আলী রীয়াজ দেখাতে না পারলে ও আমরা পারবো: ডা তাহের

প্রশান্তি ডেক্স ॥ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, ‘মাসের পর মাস সংস্কারের নামে রাজনৈতিক নেতাদের ডেকে নিয়ে পরিশেষে সংস্কারের আইনি ভিত্তি দিতে পারবে না বলে সরকার জাতির সঙ্গে তামাশা করেছে। জুলাই ঘোষণাপত্রের সাংবিধানিক উপায় আলী রীয়াজ দেখাতে না পারলেও আমরা দেখাতে পারবো। আমাদের সেই দায়িত্ব দেন, আমাদের সঙ্গে বসেন। মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা না করতে তিনি সরকারের প্রতি এসব কথা বলেন।

গত বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকালে রাজধানীর বিজয়নগর রোডে (পানির ট্যাংক সংলগ্ন সড়ক) এলাকায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরীর (উত্তর ও দক্ষিণ) উদ্যোগে জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি প্রদান এবং সেই আলোকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল পূর্বক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী ইলেকশন চায়, সিলেকশন চায় না, মেনেও নেবে না। সরকারের নির্বাচনের রোডম্যাপকে শুধুমাত্র একটি দল স্বাগত জানিয়েছে। গনতন্ত্রকামী দেশের অন্য রাজনৈতিক দলগুলো স্বাগত জানায়নি, জানাতে পারেনি। কারণ নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রের সংস্কার, সব গণহত্যার বিচার নিশ্চিত এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি। স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও এদেশের জনগণ একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখেনি।’

‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী জাতি নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের আশা করেছে। এজন্য রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার ও গণহত্যার বিচার চেয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়ে ঘোষণাও দিয়েছিল রাষ্ট্রের সংস্কার করবে। কিন্তু এই সরকারের উচিত ছিল আগে নিজেরা যে চেয়ারে বসেছে, সেই চেয়ারগুলো ধুয়েমুছে পরিষ্কার ও পবিত্র করা। কারণ, তারা সংস্কারহীন অপবিত্র, অপরিষ্কার চেয়ারে বসে নিজেদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভুলে গেয়েছে।’

দেশের ৭১ শতাংশ জনগণ পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চাইলেও— একটি দল জনগণের মতের বিপক্ষে উল্লেখ করে সাবেক এমপি ডা. তাহের বলেন, ‘বেশিরভাগ জনগণের মতামত মেনে নেওয়ার নামই ডেমোক্রেসি। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কর্তৃক পরিচালিত জরিপে উঠে এসেছে, দেশের ৭১ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায়। যে রাজনৈতিক দলের নেতারা পিআর বুঝে না দাবি করে, তিনি ওই নেতাদের দেশের রিকশাচালক, ভ্যানচালক, চা-পান বিক্রেতার কাছ থেকে পিআর বুঝে নিতে অনুরোধ করেন।’

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্ন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত ঘোষণা দিলেও বাস্তবে নির্বাচনের কোনও পরিবেশ নেই। পরিবেশ থাকলে একটি রাজনৈতিক দলের প্রধানের একজন উপদেষ্টা পদে থেকে বলতে পারতো না, দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিলে জীবন নিয়ে বাড়িতে ফিরতে পারবে না!

কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিমের যৌথ পরিচালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসেন প্রমুখ। এছাড়াও সমাবেশে কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর দায়িত্বশীল নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশ শেষে, বিজয়নগর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল কাকরাইল নাইটিঙ্গেল মোড়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিলে কেন্দ্রীয় ও মহানগরী নেতারাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.