তামাসায় পরিণত এক জাতি

তামাসায় পরিণত এক হতভাগা জাতি এই বাংলা ও বাংগালী। বার বার প্রতারিত হয়ে এই জাতি এখন বিভেকের ধংসনে জর্জরিত। সরকার ও রাজনীতিবীদরা জাতিকে বার বার প্রতারিত করেছে। জাতির বিশ্বাস ও আস্থাকে ভেঙ্গে চুরমার করেছে। আশা ও আকাঙ্খাকে জলাঞ্জলি দিয়েছে। জাতির আবেগকে কুসংস্কার ও কুমতলবের বিষবাস্পে জর্জরিত করেছে। কেউ কথা দিয়ে কথা রাখেনি। সবাই হতাশ করেছে।

সুন্দর সুন্দর কথা বলে, আইন, আদালত ও মনভোলানো ছলছাতুরী দিয়ে ভুয়া পরিকল্পনায় ভুলিয়ে ভালিয়ে জাতিকে নিমজ্জ্বিত করেছে।

কেউ জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারেনি এমনকি চেষ্টাও করেনি। সবাই বিভেদ এবং বিভাজনে দ্বিধা বা তৃধা এমনকি অগনিত বিভক্তির বেড়াজালে আবদ্ধ করে স্ব স্ব ফায়দা হাসিল করেছে আবার কেউ কেউ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জাতি আজ ভগ্নমনে জনআকাঙ্খা বিসর্জনের তামাসা দেখছে। ঘুমরে ঘুমরে কেদে কেদে চোখ ঝাপসা করে অন্ধকারের দিকে নিমজ্জিত হচ্ছে।

যে মানুষগুলো জাতিকে আশা ও আকাঙ্খার বানি শুনাচ্ছে। তাদের গ্রহণযোগ্যতা এবং বিশ্বস্ততা অগ্রহণযোগ্যতার তলানীতে পৌঁছেছে। তারা পরিক্ষীত স্বার্থপর ও মিথ্যাবাদী এমনকি নিজ এবং দলের স্বাথ্যকে প্রাধান্য দিয়ে জনআকাঙ্খা ও প্রত্যাশা গলা টিপে মেরেছে এবং মারার সকল আয়োজন সফল করতে ব্যতিব্যস্ত থাকছে। মামলা ও হামলায় তারা পটু এবং নিলজ্জ্বভাবে নিজেদের মামলা ও হামলাকে জায়েজ করে স্বদর্পে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। কেউ কেউ পালিয়ে থেকে এখন মুখ্য সুযোগে বের হয়ে এসে জাতিকে দাপিয়ে বেড়ানোতে ব্যস্ত রাখছে। আর এই সুযোগে ফায়দা হাসিলে ব্যস্তরা তাদের আখের গুছিয়ে জাতির সর্বনাশ ডেকে এনেছে এবং বারোটা বাজিয়ে ছাড়ছে এই আভাগা দেশের।

একবার জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করেছিল বঙ্গবন্ধু কিন্তু তিনি পুরোপুরি পারেন নাই। তখনও জাতি দ্বীধাবিভক্ত ছিল। তৎপরবর্তীতে বিভক্তির ব্যপ্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ জন্মের পরে একই পরিবারভুক্ত বাঙ্গালী ধীরে ধীরে বহু পরিবারে বিভক্ত হয়েছে। সেই বিভক্তির রেশ এখনও চলমান রয়েছে। তবে এইবার ’২৪এ একটি সুযোগ এসেছিল জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার কিন্তু সেই চেষ্টায় পানি ঢেলেছে আমাদের বিজ্ঞ অভিভাবক মহোদয়। তিনি এখন জাতিকে বিভক্তির মহাফ্যাসাধে ফেলে পালানোর পায়তারা করছে অথবা রাস্তা খুজছে। জাতি এখন বহুধা বিভক্তির মাঝে খাবুডুবু খেয়ে অন্ধকারে গুরপাক খাচ্ছে। এইবারের সুযোগ কাজে না লাগিয়ে বড় ভুল করে বসল মাননীয় জাতীয় ঐক্যের প্রতিক জনবা ড: ইউনুছ সাহেব। তিনি জাতির আকাঙ্খা এবং অভিপ্রায় বুঝতে ভুল করেছে। কারণ এই পরিবর্তনে জাতি দল মত নির্বিশেষে সমর্থন ও সহযোগীতা করেছে। কিন্তু তিনি আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন। কারণ আওয়ামী লীগ এখন দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। কিন্তু কেন পরাজয়। কারণ এই রাজনৈতিক দলের নীতি ও আদর্শের ধারক ও বাহক এবং সমর্থকরা এমনকি নেতারাও চেয়েছেন মনেপ্রাণে এই পরিবর্তন। আর পরিবর্তনের কাজে তারা সকলেই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহায়তা করেছেন। গুটিকতেক ছাড়া বাকিরা সহযোগী ছিল কিন্তু দিনের শেষে এবং সময়ের প্রয়োজনে সকলের চাওয়া পরিবর্তন আজ ভুল প্রমানিত হতে যাচ্ছে। তাই আবার ফিরে আসলো বিভক্তির করাল গ্রাস। জাতি মুক্তি পেয়েও পেলনা মুক্তির স্বাধ।

ঐক্যের মুক্তি এবং ভক্তি কোনটিই আজ আর অবশিষ্ট নেই। সবই এখন ক্ষমতার দ্বন্ধে ছিন্নভিন্ন। সবাই আবোল-তাবোল বকে যাচ্ছে। সম্প্রীতি এবং সৌহাদ্য বিনষ্ট হচ্ছে। কেউ কারো উপর আস্থা বা বিশ্বাস স্থাপন করতে পারছে না। বরং একে আপরের গিবদ গেয়ে যাচ্ছে। ব্যস্ত সময় পার করছে ক্ষমতার ও সম্পদের নেশায়। তাই যারা ক্ষমতায় আছে আর যারা যাবে বলে বিশ্বাস করে এমনকি যারা বিরোধী অবস্থানে থাকবে বলে ধারনা পোষণ করে এমনকি যারা কারো ঘাড়ে সওয়ার হয়ে ক্ষমতার স্বাদ আস্বাদন করবে বা ক্ষমতা ও অর্থের কাছে থাকবে তারাও এখন বিভিন্ন ফন্দিফিকির করে যাচ্ছে যা জাতির জন্য অশুভ এবং কল্যাণের পথে অন্তরায়। ভবিষ্যত অনিশ্চিত অবস্থায় আছে এবং এই অনিশ্চয়তাকে আরো গভীরে নিয়ে পাকাপোক্তকরণের ভুমিকায় সবাই কাজ করছে।

জনতা এবং সততা আজ একীভূত হয়ে ঘুমরে মরছে। তবে উভয়েই চাই এই অবস্থার উত্তরণ অথবা আরেকটি গণ জাগরণ এবং মুক্তির দিশা। কে কিভাবে এই দিশায় শরীক হবে সেটিই এখন দেখার ও শুনার বিষয়। আমরা যেদিকেই তাকাই সেদিকেই যেন অন্ধকার ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন অবস্থায় দিশেহারা ছুটাছুটি ছাড়া আর অন্যকিছু দেখতে পাচ্ছি না। কে যে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে এই সোনার বাংলা তা স্বচক্ষে না দেখলে এমনকি উপলব্দি না করলে ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। কি যে এক অস্থিরতা বিরাজ করছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তাও এক বিভিষিকাময়।

দল থেকে মনোনয় পাওয়ার নিশ্চয়তা এবং যে মনোনয়ন পাবে সে কোন কোন সাপোর্টারের (সমর্থকের) পক্ষের তার নিশ্চয়তা নিয়ে এক অনিশ্চয়তার ঘেরাকলে বা টোপে আবদ্ধ সবাই। কেউ মুখ খুলে কিছু বলতে পারছে না বরং মুখ বন্ধ করে অনিশ্চয়তার দিকেই দৌঁড়াচ্ছে। নেতা থেকে সমর্থক এই একই পথের পথিক। যারা ঐক্য বা জোট গঠণে ব্যস্ত তারাও ঠিক ঐ একই দশায় আবদ্ধ। সুতরাং সুখপাখি উড়াল দিয়ে উড়ছেই আর উড়ছেই। কারো হাতের নাগালে আসছে না বরং সবাই সেই সুখ পাখির দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দৌঁড়াচ্ছে আবার কেউ কেউ সুখ পাখির সন্ধানে নতুন নতুন সন্ধি করে অনিশ্চয়তার অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগুচ্ছে। এই অবস্থায় আমাদের আবেগী জাতি দিনাতিপাত করছে। সবকিছু দেখে ও শুনে মনে হচ্ছে আমরা তামাশায় হাবুডুবু হাচ্ছি এবং জড়িয়ে যাচ্ছি আরো বড়ো এক নতুন তামাশায়। এই তামাশায় বিদেশী এবং দেশী মুরুব্বীরা ফায়দা লুটছে এবং লুটার চেষ্টা করছে। আরা নুতন নুতন তামাসা জাতির সামনে হাজির করছে। তবে এই তামাশা থেকে মুক্তির একটিই পথ… আর তা হলো ঐক্যবদ্ধ হওয়া। জাতির ঐকবদ্ধতাই পারে সকলকে সকল অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি দিতে এবং এই স্বদেশ সোনার বাংলাকে প্রকৃত সোনার বাংলায় পরিণত করতে। আসুন আমরা সবাই সৃষ্টিকর্তার সহায়তা নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পথে ঐক্যবদ্ধ হই এবং সকল তামাশার অমানিশা থেকে মুক্ত হই এবং মুক্তির স্বাদ ও আনন্দ সকলকে বিলিয়ে দিয়ে এই মহা জাগতিক ঈদানন্দ উপভোগ করি এবং ইতিবাচক কল্যাণকর ন্যায়পরায়নাতর সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করি এবং এই অভয়ারণ্যে সকলে মিলে মিশে ঐক্যবদ্ধ সহবস্থানে অবস্থান করি। এই হউক আমাদের সকলের ঐকান্তিক কামনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published.