডেস্টিটিউট পিপলস নামক এনজিও চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম বাচ্চু সহ এ প্রতিবেদক সোহাগকে কাঞ্চনমুড়ি গ্রামে দেখতে গেলে গ্রামের লোকজন জানায় তাকে চিকিৎসায় জন্য গ্রামবাসী ১১ হাজার টাকা সাহায্য তুলে দিয়েছে। সামসু মিয়ার বাড়িতে একটি কক্ষে ভাড়া থাকে সোহাগের মা,বাবা,ভাই,বোন সহ পরিবারের সদস্যরা। সেখানে গাদাগাদি করে তার পরিবারের জীবন যাবন। ঘরটির অন্যান্য কক্ষে আরো ভারাটিয়া থাকায় কেউই সোহাগের পায়ের পচনের দূর্গন্ধ সহ্য করতে নারাজ। তাই তার স্থান হয়েছে গাছ তলায়। গত তিনমাস যাবত গাছতলায় মানবেতর জীবন-যাপন করছে সোহাগ।
সোহাগ জানায় “ কেউ আমার কাছে আসেনা। খাবার যোগার করতে পারলে তার মা খাবার নিয়ে আসে। প্রায়ই না খেয়ে থাকতে হয়। সোহাগ জানায় ডাক্তার বলছে তার পা’টি কেটে ফেললে সে ভালো হয়ে যাবে। সোহাগের আকুতি আমাকে বাঁচান। এক পা নিয়েই আমি কাজ করে খাবো। এ সময় সোহাগের বাবা-মাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। গ্রামের লোকজন জানান বাবা শহরে রিক্সা চালাতে গেছে। অন্যদিকে মা গিয়েছে আত্মিয় বাড়িতে। এবছর গাছের চারা না লাগিয়ে ওই টাকা দিয়ে সোহাগকে চিকিৎসা করার ঘোষনা দেন বে-সরকারী সংস্থা ওডিপি’র চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম বাচ্চু। তিনি সোহাগকে ঢাকা পঙ্গুতে নিয়ে যেতে চান।