তাজুল ইসলাম নয়ন॥ প্রত্যেকটি সন্তানই তার বাবা এবং মায়ের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এবং অবয়াবব নিয়ে পৃথিবীতে বেঁচে থাকে। বাবা মায়ের শিক্ষায় শিক্ষিত হয়। আদর্শ এবং শিক্ষা সবটুকুই পায় মা এবং বাবার কাছ থেকে। বাবা মায়ের রক্তের মাধ্যমেই গঠিত হয় দেহ, মন মানষিকতা এবং জীবন। জীবনের প্রতিটি স্তরেই বাবা মাকে অনুসরণ করেই অগ্রসর হবে তার সন্তান এটাই কাম্য। হয়েছেও তাই। মাঝে মাঝে আবার বলতে শুনা যায় বাপ কা বেটা শিপাই কা ঘোড়া। তবে বাবার ইচ্ছার বা আদর্শের বাইরে গেছে এমন দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে বিরল। সন্তান কুপথে বা বিপথেও যদি যায় তাও আবার পাবিবারিক এমনকি বাপ মায়ের শিক্ষার কারণেই হয়। সু পথে বা ভালর দিকেও যদি যায় তাও বাবা মায়ের শিক্ষার কারণেই হয়। এই দুটোতেই বাবা মায়ের ভুমিকা দৃশ্যমান।
তা যদি না হত তাহলেতো আর বাবা মায়ের পরিচয়ই পৃথিবীতে থাকতো না। রক্ত পরিক্ষার বা ডি এন এ পরিক্ষার দরকার হতো না। বংশ এবং রক্ত কথা কয়। এই বিষয়গুলো অতীতেও ছিল এবং বর্তমানেও আছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরসূরী আর সেই জন্যইতো দেশের মানুষ পেয়েছে গতি এবং নিরাপদ আশ্রয়। আগামীর সুন্দর এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজের ক্ষেত্রেও বংশ বা রক্তের যাচাই বাছাই গুরুত্বপূর্ণ। খারাপ রক্তের ধারক ও বাহক সারা জীবনই খারাপ কাজ করবে বা খারাপ কাজের ইন্দন জোগাবে। আর ভাল সব সময়ই ভাল কাজ করবে বা ভাল কাজের ইন্দন জোগাবে। তবে এই ক্ষেত্রে সতর্ককতা অবলম্বন প্রয়োজন। মাঝে মাঝে ভাল থেকেও খারাপ কিছুর উদয় হয়। আর সেই ক্ষেত্রে আমাদের সামাজিক এবং পারিবারিক এমনকি রাজনৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষার খারাপ দিকই দায়ী হতে পারে। কারণ ভাল মানুষকে এ সমস্ত কম্পোনেন্টগুলোর আদলে শয়তান ব্যবহার করে থাকে। অপরদিকে খারাপ থেকেও ভাল কিছুর উদয় হয়। তা গুনিতক হারে খুবই নগন্য। তবে ঐ খারাপ থেকে যে ভাল কাজটুকু হয় তা হলো আমাদের সমাজের, রাজনীতির এবং ধর্মের এক্যমত এবং সামষ্টিক ভাল ফলের প্রভাবে। এই প্রভাব যদি সর্বত্র বিরাজমান থাকে তাহলে হয় কিছু ক্ষেত্রে খারাপ থেকেও ভাল কিছু আশা করা যায়।
এবার আসা যাক যুদ্ধাপরাধী, বঙ্গবন্ধুর খুনী, রাজাকার, আল বদর, আল শামস্্ এবং দেশীয় ষড়যন্ত্রকারীদের রক্তের উত্তরাধীকারীদের কাউকেই বিশ্বাস করা যায় না। যদিও তারা সাময়িক ভাবে কোন কোন কারণে ইতিবাচক ভুমিকা রাখে অথবা ভাল কাজ করে কিন্তু সার্বিকভাবে তারা ঐ ষড়যন্ত্রের সুযোগ প্রত্যাশি। যখন সুযোগ পাবে তখন উপযুক্ত প্রতিশোধ নিবে। তাদের এখনের যে মনোভাব তা হলো সুই হয়ে ঢুকা আর ফাল হলে বেড় হওয়ার সামিল। কোন সুস্থ্য মস্তীস্কের বিবেক প্রসুত মানুষ বিশ্বাস করতে পারে না যে যুদ্ধাপরাধীর সন্তান তার বাবার প্রতিশোধ নিবে না বা তার বাবার বিরুদ্ধে থেকে আজিবন কাজ করবে। যদি কেউ তা প্রমান করতে পারে তাহলে আমি মনে করবো সে পৃথিবীর কোন মানুষ নয় সে মহামানব এবং সে একজন প্রকৃত খৃষ্ট্রান। তবে আমার বা আপনার কারোরই ভাবার কোন কারণ নেই যে, পৃথিবীতে এই দৃষ্টান্ত বাস্তবে রূপলাভ করবে। কারণ যুদ্ধাপরাধি, বঙ্গবন্ধুর খুনি এবং রাজাকার, জামাতি ও বি এনপির অনুসারিরা কোনদিন আওয়ামী লীগ হবে না। যদি কোন কারণে হয় তা খুবই সাময়িক এবং প্রয়োজনের সময় তাকে খুজে পাওয়া যাবে না। আর সে যদি কোন কারণে একদিনের জন্যও সুযোগ পায় তাহলে দলের ও দেশের এমনকি ভবিষ্যত কান্ডারীদের বারোটা বাজিয়ে মনোখায়েশ পূর্ণ করবে। ইতিহাস এবং বাস্তবতা এরকমই স্বাক্ষ্য দেয়। যুগ যুগ ধরে এই এই শিক্ষাই ছিল; কিন্তু সেই শিক্ষার আলোকে আমরা সতর্ক হইনি বিধায় বার বার আমাদের করুন পরিণতির স্বীকার হতে হয়েছে। এখনও কি আমরা ইতিহাস এবং বাস্তবতার দৃশ্যমান শিক্ষা থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছি। যদি তাই হয় তাহলে বলতে হয় সামনে আমাদের অশনি সংকেত বাজছে। সাবধান হতে বিলম্ব করা যাবে না। কারণ এই অশনি সংকেত থেকে জাতিকে এবং দেশকে এমনকি আমাদের আশ্রয় ও আশা ভরসার স্থল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে যে কোন মূল্যে রক্ষা করতে হবে। কারো কথা শুনে বা উদার পরামর্শ মুনে ইতিহাসের ও বাস্তবের শিক্ষা থেকে বের হলে চলবে না। বরং সেই শিক্ষার আলোকে আরো সতর্ক হয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
আমি মনে করি আমার চেয়ে বেশী জ্ঞানী দেশের প্রত্যেকটি মানুষ। যারা ৬৯, ৭১ থেকে আজ অব্দি ভাল মন্দ সবই দেখেছেন এবং সেই নিরীক্ষার আলোকে এখন নিজেদেরকে উন্নয়নের গণ জোয়ারে সম্পৃক্ত করেছেন। তবে আমাদের আদর্শ জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু এবং সেই আদর্শে রয়েছে স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের সুযোগ। সেই সুযোগ যেন আমরা বুদ্ধিমত্তার সহিত কাজে লাগাই। ভুল হওয়া স্বাভাবিক এবং মানুষের ভুল হয়ই আর ভুল থেকেই শিক্ষা নিয়ে মানুষ এগিয়ে যাবে। তবে এমন ভুল আর কখনো করবো না; যে ভুলের খেসারত দিতে হয়েছে এবং হবে আজীবন। সেই ভুলের পুনরাবৃত্তিও ঘটতে দেয়া যাবে না। জাতির সেই ভুলেই কিন্তু হারিয়েছিলাম আমাদের অভিভাবক এবং বাঙালী জাতির পিতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জুলিওকুড়ি ওপাধিপ্রাপ্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। সেই থেকে দিশাহীন জাতি কান্ডারীর খুজে ফিরেছে দ্বারে দ্বারে কিন্তু কেউ সেই কান্ডারী হতে পারেনি। কিন্তু আজ জাতি খুজে পেয়েছে সেই কান্ডারী আর সেই জন্য তরী এগিয়ে চলেছে গন্ডর্ব্য।ে আসুন আমরা গন্তব্যে পৌঁছার লক্ষ্যে কান্ডারীর সঙ্গে থেকে গভীর ষড়যন্ত্রের মধ্যে, চরম উৎরাই পার হয়ে গন্তর্ব্যে পৌঁছি।
আমাদের মাঝে বিভেদ এবং খুনসুটি লেগেই আছে। মাঝে মাঝে প্রকাশিত হয়। তা দেখতে ও শুনতে বেডপ লাগে। আর সেই বেডপ থেকে শত্রুরা সুযোপ পায় আমাদের মাঝে আরো ফাটল ধরিয়ে তাদের খারাপ উদ্দেশ্য এবং ফায়দা খাসিল করতে। ভাই, বন্দু, বোন এবং সম্মানীত ও পুজনীয় ব্যক্তি সকলকেই বলছি ক্ষুদ্র স্বার্থ এবং খুনসুটির বিষয়গুলো ছেড়ে বরং ভবিষ্যত নিয়ে ভেবে জাতীর কান্ডারীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। কেউ ভুল বললে বা লিখলে বা সামাজিক গালি দিলেও ঐ নির্বোদের মতো কাজ যেন আমাদের দ্বারা না হয়। বরং ঐ নির্বোধকে উপযুক্ত জ্ঞান দিয়ে কাজে লাগিয়ে নিজের বাহুবন্ধনে রেখে অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাই হবে বুদ্ধিমান এবং জ্ঞানী অভিভাবকের কাজ। দল থেকে বহিস্কার, হামলা ও মামলা দিয়ে দলীয় বা পরিবারের সদস্যদের আর শাস্তি নয় বরং মমতা, যুদ্ধি, উপযুক্ত জ্ঞান এমনকি সমস্যার একটি মমতাপুর্ণ সমাধান দিয়ে আগামীর কল্যাণের তরে একযোগে কাজ করাই হবে যুক্তিযুক্ত। হাতের ৫টি আঙ্গুল যেমন সমান নয় তেমনিই পরিবারের সকল সদস্যও এক নয়। যেহেতু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ পরিবার তাই মতভেদ এবং খুনসুটির বিষয়টি থাকবেই। তাই সেই বিষয়গুলো এড়িয়ে গিয়ে ভালবাসার বন্ধনকে শক্তিশালি করুন।
যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার, জামাত, শিবীর এবং দেশীয় ষড়যন্ত্রকারীদের কোন ক্রমেই দলের কোন পদে, সরকারের কোন পদে বা দায়িত্বে রাখা যাবে না। এরা চিহ্নিত শত্রু। এদের সন্তানদের ক্ষেত্রেও একই অভিমত। কারন তারা সুযোগ পেলে ছুবল দেবেই এবং প্রতিশোধ নিবেই। এইখানে কোন যুক্তি খাটে না। সকল যুক্তিই খোঁড়া যুক্তি হিসেবে বিবেচ্য। আর কেউ যদি বেশী বা অতিউতসাহী হয় তাহলে মনে হয় তার বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি দেয়া বিশেষ প্রয়োজন। দলের ও দেশের প্রয়োজনে যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদেরই একজন হয়ে এই লিখাটুকু লিখলাম। কাউকে আঘাত বা কষ্ট দেয়ার জন্য নয় বরং আমার আওয়ামী পরিবারকে আরো সচেতন এবং শক্তিশালী করনের লক্ষ্যে।