হযবরল  .. .. ..

চলমান বাংলাদেশে সবই এখন হযবরল আবস্থায় আছে। মানুষের জীবন হযবরল অবস্থায় দিশেহারা। অর্থনৈতিক অবস্থা, রাজনৈতিক অবস্থা, পারিবারিক এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক এমনকি রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আর রাষ্ট্রীয় কর্মকান্ডে বিরাজমান এই অবস্থা যেন আতঙ্কের হযবরল অবস্থায় ফেলেছে। মানুষজন এখন দ্বিগবিদ্বিগ ছুটাছুটি করছে। মুক্তির আশায় মানুষ এখানে সেখানে এমনকি নতুন ত্রাতার সন্ধানও করছে। এই অবস্থায় বেশীদিন টিকে থাকা যায়না। বেশীদিন টিকে থাকার কোন লক্ষ্যণ এই মুহুর্ত্বে আর অবশিষ্ট আছে বলে মনে হচ্ছে না।

তাই লাগাম টানার কোন গতিপথ বা সুযোগ এখনও দৃশ্যমান হয়নি। কান্ডারী হিসেবে কেউ এখনও আর্ভিভূত হয়নি। হওয়ার সমূহ লক্ষ্যণও চোখে পড়ছে না। তাই দিশেহারা যাত্রীরা সব হুশিয়ার হুশিয়ার বলে কাতরাচ্ছে। গলার স্বর কেউ শুনতে পাচ্ছে না। কোনরকম কর্মকান্ডও চোখে পড়ছে না। রাজনীতিবিদরা এলোমেলো চুলে আর আওলা ঝাওলা কথাবার্তায় মর্ত্ত্ব থেকে দিনগুজার করছে। কেউ কারো উপকারে আশার ইঙ্গিতও দিতে পারছে না এবং বহন করছে না। সবাই এখন ক্ষমতার মোহে আচ্ছন্ন। আর ক্ষমতা মানুষকে, রাষ্ট্রকে, রাজনীতিকে, আর দলকে এক ধ্বংসের দৈত্যে পরিণত করেছে। আর ঐ দৈত্যদ্বারা আবৃত হয়ে মানুষ তার মনুষত্য, বিভেক, ন্যায়-নীতি এবং আদর্শচুত্য হয়েছে। কেউ আর এখন দাবি করতে পারবে না আমরা আশরাফুল মাখলুকাত। বরং ইবলিশ বা শয়তান বরং এখন দাবিদার আশরাফুল মাখলুকাতের। তাই আমরা এখন কোথায়? কোন জামানায়? কোন পথে?

সরকারী অফিসগুলোতে চললে আকামের প্রতিযোগীতা। অবৈধ উপায়ে অর্জনের উপঢৌকন এখন বাহারী আচার ও রীতির চর্চায় ব্যস্ত। যেন কেউ কারো নাহি ছাড়ে এই অবস্থায়। সালামী, অফিস খরচ, সাক্ষাৎকার আর দরকষাকষির মহড়ায় ভরপুর। কোন অফিসেরই এর বাইরে কোন ব্যবস্থা আর অবশিষ্ট নেই। যে কোন কাজ করতে গেলে এই অসহায় নিলজ্জ্ব অবস্থার স্বিকার হতে হয়। সচিবালয়, এনবিআর ভিসা সংক্রান্ত সকল অফিস, ভুমি অফিস, ওয়াসা, বিদ্যুৎ, এনজিও ব্যুরোসহ সকল অফিসেরই একই দশা। সব অফিসের এই রুগ্নদশায় কোন ঔষধই যেন আজ আর কাজে আসছে বলে মনে হয়নি। তবে এই অবস্থা আগেও ছিল কিন্তু এমন নগ্নদশায় ছিলনা। তাই এর থেকে উত্তরণের উপায় কি এবং কে এই উপায়ে নিয়োজিত হবে? কার মাধ্যমে এই অসাধ্য অসম্ভবকে সম্ভবে পরিণত করা হবে সেই প্রশ্নের উত্তর কারো কি জানা আছে? আমি সকল প্রমানাদি নিয়েই এই লিখাটুকু লিখলাম কিন্তু এর পরেও কি বিভেক বলে ধর্মীয় অনুভুতি বলে কোন স্থান এই মানবদেহে ও মনে কাজ করবে বলে মনে হয় কি? মনে হচ্ছে দাউদের সেই কথায় যেন সরব: সবই এখন অসার; বিভেক অসার হয়ে আছে। সবকিছুই যেন চারিদিকে দোলানো নল খাগড়ার মত অবস্থায় আছে।

বর্তমানে যারা সরকারে আছেন তাদেরকে বলার কি আছে? তারাতো এমনিতেই আসেনি বরং কেউ না কেউ তাদেরকে এনেছে অথবা কোন না কোন কৌশলি পরিকল্পনায় তারা এসেছেন। সুতরাং তাদেরকে দোষারূপ বা দায় চাপানোর কোন সুযোগ নেই। তাদের কোন প্রতিশ্রুতি বা প্রতিজ্ঞা নেই এই রাষ্ট্র বা মানুষের প্রতি। তারা এসেছেন মেহমান হয়ে এবং থাকবেনও মেহমান হিসেবেই। আমাদের দায়িত্ব এখন তাদেরকে মেহমানদারী করা, সেবা করা এমনি মেহমানের মনোরঞ্জনের জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা করা। আর এখন সেই ব্যবস্থায় হচ্ছে। জাতি তাদেরকে সেবা করছে এবং তারাও জাতির সেবা নিচ্ছে। তবে মাঝে মাঝে সেবার ত্রুটির কারণে তারা নাখোশ হচ্ছে। আর এই নাখোশতায় পুড়ে বিরান হচ্ছে জীবন, সংসার, ঘরবাড়ী, বনভুমি, জায়গা-জমি, রাস্তা-ঘাট, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যায়, ধর্মীয় শিক্ষালয়গুলো এমনকি কর্মক্ষেত্র ও এর পরিবেশ। কি আর করার আছে আভাগা এই জাতির। যতবারই কারো না কারো উপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখছে তারাই বিশ্বাস ও আস্থায় শেষ পেরেকটা ঠুকে দিয়ে গেছে। কি আভাগাইনা এই বাঙ্গালী জাতি।

২৪শে নতুন স্বপ্নদ্রষ্টা হিসেবে যারা আভির্ভূত হয়েছিল তারা আজ কোথায়? তাদের জীবন ও যৌবন কোথায় গিয়ে ঠেকেছে বলতে পারেন কি? এই জাতি কতইনা ভরসা করেছিল এই স্বপ্নদ্রষ্টাদের উপর। সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়েছিল তাদের হাতে। আর তাদেরকে এগিয়ে দিতে এবং নিতে কতকিই না কিরেছিল এই আভাগা জাতি। আজ আর সেই অবস্থানে জাতির কোন সন্তানই নেই। স্বপ্নদ্রষ্টারাও এখন দিশেহারা। আর যারা তাদেরকে যোগান দিয়েছিল তারাতো উজাড় হয়ে বিলিনের দ্বারপ্রান্তে। আর যারা সমর্থন যুগিয়েছিল তারা এখন ঘুমকাতর অবস্থায় আবোল তাবোল বকছে। তাই কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায় এই জাতি নিমজ্জ্বিত হয়ে অসাড় বস্তুতে পরিণত হতে যাচ্ছে। ২৪কে কলঙ্কিত করতে সবাই এখন ব্যস্ত।

আই ওয়াশে ব্যস্ত আমার মাননীয় মান্যবর সর্বশ্রদ্ধেয় জনাব ইউছুস সাহেব এবং তার সহযোগীরা। করনীয়তে মনোযোগী না হয়ে বরং চোখের সামনে রঙ্গিন পর্দা দেয়ার কাজে ব্যস্ত। কিন্তু এইসকল কোনকিছুই যখন কাজ করছে না তখন নিজেদের প্রস্থান নিয়ে ব্যস্ত। তবে আভাগা এই জাতি আভাগাই থেকে গেলো। সুন্দর কথা, মিষ্টি মধুর আচরণ ও ব্যবহার এই জাতিকে বহুবার প্রতারিত করেছিল এবং আজও করছে। তাই জাতির ভাগ্যাকাশে আরো বড়সড় বিপদ ঘণীভূত হয়ে আসছে। এখন আর সাবধান হয়েও কোন লাভ নেই। কারণ চতুস্মুখী এই বিপদ থেকে রক্ষায় কেউ কোন কিছু করতে পারবে না বরং বিপদ থেকে যদি আবার ঘুরে দাঁড়ানো যায় সেই চেষ্টার আশায় বুক বেধে থাকতে হবে। তবে কে বেঁচে থাকবে আর কে থাকবেনা সেটাই দেখার বিষয়। তবে আমিওযে দেখতে পাবো তারও কোন নিশ্চয়তা নেই।

মনের অজান্ডেই এই বাক্যগুলো লিপিবদ্ধ করেছি। জানিনা সামনে আরো কি কি লিপিবদ্ধ করতে হবে। তবে এটাই শেষ নয় বরং আরো বলা যায় আধারেও আলো আছে এবং আলো আসবেই। একজন আশাবাদি মানুষ হিসেবে এটাই শেষ সান্তনা। তবে সৃষ্টিকর্তা সকল সময়ই নিরিহ এবং বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে থাকেন এবং তাদেরকে উদ্ধার করেন। তাই নিরিহ ও বিপদগ্রস্ত এবং পাপীরা অপেক্ষায় থাক; তোমাদের মুক্তি সন্নিকটে। মুক্তি তোমাদের মিলবেই, মুক্ত তোমরা হবেই, তোমাদের জন্যই সৃষ্টিকর্তা তাঁর ন্যায়বিচার নিয়ে, ক্ষমা নিয়ে, ভালবাসা নিয়ে শতভাগ সফলতায় এগিয়ে আসছেন। এখন তোমারা সৃষ্টিকর্তার ডাকে সাড়া দাও। তাঁর কাছে যাও। তাঁর কথা শুন এবং মনযোগ দিয়ে তাঁর পথে চল। তাঁর আগমনের অপেক্ষায় ধৈয্য ও বিশ্বাস এবং আস্থা নিয়ে নির্ভরতায় অপেক্ষা করা। মঙ্গল এবং উন্নতি আর সুখ্যাতি এবং নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তায় এই হযবরল অবস্থার অবসান হবে। এই কামনাই করছি মহান রবের নিকট। সকলেই ভাল থাকুন এবং রবের অপেক্ষায় থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.